ঢাকা ০৪:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
মদনে প্রয়াত সাংবাদিকদের স্বরণে দোয়া ও ইফতার মাহফিল ঈদে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বিশেষ সম্মানি দেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বাংলাদেশে ব্যবসা করবেন ট্রাম্প, নিলেন ট্রেড লাইসেন্স সব মামলায় খালাস তারেক রহমান, ‘দেশে ফিরতে বাধা নেই’ অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ঈদের চাঁদ ২৯ রমজানে দেখার সম্ভাবনা নেই, জানা গেলো কারণ নিক্কেই এশিয়াকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন মেয়াদে ভুয়া নির্বাচন মঞ্চস্থ করেছেন হাসিনা নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সাকিব ফেরায় যা বললেন মেহেদি ঈদ উপলক্ষ্যে বিআরটিসি বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ইসলামি পোশাক পরে পরকালের কথা বললেন সিমরিন লুবাবা

বছরের প্রায় দুই মাস পেরোলেও বই না পেয়ে হতাশ শিক্ষার্থীরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
  • ১৪ বার

নতুন বছরের এক মাস পাঁচ দিন পর পটুয়াখালীর দশমিনায় প্রাথমিকে শতভাগ বই পেলেও মাধ্যমিকে প্রায় দুই মাসেও মেলেনি শতভাগ নতুন বই। গত ৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলার প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের মাঝে শতভাগ বই বিতরণ করা গেলেও এখন পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছেনি অধিকাংশ বই। এতে হতাশ হয়ে পড়ছেন স্কুল এবং মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষকসহ কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। শতভাগ বই কবে আসবেÑ এমন নিশ্চয়তা না থাকায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বিভিন্ন শ্রেণিতে সকল বিষয়ের বই না পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী যেতে চাচ্ছে না স্কুলে। এর ফলে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৮টি জুনিয়র স্কুলসহ মোট ৩৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৩ হাজার ৬৪৩, সপ্তম শ্রেণিতে ৩ হাজার ৬৮০, অষ্টম শ্রেণিতে ৩ হাজার ৩৬০, নবম ও দশম শ্রেণির প্রত্যেকটিতে ২ হাজার ৯১৪ জন করে মোট ১৬ হাজার ৫১১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। অপরদিকে উপজেলার মোট ১৯টি মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১৯৪২, সপ্তম শ্রেণিতে ১৯৮৫, অষ্টম শ্রেণিতে ১৮৬৩, নবম ও দশম শ্রেণির প্রত্যেকটিতে ১৫৮০ জন করে মোট ৮ হাজার ৯৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।

জানা গেছে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ষষ্ঠ শ্রেণির ১৫টি পাঠ্যবইয়ের সবগুলোই শিক্ষার্থীদের দেওয়া গেলেও সপ্তম শ্রেণির ১৫টির মধ্যে বাংলা প্রথম পত্র ও গণিত বিষয়ের পাঠ্যবই পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। বাকি ১৩টি বই এখনও আসেনি। অষ্টম শ্রেণির ১৫টির মধ্যে বাংলা প্রথম পত্র, ইংরেজি প্রথম পত্র ও গণিত পেলেও বাকি ১২টি পাঠ্যবই আসেনি। নবম শ্রেণির মানবিক, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য শাখার শিক্ষার্থীরা ইংরেজি প্রথম পত্র ও সাধারণ গণিত বিষয়ের পাঠ্যবই ছাড়া বাকিগুলো পায়নি।

এদিকে অর্থনীতি বিষয়ের পাঠ্যবইটি ছাড়া বাকি বইগুলো পেলেও চরম হতাশা ও উৎকণ্ঠায় ভুগছে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। এসএসসি পরীক্ষার সিলেবাস অনুযায়ী নবম শ্রেণিতে এক বছর পড়াশোনা শেষে সেসব পাঠ্যবই বাতিল করায় চরম উদ্বিগ্ন তারা। দশম শ্রেণির পরিবর্তিত পাঠ্যবইয়ের দুই বছরের পড়া এক বছর পড়ে ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে এসব শিক্ষার্থী। এক অজানা আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের।

এদিকে উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ৫টিতে রয়েছে কারিগরি শাখা। বিদ্যালয়গুলোর কারিগরি শাখায় মোট ৫২০ শিক্ষার্থী বিভিন্ন ট্রেডের ৪০ শতাংশ বই পেয়েছে। দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুহতাদুন মোহাম্মদ রাজিন আমাদের সময়কে জানান, ফেব্রুয়ারিও যাচ্ছে। দুটি বই পেয়েছি মাত্র। এখনও বারোটি পাইনি। আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। পড়াশোনার দিক দিয়ে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। বেগম আরেফাতুন্নেচ্ছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফিফা জাহান সাইয়েদা জানান, স্যার-ম্যাডামরা অনেকেই বলছেন অনলাইন থেকে প্রিন্ট করে নিতে। খরচ অনেক বেশি।

অভিভাবক শারমিন সুলতানা বলেন, আমার ছেলে ক্লাস সেভেনে পড়ে। দুটি বই পেয়েছে। বই না থাকায় পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কমছে শিশুদের।

দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক তাহমিনা সুলতানা বলেন, সকলের কাছে বই না থাকায় সম্পূর্ণভাবে ক্লাসে পাঠদান করানো সম্ভব হচ্ছে না। চেষ্টা করি পিডিএফ থেকে বইগুলো দেখে ওগুলো বোর্ডে লিখে বাচ্চাদের শেখানোর। বাচ্চারা স্কুলে আসতে অনীহা প্রকাশ করে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়া আমাদের সময়কে বলেন, আশা করি অতিদ্রুত অবশিষ্ট বইগুলো আসবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

মদনে প্রয়াত সাংবাদিকদের স্বরণে দোয়া ও ইফতার মাহফিল

বছরের প্রায় দুই মাস পেরোলেও বই না পেয়ে হতাশ শিক্ষার্থীরা

আপডেট টাইম : ১০:৪৫:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

নতুন বছরের এক মাস পাঁচ দিন পর পটুয়াখালীর দশমিনায় প্রাথমিকে শতভাগ বই পেলেও মাধ্যমিকে প্রায় দুই মাসেও মেলেনি শতভাগ নতুন বই। গত ৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলার প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের মাঝে শতভাগ বই বিতরণ করা গেলেও এখন পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছেনি অধিকাংশ বই। এতে হতাশ হয়ে পড়ছেন স্কুল এবং মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষকসহ কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। শতভাগ বই কবে আসবেÑ এমন নিশ্চয়তা না থাকায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বিভিন্ন শ্রেণিতে সকল বিষয়ের বই না পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী যেতে চাচ্ছে না স্কুলে। এর ফলে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৮টি জুনিয়র স্কুলসহ মোট ৩৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৩ হাজার ৬৪৩, সপ্তম শ্রেণিতে ৩ হাজার ৬৮০, অষ্টম শ্রেণিতে ৩ হাজার ৩৬০, নবম ও দশম শ্রেণির প্রত্যেকটিতে ২ হাজার ৯১৪ জন করে মোট ১৬ হাজার ৫১১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। অপরদিকে উপজেলার মোট ১৯টি মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১৯৪২, সপ্তম শ্রেণিতে ১৯৮৫, অষ্টম শ্রেণিতে ১৮৬৩, নবম ও দশম শ্রেণির প্রত্যেকটিতে ১৫৮০ জন করে মোট ৮ হাজার ৯৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।

জানা গেছে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ষষ্ঠ শ্রেণির ১৫টি পাঠ্যবইয়ের সবগুলোই শিক্ষার্থীদের দেওয়া গেলেও সপ্তম শ্রেণির ১৫টির মধ্যে বাংলা প্রথম পত্র ও গণিত বিষয়ের পাঠ্যবই পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। বাকি ১৩টি বই এখনও আসেনি। অষ্টম শ্রেণির ১৫টির মধ্যে বাংলা প্রথম পত্র, ইংরেজি প্রথম পত্র ও গণিত পেলেও বাকি ১২টি পাঠ্যবই আসেনি। নবম শ্রেণির মানবিক, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য শাখার শিক্ষার্থীরা ইংরেজি প্রথম পত্র ও সাধারণ গণিত বিষয়ের পাঠ্যবই ছাড়া বাকিগুলো পায়নি।

এদিকে অর্থনীতি বিষয়ের পাঠ্যবইটি ছাড়া বাকি বইগুলো পেলেও চরম হতাশা ও উৎকণ্ঠায় ভুগছে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। এসএসসি পরীক্ষার সিলেবাস অনুযায়ী নবম শ্রেণিতে এক বছর পড়াশোনা শেষে সেসব পাঠ্যবই বাতিল করায় চরম উদ্বিগ্ন তারা। দশম শ্রেণির পরিবর্তিত পাঠ্যবইয়ের দুই বছরের পড়া এক বছর পড়ে ২০২৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে এসব শিক্ষার্থী। এক অজানা আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের।

এদিকে উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ৫টিতে রয়েছে কারিগরি শাখা। বিদ্যালয়গুলোর কারিগরি শাখায় মোট ৫২০ শিক্ষার্থী বিভিন্ন ট্রেডের ৪০ শতাংশ বই পেয়েছে। দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুহতাদুন মোহাম্মদ রাজিন আমাদের সময়কে জানান, ফেব্রুয়ারিও যাচ্ছে। দুটি বই পেয়েছি মাত্র। এখনও বারোটি পাইনি। আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। পড়াশোনার দিক দিয়ে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। বেগম আরেফাতুন্নেচ্ছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফিফা জাহান সাইয়েদা জানান, স্যার-ম্যাডামরা অনেকেই বলছেন অনলাইন থেকে প্রিন্ট করে নিতে। খরচ অনেক বেশি।

অভিভাবক শারমিন সুলতানা বলেন, আমার ছেলে ক্লাস সেভেনে পড়ে। দুটি বই পেয়েছে। বই না থাকায় পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কমছে শিশুদের।

দশমিনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক তাহমিনা সুলতানা বলেন, সকলের কাছে বই না থাকায় সম্পূর্ণভাবে ক্লাসে পাঠদান করানো সম্ভব হচ্ছে না। চেষ্টা করি পিডিএফ থেকে বইগুলো দেখে ওগুলো বোর্ডে লিখে বাচ্চাদের শেখানোর। বাচ্চারা স্কুলে আসতে অনীহা প্রকাশ করে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়া আমাদের সময়কে বলেন, আশা করি অতিদ্রুত অবশিষ্ট বইগুলো আসবে।