জেলে থেকেও জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ৯৭টি আসন পেয়েছেন ইমরান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। পিটিআইসহ কোনো দলই এককভাবে সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে জোট গঠন করেই সরকারে আসতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে। এমন জটিল পরিস্থিতিতে দলের পরবর্তী করণীয় নিয়ে নতুন চারটি বার্তা দিয়েছেন ইমরান খান।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) আদিয়ালা কারাগারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ চার বার্তা দেন তিনি।
এক. পিএমএল-এন, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও এমকিউএম-পির সঙ্গে জোট সরকার গঠনের সম্ভাবনা বাতিল করে দিয়েছেন পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান। তবে অন্য দলের জন্য দরজা খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ইমরান বলেন, এই তিন দল ছাড়া অন্য দলের সঙ্গে আলোচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। যাদের দেশ শাসন করতে আনা হয়েছে তারাই সবচেয়ে বড় অর্থ পাচারকারী। তিনি মূলত সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে ইঙ্গিত করে এ কথা বলেন।
দুই. করোনোর পর থেকেই পাকিস্তানের অর্থনীতির অবস্থা টালমাটাল। এমনকি দেশটি দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। তবে আইএমএফের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়ে সে যাত্রা পার পায় পাকিস্তান। ফলে স্বাভাবিকভাবে এবারের নির্বাচনে অন্যতম ইস্যু ছিল দেশের অর্থনীতিতে সুবাতাস ফেরানো। তাই নির্বাচনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রথম আলাপে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচন দেশে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বয়ে আনবে।
তিন. গত বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের ভোট হয়েছে। ভোটগ্রহণের তিন দিন পর ২৬৫ আসনের মধ্যে অবশেষে ২৬৪ আসনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ৯৭ আসনে জয় পেয়েছেন ইমরান খানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এরপর পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ বা পিএমএল-এন ৭৬ আসনে, পাকিস্তান পিপলস পার্টি ৫৪ আসনে জয়ী হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য ছোট দল পেয়েছে ৩৭টি আসন। তবে সবচেয়ে বেশি আসন পেলেও পিটিআইয়ের অভিযোগ, তাদের প্রার্থীদের অনেক আসনে ফল পরিবর্তন করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই আজ মঙ্গলবার প্রদেশ বা কেন্দ্রে সরকার গঠন করছে কিনা জানতে চাইলে ইমরান খান বলেন, আমরা প্রথমে নির্বাচনের ফল চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাব।
এ ছাড়া তাদের দল থেকে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে ইমরান বলেন, তারা বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
চার. এবারের খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রাদেশিক নির্বাচনে সরকার গঠনের মতো সর্বোচ্চ ৮৪টি আসন পেয়েছে পিটিআই। এরপরই এই প্রদেশের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হচ্ছেন, তা নিয়ে দল ও দলের বাইরে বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়। এমন পরিস্থিতিতে সব কিছুর অবসান ঘটিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আলি আমিন খান গান্ডাপুরের নাম ঘোষণা করেন দলের কর্ণধার ইমরান খান। তিনি বলেন, খাইবার পাখতুনখোয়ার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন আলি আমিন।