প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, প্রায় ৪০ লাখ মামলার ভারে বিচার বিভাগ আজ ন্যুব্জ। এ ছাড়া বিচারক স্বল্পতা, প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাব, বাজেট স্বল্পতাসহ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে তালিকাভুক্ত নবীন আইনজীবীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হলে সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগী সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হন। তাদের মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধারের অন্যতম অনুঘটক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সদস্যরা। কেননা ভুক্তভোগী সবার আগে আপনার কাছেই আসেন। বার ও বেঞ্চ উভয়ের সমন্বয়েই বিচার বিভাগ। তাই আপনাদের অংশগ্রহণ ছাড়া দেশে ন্যায় বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রত্যয়, আপসহীন দৃষ্টিভঙ্গি, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধচর্চার সংগ্রামে যুগে যুগে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছেন আইনজীবীরা। অতীতে সংবিধানকে ভূলুণ্ঠিত করে দেশে যখনই বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়েছে, তখনই আইনজীবীরা রাজপথে নেমেছেন। স্বৈরতন্ত্রের সঙ্গে আপস না করে আইনজীবীরা হাসিমুখে কারাবরণ করেছেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, প্রায় ৪০ লাখ মামলার ভারে বিচার বিভাগ আজ ন্যুব্জ। এ ছাড়া বিচারক স্বল্পতা, প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাব, বাজেট স্বল্পতাসহ বিভিন্ন সমস্যা প্রতিনিয়ত মোকাবিলা করতে হচ্ছে। অধস্তন আদালতের কার্যকর তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে মামলার দীর্ঘসূত্রতা হ্রাস করতে পূর্বসূরি প্রধান বিচারপতি দেশের আট বিভাগের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির সমন্বয়ে আটটি মনিটরিং কমিটি গঠন করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে মনিটরিংয়ের সুফল পেতে শুরু করেছি। কিন্তু একজন বিচারপতির পক্ষে বিভাগের সব জেলার কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করা দুরূহ। মনিটরিং প্রক্রিয়াকে আরও জোরদার করতে দেশের বৃহত্তর বিভাগগুলোর জন্য হাইকোর্ট বিভাগের একাধিক বিচারপতিকে দায়িত্ব দিয়েছি।
বর্তমানে দেশের আটটি বিভাগের জন্য মোট ১৩ জন বিচারপতি সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান করছেন বলেও জানান তিনি।
সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজউদ্দিন ফকিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।