তীব্র গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং

দেশজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গরমে মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। এর মধ্যেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং। বিদ্যুৎতের চাহিদা বাড়লেও উৎপাদন কমায় বেড়েছে লোডশেডিং। আর গ্রামাঞ্চলের পরিস্থিতি খুবই নাজুক। সেখানে কোথাও কোথাও দিনে ১০-১২ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। ফলে তীব্র গরমে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট। এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে ময়মনসিংহ ও কুমিল্লায়। এরপর রংপুর, খুলনা, রাজশাহী, ঢাকা ও সিলেটে। তবে বরিশাল অঞ্চলে লোডশেডিং নেই বললেই চলে। রংপুরের গ্রামাঞ্চলে দিন-রাত মিলিয়ে ৬-৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। বিশেষ করে রাতে বিদ্যুৎ চলে যায়। ফলে গরমে আর ঘুমানো সম্ভব হয় না। সূত্র জানায়, চরম গরমে এসির লোড মাত্রাতিরিক্ত বেড়েছে। আর জ্বালানির অভাবে ও যন্ত্রপাতি সংরক্ষণে বিদ্যুতের উৎপাদন কমেছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাতেও দিনে দুই/একবার লোডশেডিং হচ্ছে। যদিও ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ানের  মতে, ঢাকায় চাহিদা অনুসারে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। তাই লোডশেডিং তেমন নেই। যা হচ্ছে তা বিদ্যুৎ বিভ্রাট। বিভিন্ন এলাকায় বিতরণ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। আর দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) সংশ্লিষ্টদের মতে, কেন্দ্রীয়ভাবে সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছে ওজোপাডিকো। আর পল্লী বিদ্যুত্যায়ন বোর্ডের দেশের সবচেয়ে বেশি গ্রাহক। ৮২টি সমিতির মধ্যে ৬৩টির অবস্থাই নাজুক। সংস্থাটি ২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কম পাঁচ্ছে। ফলে কোথাও কোথাও অর্ধেক সময়ও বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব হয় না। সূত্র আরো জানায়, দুই সপ্তাহ ধরে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ। আর সংরক্ষণ ও মেরামতের জন্য বিভিন্ন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় তিন হাজার ৪৮৬ মেগাওয়াট উপাদন করা যায়নি। গ্যাস ও জ্বালানি তেলের সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হেেচ্ছ। পিডিবির দিনে প্রয়োজন ১৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাস। পাওয়া গেছে ১১৩ কোটি ঘনফুট। গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে পেট্রোবাংলাকে অনুরোধ করেছে পিডিবি। তাছাড়া বন্ধ হওয়ার শংকায় দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রা। কারণ ডলার সমস্যায় কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে প্রায় ১২শ মেগাওয়াট পাওয়া যায়। কেন্দ্রটি বন্ধ হলে লোডশেডিং পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। এদিকে এ বিষয়ে বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান জানান, গরমের কারণে এসি ও ফ্যানের ব্যবহার বেড়েছে। এতে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে। তাই কিছু এলাকায় সাময়িক ঘাটতি হচ্ছে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের মতে, গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা অনেক বেড়েছে। ধারণা করা হয়েছিল সর্বোচ্চ চাহিদার সময়ে অর্থাৎ পিক আওয়ারে উৎপাদনের প্রয়োজন হবে ১৫ থেকে ১৬ হাজার মেগাওয়াট। কিন্তু সারাদিনই চাহিদা থাকছে ১৬ হাজার মেগাওয়াট। চাহিদা মতো গ্যাস মিলছে না। ফলে উৎপাদন কম হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর