দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নেতা নোবেলজয়ী নেলসন ম্যান্ডেলার মতো আদর্শ গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
‘দ্য নিউজ’-এর বরাত দিয়ে জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন ইমরান খান।
সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেন, ‘আমি নেলসন ম্যান্ডেলার মতো সত্য ও পুনর্মিলনের আদর্শ গ্রহণ করব।’
এ সময় ইমরান খান আরও বলেন, পাকিস্তানে সামরিক আইন জারি সম্ভব নয়। তিনি বলেন, জনগণ মেনে নেবে কি না সেই পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে সামরিক আইন জারি করা হয়, কিন্তু জনগণ যদি আপনার সঙ্গে না থাকে, তাহলে আপনি কীভাবে সামরিক আইন জারি করবেন।
পিটিআই প্রধান আরও বলেন, যদি ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন না হয় তবে তারা আর সংবিধান অনুযায়ী চলবেন না। তার ভাষায়, ‘যদি সংবিধান (কার্যকর) না থাকে, তাহলে দেশও আর থাকে না।’
ইমরান খান বলেন, তারা (সরকার) অপেক্ষা করছিল এই ভেবে যে, পিটিআই দুর্বল হয়ে যাবে অথবা ইমরান খানকে গ্রেফতার বা হত্যা করা হবে। তবে পরিস্থিতি খুবই খারাপ এবং নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থে মাফিয়ারা একসঙ্গে বিচার বিভাগকে ভাগ করার চেষ্টা করছে।
পাকিস্তানে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে উল্লেখ করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ রাজনৈতিক কর্মীদের গ্রেফতার করছে এবং পরে তাদের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের মতো আচরণ করছে। তিনি বলেন, মানুষ এখন সচেতন এবং নিজ স্বার্থে পরিস্থিতি ঘোলাটে করা এখন অসম্ভব।
গত ৩০ বছরে পিডিএম দলের শাসনামলে পাকিস্তান অর্থনৈতিকভাবে কেবলই নিচে নেমেছে এবং অন্যদিকে একইসময়ে ভারত ও বাংলাদেশ উন্নতি করেছে। এমন দাবি করে ইমরান আশ্বাস দেন, আবার ক্ষমতায় গেলে তিনি শাসন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবেন এবং আমলাতন্ত্র ও বিচার ব্যবস্থায় সংস্কার আনবেন।
ইমরান বলেন, পিটিআই যদি আবার ক্ষমতায় আসে, তবে পাকিস্তানে বিনিয়োগ আনার নতুন উপায় খুঁজে বের করা হবে এবং এক্ষেত্রে প্রবাসী পাকিস্তানিদের বাড়তি সুবিধা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, তারা ব্যয় হ্রাস করবেন এবং শাসন ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য সমস্ত প্রচেষ্টাকে কাজে লাগাবেন।
পিটিআই সরকারের অর্থমন্ত্রী কে হবেন এমন আরেক প্রশ্নের জবাবে ইমরান বলেন, পিডিএম ব্যর্থ হয়েছে কিন্তু শওকত তারিনই হবেন পরবর্তী অর্থমন্ত্রী। পাঞ্জাবের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত তার কোনও ধারণা নেই।
ইমরান খান বলেন, তার সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন দেশের অর্থনীতির উন্নতি হচ্ছিল কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। তার ভাষায়- ‘আমি দ্বিধা নিয়েই জেনারেল বাজওয়াকে সুবিধা দিতে থাকি কিন্তু পরে আমি বুঝতে পারি, তিনিই আমার এবং আমার সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের পেছনে ছিলেন।’