ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে রোহিঙ্গা সঙ্কট আরও কঠিন হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

ইউক্রেন যুদ্ধ ও সেখানকার শরণার্থী পরিস্থিতিতি বাংলাদেশের রোহিঙ্গা সঙ্কট থেকে বিশ্বের দৃষ্টি সেখানে সরিয়ে নিয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার সাংবাদিক নিক ক্লার্ককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ (ইউক্রেনে) পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে। পুরো ফোকাস (দৃষ্টি) এখন যুদ্ধ এবং ইউক্রেন থেকে আসা শরণার্থীদের দিকে।’

কাতারের দোহায় স্বল্পোন্নত দেশসমূহের ৫ম জাতিসংঘ সম্মেলনের (এলডিসি৫) ফাঁকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি আলজাজিরার সঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সাক্ষাৎকারের একটি সংক্ষিপ্ত অংশ ইতিমধ্যেই সম্প্রচার করা হয়েছে এবং পূর্ণাঙ্গ অংশটি আল জাজিরাতে আগামী ১১ মার্চ (শনিবার) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ৩০ মিনিট সম্প্রচার করা হবে। সম্মেলনে যোগ দিতে গত ৪ মার্চ কাতারে পৌঁছান শেখ হাসিনা এবং আজ বিকেলে তিনি ঢাকায় পৌঁছেছেন।

সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমস্যা সমাধানে ঢাকা আলোচনায় চালিয়ে গেলেও মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ইতিবাচক নয়। বাংলাদেশ মানবিক কারণে মিয়ানমারে নিপীড়ন, হত্যা ও ধর্ষণের শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে।’

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড এবং পরিস্থিতির উন্নতির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারে যখন রোহিঙ্গা নিপীড়ন শুরু হয়, রোহিঙ্গারা নির্যাতন, হত্যা ও ধর্ষণের শিকার হয় তখন আমরা তাদের জন্য দুঃখ অনুভব করেছি। এরপর আমরা সীমান্ত  খুলে দিয়েছি, আমরা তাদের আসতে দিয়েছি। এছাড়া আমরা মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের সকলের জন্য আশ্রয় ও চিকিৎসা দেই। পাশাপাশি আমরা মিয়ানমারের সঙ্গেও কথা বলতে শুরু করি। আমরা তাদের বলি, আপনারা তাদেরকে (রোহিঙ্গা) ফিরিয়ে নিন। দুর্ভাগ্যক্রমে তারা ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে না। রোহিঙ্গাদের নিজেদের দেশে ফিরে যেতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। কিন্তু এটা সত্যিই খুব কঠিন। আমরা তাদের জন্য আলাদা জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করেছি। ভাসানচর একটি ভালো জায়গা, থাকার জন্য ভালো জায়গা। আমরা সেখানে শিশুদের জন্য ভালো থাকার ব্যবস্থা এবং চমৎকার সুবিধার ব্যবস্থা করেছি।’

রোহিঙ্গা শিবিরে আগুনে বহু রোহিঙ্গার আশ্রয় হারানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আসলে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তারা একে অপরের সাথে লড়াইরত। তারা মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচারসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে জড়িত। তারা নিজেদের মধ্যে সংঘাতে লিপ্ত রয়েছে।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর