বন্ধুদের আড্ডা

ড. গোলসান আরা বেগমঃ বন্ধুদের আড্ডা সব সময় মিস্টি মধুর লাগে

ফাটা হাসি,ইয়ারকি, হৈচৈ,দুষ্টামি,টিপ্পুনি,
রোদেলা যৌবনে, কুড়ি বা বিশে টেনে নিয়ে যায়
যদিও হয়ে গেছি দাদা,দাদি,বা নানা,নানি।

এই তো সেদিন রঙিন আনন্দে উল্লাসে মেতে
বন্ধুরা বসেছিলাম বাচ্চু বিলকিসের বাগান বাড়ীতে
এরপর বেবীর বাসায় গানে গল্পে রসভোজে
সারাদিন ছিলাম হারানো স্মৃতিময় সাগরে মজে।।

বসেছিলাম যার যা মনে পড়ে গল্পের ঝুড়ি খুলে
পেটনীতি,রাজনীতি, বিশ্বনীতি কোনটা বাদ পড়েনি
কখনও হাসিতে গড়িয়ে পড়েছি একে অপরের উপর
যাদের হারিয়েছি তাদের তালিকাও তুলে এনেছি।

বন্ধু রাসু আমায় দেখেই গানে দিলো টান
বেদের মেয়ে জোছনা আমায় কথা দিয়েছে
অন্য বন্ধুরাও তালে তাল মিলাতে ভুল করেনি
আধো ভাংগা গানের অলি কলি টেনে নামিয়েছে।

ধূয়া উড়ানো জম্পেস গল্পের ঝড় হবে অন্য কোথাও
কোন বন্ধুটি করবে নিমন্ত্রণ সেই আশায় দিনগুণছি
কে কখন হারিয়ে যাবে না ফেরার দেশ
নানা দুশ্চিন্তা, ভয় আতংক নিয়ে মাথায় ঘুরছি।

মনে পড়ে এই তো সে দিন রেখেছিলাম পা বিশ্ববিদ্যালয়ে
চোখে ভাসতো সোনালি স্বপ্নের প্রজাপতি
চাঁদের বুড়ির সূতা কাটতে কাটতে কখন যে
হারিয়ে গেলো যৌবনের রোদেলা দুপুরের সবুজ তারুণ্য
সংসারের ঘানি ঠেলে কত শীত বর্ষা বসন্ত পাড়ি দিয়ে
র্পৌঁছে গেছি অধ্যায়ের প্রান্তিক অবকাশে।

মন ভর্তি ছিলো উচ্ছ্বাসে ভরা পাগলা অনুভূতি
স্বপ্নে দোলে কখনও হেসে ওঠতাম কান্না মুছে
কল্পনার সাত রং মেখে ফুলের তারা দিতাম প্রেমের উপহার
শিহরণে ভেসে আকাশটা টেনে আনতাম পায়ের নীচে।

কতো তিক্ত মধুর ছিলো রঙিন মোহনীয় জীবন
সামনে কি জানি না। কত দিন চলবে জীবন ঘড়ি
সময় নেই ফুলের গন্ধ শূঁকে দেখার
ফিকে রোদ বিকেলে কোথায় থামবে গাড়ি।

অতীতের স্মৃতিগুলি যতই কান্না করুক
টেনে নিয়ে যাক ছোট বেলার সমুদ্র সৈকতে
সঙ্গে যাবে শুধু হাত পা। মুছে যাবে ফিঙ্গার প্রিন্ট
যাইতে না চাইলেও অন্ধকার কানাগলি হবে শেষ বিছানা মাটির ঘরে।

অদৃশ্য শংকায় জলে টলমল চোখে বলি—

আবার হবে তো দেখা
এ দেখাই শেষ দেখা নয় তো

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর