২০২০ সালের ২৩ জুন। করোনার ভুয়া সনদ দেওয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে ডা. সাবরিনা চৌধুরীসহ আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। নিম্ন আদালতে সাবরিনার সাজা হলেও উচ্চ আদালতে আপিল আবেদন করে জামিন পান তিনি। প্রায় তিন বছর কারাগারে কাটিয়ে গত বছরের ৫ জুন জামিনে মুক্তি পান সাবরিনা।
সম্প্রতি দেশের এক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কারাগারে থাকার অভিজ্ঞতা জানান তিনি।
এ সময় ডা. সাবরিনা বলেন, ‘আমি কারাগারে ফুল ফুটিয়ে এসেছি এটুকু বলতে পারি। কারণ কারাগারে আমি মালির কাজ করতাম। ফুল বাগানের দায়িত্বে আমি ছিলাম। ওই সময়ে কারাগারে ফুলের বাগান ছিল না। ফুলের চারাগুলো কর্তৃপক্ষ আমাকে এনে দিয়েছেন কিন্তু মাটি কোপানো, গাছে পানি দেওয়া থেকে সবই করেছি। গাছে পানি দেওয়া মানে কোন পাইপ দিয়ে পানি দেওয়া নয়, অনেক দূর থেকে পাত্রে করে পানি এনে গাছে দেওয়া হয়। দিনে দু’বেলা করা হয়। খুবই কঠিন মাটি, সেই মাটিতে আমি ফুল ফুটিয়ে এসেছি।’
তিনি বলেন, ‘হাজতি হিসেবে আমার অভিজ্ঞতা ছিল, কয়েদি হিসেবেও আমার অভিজ্ঞতা হয়েছে। শ্রেণিপ্রাপ্ত আসামি ছিলাম আবার ডিভিশনের আসামিও ছিলাম। একদম যে নর্মাল ওয়ার্ড যেখানে ৩৫-৪৭ জন আসামি থাকে সেখানেও আমি থেকেছি। সেখানে ২টা কম্বল দেওয়া হতো বিছিয়ে ঘুমানোর জন্য। সবার জন্য মুঠম হাত জায়গা বরাদ্দ ছিল। সবাই আমাকে আদর করে চার আঙুল জায়গা বেশি দিত। তারা বলত বিসিএস ক্যাডার তাকে না হয় ৪ আঙুল জায়গা বেশিই দেই।’
সাবরিনা আরও বলেন, ‘আমি কারাগারে অনেক বই পড়তাম। সেখানে একটা বড় লাইব্রেরি ছিল। অনেক বইয়ের সংগ্রহ ছিল সেখানে। বই পড়তাম আর প্রথম দিন থেকেই আমি ভাবতাম বই লিখব। আগেও লিখতাম তবে নিভৃতে। পরে ভাবলাম আমাকে বই লিখতেই হবে।’
আসন্ন বই মেলায় তার নতুন বই আসছে জানিয়ে ডা. সাবরিনা বলেন, ‘বইটা প্রথম সপ্তাহ থেকেই বই মেলাতে পাওয়া যাবে আহমেদ পাবলিশার্স স্টলে। ৫৪১-৫৪৪ এই চারটা নম্বরের স্টলে বইটা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া রকমারি ডট কমেও আমার বইটা পাওয়া যাবে। এই বইয়ে নিজের কোনো ঘটনা নেই, এখানে স্থান পেয়েছে নারীবন্দিদের লোমহর্ষক সব ঘটনা।’