ঢাকা ০২:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
সৌদির কনসার্টে গাইবেন পড়শী আসছে নতুন গান আ.লীগের রাজনীতি করা নিয়ে যা বললেন মান্না দোসরদের গ্রেফতার করা না গেলে মুক্তি পাবে না পুরান ঢাকার সাধারণ মানুষ সেলিমের চেয়েও ভয়ঙ্কর দুই পুত্র সোলায়মান ও ইরফান বাতাসে ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি, ঢাকার অবস্থা কি শাকিবের ‘দরদ’ নিয়ে যা বললেন অপু বিশ্বাস ‘ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফল হলেই ভারতের স্বার্থ রক্ষিত’ ভারতীয় ব্যবসায়ীর সাক্ষাৎকার আইপিএল নিলামের চূড়ান্ত তালিকায় ১২ বাংলাদেশি ফিলিপাইনের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার টাইফুন আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও বাক-স্বাধীনতার: প্রধান উপদেষ্টা আজিমপুরে ডাকাতির সময় অপহৃত সেই শিশু উদ্ধার

নেত্রকোনায় কুমারদের দুর্দিন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:০২:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২২
  • ১৩৩ বার

বিজয় দাস, নেত্রকোনাঃ হাওর জনপদ নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন এলাকায় জীবন জীবিকার তাগিদে সভ্যতার আদি যুগ থেকে মানুষ মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিস প্রস্তুত করতে শিখেছে। এসব মাটির শিল্পকে যারা টিকিয়ে রেখেছে তাদের কে বলা হয় কুমার। মাটির তৈরি তৈজসপত্রের চাহিদা ও দাম কমে যাওয়ায় ভালো নেই জেলার কুমার সম্প্রদায়ের পরিবারের ছেলে লোকজন।

দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রমে তারা মাটি দিয়ে তৈরি করছে নানা জিনিসপত্র। অথচ আশ্চর্য্য হলেও সত্য এসব কুমারের আজ হাড়িতে চাল নেই, সংসার জীবনে নিভু নিভু করছে প্রদীপ। পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে কাটছে বছরের বেশীরভাগ দিন। তবু টিকিয়ে রেখেছে মাটির শিল্প। সৃষ্টিশীল এসব কাজ সংস্কৃতির বিচারে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ এসব কাজ একটি জাতির চিন্তাশক্তি ও সৃজনশীল প্রতিভার পরিচয় বহন করে। তথাপি এদেশের কুমারদের জীবন জীবিকা অত্যন্ত নিম্নমানের। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এসব আসবাবপত্র তৈরি করে কুমারেরা যে দামে বিক্রি করে তা দিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। ফলে সংসারের অভাব অনটন লেগেই থাকে সারা বছর। দারিদ্র্র্তা ও অসহায়ত্ব বিবেচনায় রেখে এদেশের অনেক গরীব ব্যক্তিকে সরকার  সহায়তা দিলেও মাটির শিল্পকে বাঁচাতে কুমারদের কোন সহায়তা দেওয়া হয় না। ফলে বিলুপ্তির পথে আজ বাংলার ঐতিহ্য বাহী মাটি শিল্প। তথাপি কুমারদের প্রতি রাষ্ট্রীয় দৃষ্টি পড়ছে না কখনই।

মোহনগঞ্জ উপজেলার বেঙ্গালা গ্ৰামের অখিল পাল বলেন, আমাদের অনেকেই এখন এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছে।এ পেশা দিয়ে আমার সংসার চলে না।তাই সবজি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি।বাপ দাদার এ পেশা টিকাতে হলে বিনা সুদে ঋণ যদি সরকার দেয় তাহলে জীবন যাপন করতে পারবো নতুবা আর একাজ করতে আগ্রহী না।
বারহাট্টার পালপাড়ার জগন্নাথ পাল জানায়, এ শিল্পের কাজে জীবন উৎসর্গ করলেও মূল্যায়ন পায়নি কোনদিন। অনেকে জীবন বাঁচানোর তাগিদে বেছে নিয়েছে অন্য পেশা। শুধু জীবনের ঘানি টানার দৃষ্টিতে দেখছে সকলেই। প্রযুক্তিগত ভাবে মাটি শিল্পকে উন্নত করার চিন্তা ও আগামি প্রজন্মের জন্য বাংলার সোনার মাটির পণ্য ঐতিহ্যগত ভাবে।
তবে আজও মাটির তৈরি পণ্য অনেক সমাদৃত। ব্যবহারও হয় অনেক গৃহস্থালি কাজে। শুধু প্রয়োজন এতটুকু উদ্যোগ ও একটু চেষ্টা। তাই এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হত দরিদ্র এসব কুমার কুমারীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক সহায়তা দেওয়া একান্ত প্রয়োজন বলে সচেতন মহল জানান।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

সৌদির কনসার্টে গাইবেন পড়শী আসছে নতুন গান

নেত্রকোনায় কুমারদের দুর্দিন

আপডেট টাইম : ০২:০২:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২২

বিজয় দাস, নেত্রকোনাঃ হাওর জনপদ নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন এলাকায় জীবন জীবিকার তাগিদে সভ্যতার আদি যুগ থেকে মানুষ মাটির তৈরি বিভিন্ন জিনিস প্রস্তুত করতে শিখেছে। এসব মাটির শিল্পকে যারা টিকিয়ে রেখেছে তাদের কে বলা হয় কুমার। মাটির তৈরি তৈজসপত্রের চাহিদা ও দাম কমে যাওয়ায় ভালো নেই জেলার কুমার সম্প্রদায়ের পরিবারের ছেলে লোকজন।

দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রমে তারা মাটি দিয়ে তৈরি করছে নানা জিনিসপত্র। অথচ আশ্চর্য্য হলেও সত্য এসব কুমারের আজ হাড়িতে চাল নেই, সংসার জীবনে নিভু নিভু করছে প্রদীপ। পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে কাটছে বছরের বেশীরভাগ দিন। তবু টিকিয়ে রেখেছে মাটির শিল্প। সৃষ্টিশীল এসব কাজ সংস্কৃতির বিচারে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ এসব কাজ একটি জাতির চিন্তাশক্তি ও সৃজনশীল প্রতিভার পরিচয় বহন করে। তথাপি এদেশের কুমারদের জীবন জীবিকা অত্যন্ত নিম্নমানের। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে এসব আসবাবপত্র তৈরি করে কুমারেরা যে দামে বিক্রি করে তা দিয়ে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। ফলে সংসারের অভাব অনটন লেগেই থাকে সারা বছর। দারিদ্র্র্তা ও অসহায়ত্ব বিবেচনায় রেখে এদেশের অনেক গরীব ব্যক্তিকে সরকার  সহায়তা দিলেও মাটির শিল্পকে বাঁচাতে কুমারদের কোন সহায়তা দেওয়া হয় না। ফলে বিলুপ্তির পথে আজ বাংলার ঐতিহ্য বাহী মাটি শিল্প। তথাপি কুমারদের প্রতি রাষ্ট্রীয় দৃষ্টি পড়ছে না কখনই।

মোহনগঞ্জ উপজেলার বেঙ্গালা গ্ৰামের অখিল পাল বলেন, আমাদের অনেকেই এখন এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছে।এ পেশা দিয়ে আমার সংসার চলে না।তাই সবজি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি।বাপ দাদার এ পেশা টিকাতে হলে বিনা সুদে ঋণ যদি সরকার দেয় তাহলে জীবন যাপন করতে পারবো নতুবা আর একাজ করতে আগ্রহী না।
বারহাট্টার পালপাড়ার জগন্নাথ পাল জানায়, এ শিল্পের কাজে জীবন উৎসর্গ করলেও মূল্যায়ন পায়নি কোনদিন। অনেকে জীবন বাঁচানোর তাগিদে বেছে নিয়েছে অন্য পেশা। শুধু জীবনের ঘানি টানার দৃষ্টিতে দেখছে সকলেই। প্রযুক্তিগত ভাবে মাটি শিল্পকে উন্নত করার চিন্তা ও আগামি প্রজন্মের জন্য বাংলার সোনার মাটির পণ্য ঐতিহ্যগত ভাবে।
তবে আজও মাটির তৈরি পণ্য অনেক সমাদৃত। ব্যবহারও হয় অনেক গৃহস্থালি কাজে। শুধু প্রয়োজন এতটুকু উদ্যোগ ও একটু চেষ্টা। তাই এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হত দরিদ্র এসব কুমার কুমারীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক সহায়তা দেওয়া একান্ত প্রয়োজন বলে সচেতন মহল জানান।