ঢাকা ০২:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পানি কমায় পদ্মার তীররক্ষা বাঁধে ধস, বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১৫:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৮২৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পদ্মা নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। কয়েকদিনের ভাঙনে বড়চর বেনীনগরে পদ্মার শহর তীররক্ষা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটারসহ বিস্তীর্ণ এলাকার কয়েক বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন ঝুঁকিতে আছে বসতবাড়ি ও স্থাপনাসহ কয়েকশ বিঘা ফসলি জমি।

ভাঙনরোধে এরইমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করছেন। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ বাঁধের কাজ ভালো না হওয়ায় তীররক্ষা বাঁধের সিসি ধসে গেছে। বস্তা ফেলে ভাঙনরোধ সম্ভব না।

রাজবাড়ীর ৮৫ কিলোমিটার অংশে রয়েছে প্রবহমান প্রমত্তা পদ্মা নদী। প্রতিবছর পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে হাজার হাজার একর ফসলি জমিসহ বহু স্থাপনা। নিঃস্ব হয় হাজারো পরিবার। বর্তমানে জেলা সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। প্রকল্প না থাকায় ভাঙন প্রবণ এলাকায় জরুরি আপদকালীন বালুর বস্তা ডাম্পিংয়ের কাজ করছে পাউবো।

সরজমিনে মিজানপুরের চরসিলিমপুর, বড়চর বেনীনগর, কালিতলা ও মহাদেবপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। বড়চর বেনীনগর এলাকায় গত কয়েকদিন আগে স্থায়ী নদীর তীর রক্ষা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার এলাকার সিসি ব্লক ধসে যাওয়াসহ ভাঙছে নদী তীর। ভাঙন রোধে বালুর বস্তা ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করছে পাউবো। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন ও বসতবাড়ি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজবাড়ী পদ্মা নদীর ডান তীররক্ষা বাঁধের (ফেজ-২) সাড়ে ৪ কিলোমিটার নতুন ও (ফেজ-১) এর সংশোধিত আড়াই কিলোমিটারসহ মোট ৭ কিলোমিটার নদী তীর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। যার ব্যয় ধরা হয় ৩৭৬ কোটি টাকা। নির্দিষ্ট সময় কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় দফায় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় চলতি বছর ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু এখনো শেষ হয়নি প্রকল্পের কাজ। ফলে আটকে আছে প্রকল্পের কিছু কাজ।

স্থানীয় আক্কাস আলী সরদার, ইউনুছ খা, গণি সরদার, মনোয়ার বেগমসহ অনেকে বলেন, ভাঙতে ভাঙতে তাদের সব নদীতে চলে গেছে। এখন যে ফসলি জমিটুকু আছে, তাও ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙন শুরু হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এসে কিছু বস্তা ফেলে, কিন্তু অন্যদিকে আবার ভাঙে। আসলে বস্তা ফেলে নদী ভাঙন ঠেকানো যাবে না। ভাঙন ঠেকাতে শক্ত কাজ করতে হবে। যা অনেক নিচ থেকে এবং শুকনো মৌসুমে করতে হবে। এখন যে কাজ হচ্ছে তা কিছুই না, শুধু কর্মকর্তাদের পকেট ভারী করা।

 

তাদের অভিযোগ, সরকার টাকা ঠিকই দিচ্ছে, কিন্তু কাজের নামে কিছুই হচ্ছে না। বোল্ডার দিয়ে বাঁধা কাজও ভেঙে যাচ্ছে। কাজ ভালো হলে তো ভাঙতো না।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর বলেন, নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পানির স্রোতে মিজানপুরের কিছু কিছু স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনকবলিত স্থানগুলো জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। অনেক স্থানে ব্যাগের পাশাপাশি জিও টিউব দেওয়া হচ্ছে। এদিকে চরসিলিমপুরে প্রায় ৬০ মিটার সিসি ব্লক ধসে যাওয়ায় তাৎক্ষণিক সেখানে কাজ শুরু হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

পানি কমায় পদ্মার তীররক্ষা বাঁধে ধস, বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি

আপডেট টাইম : ১১:১৫:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পদ্মা নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। কয়েকদিনের ভাঙনে বড়চর বেনীনগরে পদ্মার শহর তীররক্ষা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটারসহ বিস্তীর্ণ এলাকার কয়েক বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন ঝুঁকিতে আছে বসতবাড়ি ও স্থাপনাসহ কয়েকশ বিঘা ফসলি জমি।

ভাঙনরোধে এরইমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করছেন। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ বাঁধের কাজ ভালো না হওয়ায় তীররক্ষা বাঁধের সিসি ধসে গেছে। বস্তা ফেলে ভাঙনরোধ সম্ভব না।

রাজবাড়ীর ৮৫ কিলোমিটার অংশে রয়েছে প্রবহমান প্রমত্তা পদ্মা নদী। প্রতিবছর পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনে হাজার হাজার একর ফসলি জমিসহ বহু স্থাপনা। নিঃস্ব হয় হাজারো পরিবার। বর্তমানে জেলা সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। প্রকল্প না থাকায় ভাঙন প্রবণ এলাকায় জরুরি আপদকালীন বালুর বস্তা ডাম্পিংয়ের কাজ করছে পাউবো।

সরজমিনে মিজানপুরের চরসিলিমপুর, বড়চর বেনীনগর, কালিতলা ও মহাদেবপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। বড়চর বেনীনগর এলাকায় গত কয়েকদিন আগে স্থায়ী নদীর তীর রক্ষা বাঁধের প্রায় ১০০ মিটার এলাকার সিসি ব্লক ধসে যাওয়াসহ ভাঙছে নদী তীর। ভাঙন রোধে বালুর বস্তা ভর্তি জিও ব্যাগ ডাম্পিং করছে পাউবো। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন ও বসতবাড়ি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজবাড়ী পদ্মা নদীর ডান তীররক্ষা বাঁধের (ফেজ-২) সাড়ে ৪ কিলোমিটার নতুন ও (ফেজ-১) এর সংশোধিত আড়াই কিলোমিটারসহ মোট ৭ কিলোমিটার নদী তীর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। যার ব্যয় ধরা হয় ৩৭৬ কোটি টাকা। নির্দিষ্ট সময় কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় দফায় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে করা হয় চলতি বছর ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু এখনো শেষ হয়নি প্রকল্পের কাজ। ফলে আটকে আছে প্রকল্পের কিছু কাজ।

স্থানীয় আক্কাস আলী সরদার, ইউনুছ খা, গণি সরদার, মনোয়ার বেগমসহ অনেকে বলেন, ভাঙতে ভাঙতে তাদের সব নদীতে চলে গেছে। এখন যে ফসলি জমিটুকু আছে, তাও ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙন শুরু হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন এসে কিছু বস্তা ফেলে, কিন্তু অন্যদিকে আবার ভাঙে। আসলে বস্তা ফেলে নদী ভাঙন ঠেকানো যাবে না। ভাঙন ঠেকাতে শক্ত কাজ করতে হবে। যা অনেক নিচ থেকে এবং শুকনো মৌসুমে করতে হবে। এখন যে কাজ হচ্ছে তা কিছুই না, শুধু কর্মকর্তাদের পকেট ভারী করা।

 

তাদের অভিযোগ, সরকার টাকা ঠিকই দিচ্ছে, কিন্তু কাজের নামে কিছুই হচ্ছে না। বোল্ডার দিয়ে বাঁধা কাজও ভেঙে যাচ্ছে। কাজ ভালো হলে তো ভাঙতো না।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অঙ্কুর বলেন, নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পানির স্রোতে মিজানপুরের কিছু কিছু স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনকবলিত স্থানগুলো জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। অনেক স্থানে ব্যাগের পাশাপাশি জিও টিউব দেওয়া হচ্ছে। এদিকে চরসিলিমপুরে প্রায় ৬০ মিটার সিসি ব্লক ধসে যাওয়ায় তাৎক্ষণিক সেখানে কাজ শুরু হয়েছে।