হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে ইরান। পুলিশি হেফাজতে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনির (২২) মৃত্যুর প্রতিবাদে পথে নেমে নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০।
তবে ইরান সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে— এখনো পর্যন্ত সরকারবিরোধী বিক্ষোভ সামাল দেওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সরকারের দেওয়া তথ্য ভুয়া বলেই দাবি করেছে এ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
এ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, অন্ততপক্ষে ইরানের ৮০ শহরে মানবাধিকার এবং মৌলিক অধিকারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন সাধারণ মানুষ।
ইতোমধ্যে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, ইরানের রাজধানী তেহরানের জ্বলন্ত ছবি। গত আট দিন ধরে সন্ধ্যা নামার পরই তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় জড়ো হচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।
সরকারবিরোধী স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি কুশপুতুল এবং হিজাব পুড়িয়েও প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে বিক্ষোভকারীদের। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার পাশাপাশি পোড়ানো হয়েছে পুলিশের গাড়িও।
সরকারের পক্ষ থেকে এই বিদ্রোহকে এখনই সমূলে উৎখাতের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও মনে করা হচ্ছে।
প্রতিবাদপ্রবণ এলাকাগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। বহির্বিশ্বের কাছে ইরানের বর্তমান পরিস্থিতির চেহারা ধামাচাপা দিতে ইন্টারনেট ব্যবহারে ওপরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
শুক্রবার পর্যন্ত পর পর তিন দিন ইরানে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রেখেছে দেশটির সরকার। বিক্ষোভকারীদের সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস এবং গুলিও চালাচ্ছে পুলিশ। সমাজমাধ্যমের সুবাদে সেই দৃশ্য ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে গিয়ে নিউইয়র্কে একটি সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার বলেন, সরকারকে অবশ্যই বিক্ষোভ দেখানো এবং ভাঙচুর চালানোর মধ্যে পার্থক্য করতে হবে। প্রয়োজনে সঠিক ব্যবস্থাও নিতে হবে।
প্রসঙ্গত হিজাব না পরে রাস্তায় বেরোনোর ‘শাস্তি’ হিসাবে মাহসা নামে তরুণীকে আটক করে পুলিশ। ১৩ সেপ্টেম্বর গাড়িতে চেপে সপরিবারে কুর্দিস্তান থেকে রাজধানী তেহরানে আসছিলেন ২২ বছরের মাহসা।
সেই সময় তাদের গাড়ি আটকায় ইরানের পুলিশ। গাড়িতে মাহসা হিজাব পরেননি বলে পরিবারের সামনেই মাহসাকে গ্রেফতার করে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়। পরে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় ওই তরুণীর। তার পর থেকে ইরানে দিকে দিকে অসন্তোষের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।