হাওর বার্তা ডেস্কঃ রেঞ্চ দিয়ে পদ্মা সেতুর নাট খুলে ঢিলা করে পরে হাত দিয়ে খোলার ভিডিও বানান মাহদি হাসান। উদ্দেশ্যমূলকভাবে নাট খোলার জন্যই তিনি সঙ্গে করে রেঞ্চ নিয়ে গিয়েছিলেন।
গত ২৬ জুন নাট খোলার ভিডিও ভাইরালের পর নজরদারির ধারাবাহিকতায় বুধবার (২৯ জুন) দিনগত রাতে লক্ষ্মীপুর থেকে মাহদিকে গ্রেফতার করে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।
সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান জানান, গ্রেফতার মাহদি হাসানের কাছ থেকে নাট খোলার ভিডিও ধারণে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়েছে।
তিনি জানান, গ্রেফতার মাহদি তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসার ছাত্র। সেখানে ছাত্র অবস্থায় তিনি শিবিরের কর্মী ছিলেন। সেই মাদ্রাসা থেকে আলিম-দাখিল পাশের পর রাজধানীর কবি নজরুল কলেজে ভর্তি হন মাহদি। তবে তার রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি।
তবে পড়াশোনা না করলেও মাহদি গ্রামের বাড়ি থাকতেন না। তিনি ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে থাকতেন।
সিটিটিসির এই কর্মকর্তা বলেন, পদ্মা সেতুর সাফল্যকে ছোট করা ও জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য একটি মহল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ২৬ জুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় মাহদি হাসান পদ্মা সেতুর রেলিংয়ের নাট-বল্টু খুলে আবার লাগিয়ে দিচ্ছেন। সিটিটিসির সাইবার ইন্টেলিজেন্স বিভাগের নজরদারির ধারাবাহিকতায় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ এলাকা থেকে মাহদিকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে পদ্মা সেতু উত্তর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সরকারের সাফল্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মাহদি এই কাজ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঘটনার আগের রাতে মাহদি তার সঙ্গীদের নিয়ে পদ্মা সেতুতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। ২৬ জুন সেতুতে যান চলাচল শুরু হওয়ার দিন ভোরে মাহদি সঙ্গীদের নিয়ে মাওয়া প্রান্ত থেকে সেতু পার হয়ে ওইপারে যান।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, তারা এমন ঘটনার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকেন, কিন্তু মানুষজন বেশি থাকায় তারা সেটা পারছিলেন না। এরপর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে অপর প্রান্ত থেকে ফেরার সময় মাওয়া প্রান্তে এসে সেতুর রেলিংয়ের নাট খুলে ভিডিও করেন মাহদি।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, মাহদি ভিডিওতে বলছিলেন ‘আমি কিন্তু রেঞ্চ ব্যবহার করছিনা’। তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে আপত্তিকর রেঞ্চ শব্দটি ব্যহার করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাহদি স্বীকার করেছেন, রেঞ্চ দিয়ে প্রথমে নাট খুলে লুজ করে, পরে হাত দিয়ে খুলে ভিডিও বানানো হয়।
উদ্দেশ্যমূলক ভাবে সরকারের সাফল্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মাহদিসহ তার সঙ্গীরা সেতুর নাট খুলতে রেঞ্চ নিয়ে গিয়েছিলো। আমরা মাহদির সঙ্গীদের খুঁজছি, তাদের গ্রেফতার করা গেলে হয়তো নাট খোলায় ব্যবহৃত রেঞ্চটি উদ্ধার করা সম্ভব হবে। মাহদিকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের আর কোনো উদ্দেশ্য ছিলো কি-না জানা যাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের নজরদারি অব্যাহত আছে। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে যাতে কেউ কোনো অপতৎপরতা চালাতে না পারে এ বিষয়ে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সেতু এলাকায়ও আমাদের সার্ভিলেন্স রয়েছে।