ঢাকা ০৫:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কবি নির্মলেন্দু গুণের জন্মদিন আজ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৫৬:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুন ২০২২
  • ২৬৬ বার

বিজয় দাস, প্রর্তিনিধি নেত্রকোনাঃ জননন্দিত কবি নির্মলেন্দু গুণ ২১ জুন ১৯৪৫ সালে আজকের এই দিনে কাশবন, বারহাট্টা, নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন। যিনি নির্মলেন্দু গুণ নামে ব্যাপক পরিচিত, যিনি একজন কবি ও চিত্রশিল্পী।

কবিতার পাশাপাশি তিনি গদ্য ও ভ্রমণ কাহিনিও লিখেছেন। তাঁর ছেলেবেলা কাটে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায়। বাবা সুখেন্দুপ্রকাশ গুণ এবং মা বীণাপাণি। বাবা-মায়ের তিন মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে নির্মলেন্দু ছোট ছেলে। ৪ বছর বয়সে মায়ের মৃত্যু হতে বাবা পুনরায় বিবাহ করেন।

প্রথমে বারহাট্টার করোনেশন কৃষ্ণপ্রসাদ ইন্সটিটিউটে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন তিনি। দুই বিষয়ে লেটারসহ মেট্রিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ পান ১৯৬২ সালে৷ মাত্র ৩ জন প্রথম বিভাগ পেয়েছিল স্কুল থেকে৷। মেট্রিক পরীক্ষার আগেই নেত্রকোনা থেকে প্রকাশিত ‘উত্তর আকাশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় নির্মলেন্দু গুণের প্রথম কবিতা ‘নতুন কান্ডারী’৷ মেট্রিকের পর আই.এস.সি পড়তে চলে আসেন ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে৷

মেট্রিক পরীক্ষায় ভালো রেজাল্টের সুবাদে পাওয়া রেসিডেন্সিয়াল স্কলারশিপসহ পড়তে থাকেন এখানে৷ নেত্রকোনায় ফিরে এসে নির্মলেন্দু গুণ আবার ‘উত্তর আকাশ’ পত্রিকা ও তাঁর কবি বন্ধুদের কাছে আসার সুযোগ পান৷ সুন্দর সাহিত্যিক পরিমন্ডলে তাঁর দিন ভালোই কাটতে থাকে৷ একসময় এসে যায় আই.এস.সি পরীক্ষা৷ ১৯৬৪ সালের জুন মাসে আই.এস.সি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডের ১১৯ জন প্রথম বিভাগ অর্জনকারীর মাঝে তিনিই একমাত্র নেত্রকোনা কলেজের৷ পরবর্তীতে বাবা চাইতেন ডাক্তারী পড়া৷ কিন্তু না তিনি চান্স পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগে ৷

ভর্তির প্রস্তুতি নেন নির্মলেন্দু গুণ ৷ হঠাত্‍ হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা শুরু হয় ঢাকায়৷ দাঙ্গার কারণে তিনি ফিরে আসেন গ্রামে৷ ঢাকার অবস্থার উন্নতি হলে ফিরে গিয়ে দেখেন তাঁর নাম ভর্তি লিষ্ট থেকে লাল কালি দিয়ে কেটে দেওয়া৷ আর ভর্তি হওয়া হলো না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৷ ফিরে আসেন গ্রামে ৷ আই.এস.সি-তে ভালো রেজাল্ট করায় তিনি ফার্স্ট গ্রেড স্কলারশিপ পেয়েছিলেন ৷ মাসে ৪৫ টাকা, বছর শেষে আরও ২৫০ টাকা৷ তখনকার দিনে অনেক টাকা৷ ১৯৬৯ সালে প্রাইভেটে বি.এ. পাশ করেন তিনি, যদিও বি.এ. সার্টিফিকেটটি তিনি তোলেননি। ১৯৬৫ সালে আবার বুয়েটে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন৷

ছয় দশকে বাংলাদেশে কবিতা আন্দোলনের এক নতুন ধারা সূচিত হয়। বিষয়বৈচিত্র্য ও আঙ্গিক পরিবর্তন নিয়ে মনোনিবেশ করেন এই সময়ের কবিরা। এই দশকের প্রধান কবি নির্মলেন্দু গুণ বাংলা কবিতাকে শিল্পনন্দন ও জীবন ঘনিষ্ঠভাবে উপস্থাপন করেছেন। তার কবিতা মানব মানবীর প্রেম, শ্রেণি সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, ব্যক্তিগত অনুভব ও দ্রোহ ধারণ করেছে। ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকা-ের পর তিনি তার সেইসব স্মরণীয় কবিতা নিয়ে প্রকাশ্য অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। এই সাহস ও দেশপ্রেম তাকে সমগ্র বাঙালির কাছে বিশেষভাবে আদৃত করেছে।

১৯৭০ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রেমাংশুর রক্ত চাই’ প্রকাশিত হওয়ার পর জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এই গ্রন্থের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে লেখা হুলিয়া কবিতাটা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং পরবর্তী কালে এর উপর ভিত্তি করে তানভির মোকাম্মেল একটি পরীক্ষামূলক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এ ছাড়াও তাঁর স্বাধীনতা, এই শব্দটি কী ভাবে আমাদের হল কবিতাটি বাংলাদেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তকে পাঠ্য। তিনি ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমি এবং ২০০১ সালে একুশে পদক অর্জন করেন।

কবির বিখ্যাত কাব্যগ্রন্ত্রগুলির মধ্যে রয়েছে– হুলিয়া, অসমাপ্ত কবিতা, মানুষ, প্রেমাংশুর রক্ত চাই, আফ্রিকার প্রেমের কবিতা, নিরঞ্জনের পৃথিবী ইত্যাদি।

মানুষ, মানবিকতা, প্রেম-দ্রোহ, দেশাত্মবোধ নির্মলেন্দু গুণের কবিতার প্রধান উপজীব্য। রাজনৈতিক চেতনার কবিতা তিনি যেমন রচনা করেছেন তেমন প্রেম-বিরহ, একাকিত্বের যন্ত্রণা, প্রকৃতি মুগ্ধতা নিয়ে সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য পঙ্ক্তি। তার কবিতায় মায়া, ছায়া ও অস্তিত্বের বহুতল উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। শুধু আবেগসর্বস্ব পঙ্ক্তি রচনা করে অনেক কবি জনপ্রিয় হওয়ার দিকে ঝুঁকেছেন। নির্মলেন্দু গুণ এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তার কবিতায় এক স্বতন্ত্র স্বর আবিষ্কৃত হয়েছে।

দেশের পলিমাটির ঘ্রাণ, সাধারণ মানুষের জীবনযাপন, সংগ্রাম থেকে শুরু করে নিম্নমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্তের চিন্তাধারার রূপান্তর কবিতার অন্তঃপ্রাণ। নেকাব্বর, রেখা কিংবা অন্য কেউ ঘুরে ফিরে এসেছে বাংলার প্রতিনিধি হয়ে। একই সঙ্গে পরিণত ও তরুণের হৃদয়ানুভূতি তার কবিতার বিষয় হয়ে যায়। কাল নির্মলেন্দু গুণের কবিতার অবস্থান বিচার করবে। এ মুহূর্তে শুধু বলা সঙ্গত, তিনি সমকালকে ধারণ করেছিলেন যথাযথভাবে। বিদ্রোহ, প্রেম ও মানবিক সম্পর্ক একসঙ্গে মিলিয়ে তিনি যে কবিতা নির্মাণ করেন তা আমাদের জীবনের গল্প।

কবির জন্মস্থান কাশবনে পৈতৃক বাড়ি উদ্ধারের মানসে তৈরি করেছেন বাড়িটি। যেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি , মাইকেল মধুসূদনের প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে।শৈলজারঞ্জন সংগ্ৰহশালা তৈরি করে বিভিন্ন বই সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আছে সংগীত চর্চা কেন্দ্র ও কবিতা লিখতে গিয়ে পাওয়া অসংখ্য পুরস্কার।

কবি ভক্ত বারহাট্টা উপজেলা চেয়ারম্যান মইনুল হক কাসেম বলেছেন, কবি নির্মলেন্দু গুণের জীবন কাহিনী বলার মেধা আমার নেই। তিনি শুধু কবি নন, সামাজিক মানুষ হিসেবে অনেক বড়। জাতীয় দিবস, জন্মদিন উপলক্ষে বাড়িতে এলে এলাকার মানুষ এসে ভিড় করে। ভিড় করে বিভিন্ন গ্রাম ও অঞ্চল থেকে আসা সকল শ্রেণির মানুষ, কবি , সাহিত্যিক সাংবাদিক ও নেতৃবৃন্দ।

উদীচি শিল্পী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক অসিত কুমার ঘোষ বলেন, স্বচক্ষে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। কবি নির্মলেন্দু গুন কতটা মিশুক ও উদার মনের মানুষ।তার গড়ে তোলা নেত্রকোনার কবিতা কুঞ্জ দেখতে দেশ বিদেশের অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন আসেন। যেখানে কবি নির্মলেন্দু গুন ও বিশ্বের সেরা লেখকদের শেষ বাক্য,বই সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কবি নির্মলেন্দু গুণের জন্মদিন আজ

আপডেট টাইম : ০২:৫৬:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুন ২০২২

বিজয় দাস, প্রর্তিনিধি নেত্রকোনাঃ জননন্দিত কবি নির্মলেন্দু গুণ ২১ জুন ১৯৪৫ সালে আজকের এই দিনে কাশবন, বারহাট্টা, নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন। যিনি নির্মলেন্দু গুণ নামে ব্যাপক পরিচিত, যিনি একজন কবি ও চিত্রশিল্পী।

কবিতার পাশাপাশি তিনি গদ্য ও ভ্রমণ কাহিনিও লিখেছেন। তাঁর ছেলেবেলা কাটে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায়। বাবা সুখেন্দুপ্রকাশ গুণ এবং মা বীণাপাণি। বাবা-মায়ের তিন মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে নির্মলেন্দু ছোট ছেলে। ৪ বছর বয়সে মায়ের মৃত্যু হতে বাবা পুনরায় বিবাহ করেন।

প্রথমে বারহাট্টার করোনেশন কৃষ্ণপ্রসাদ ইন্সটিটিউটে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন তিনি। দুই বিষয়ে লেটারসহ মেট্রিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ পান ১৯৬২ সালে৷ মাত্র ৩ জন প্রথম বিভাগ পেয়েছিল স্কুল থেকে৷। মেট্রিক পরীক্ষার আগেই নেত্রকোনা থেকে প্রকাশিত ‘উত্তর আকাশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় নির্মলেন্দু গুণের প্রথম কবিতা ‘নতুন কান্ডারী’৷ মেট্রিকের পর আই.এস.সি পড়তে চলে আসেন ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজে৷

মেট্রিক পরীক্ষায় ভালো রেজাল্টের সুবাদে পাওয়া রেসিডেন্সিয়াল স্কলারশিপসহ পড়তে থাকেন এখানে৷ নেত্রকোনায় ফিরে এসে নির্মলেন্দু গুণ আবার ‘উত্তর আকাশ’ পত্রিকা ও তাঁর কবি বন্ধুদের কাছে আসার সুযোগ পান৷ সুন্দর সাহিত্যিক পরিমন্ডলে তাঁর দিন ভালোই কাটতে থাকে৷ একসময় এসে যায় আই.এস.সি পরীক্ষা৷ ১৯৬৪ সালের জুন মাসে আই.এস.সি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডের ১১৯ জন প্রথম বিভাগ অর্জনকারীর মাঝে তিনিই একমাত্র নেত্রকোনা কলেজের৷ পরবর্তীতে বাবা চাইতেন ডাক্তারী পড়া৷ কিন্তু না তিনি চান্স পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগে ৷

ভর্তির প্রস্তুতি নেন নির্মলেন্দু গুণ ৷ হঠাত্‍ হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা শুরু হয় ঢাকায়৷ দাঙ্গার কারণে তিনি ফিরে আসেন গ্রামে৷ ঢাকার অবস্থার উন্নতি হলে ফিরে গিয়ে দেখেন তাঁর নাম ভর্তি লিষ্ট থেকে লাল কালি দিয়ে কেটে দেওয়া৷ আর ভর্তি হওয়া হলো না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৷ ফিরে আসেন গ্রামে ৷ আই.এস.সি-তে ভালো রেজাল্ট করায় তিনি ফার্স্ট গ্রেড স্কলারশিপ পেয়েছিলেন ৷ মাসে ৪৫ টাকা, বছর শেষে আরও ২৫০ টাকা৷ তখনকার দিনে অনেক টাকা৷ ১৯৬৯ সালে প্রাইভেটে বি.এ. পাশ করেন তিনি, যদিও বি.এ. সার্টিফিকেটটি তিনি তোলেননি। ১৯৬৫ সালে আবার বুয়েটে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন৷

ছয় দশকে বাংলাদেশে কবিতা আন্দোলনের এক নতুন ধারা সূচিত হয়। বিষয়বৈচিত্র্য ও আঙ্গিক পরিবর্তন নিয়ে মনোনিবেশ করেন এই সময়ের কবিরা। এই দশকের প্রধান কবি নির্মলেন্দু গুণ বাংলা কবিতাকে শিল্পনন্দন ও জীবন ঘনিষ্ঠভাবে উপস্থাপন করেছেন। তার কবিতা মানব মানবীর প্রেম, শ্রেণি সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, ব্যক্তিগত অনুভব ও দ্রোহ ধারণ করেছে। ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকা-ের পর তিনি তার সেইসব স্মরণীয় কবিতা নিয়ে প্রকাশ্য অবস্থান গ্রহণ করেছিলেন। এই সাহস ও দেশপ্রেম তাকে সমগ্র বাঙালির কাছে বিশেষভাবে আদৃত করেছে।

১৯৭০ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘প্রেমাংশুর রক্ত চাই’ প্রকাশিত হওয়ার পর জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এই গ্রন্থের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে লেখা হুলিয়া কবিতাটা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং পরবর্তী কালে এর উপর ভিত্তি করে তানভির মোকাম্মেল একটি পরীক্ষামূলক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এ ছাড়াও তাঁর স্বাধীনতা, এই শব্দটি কী ভাবে আমাদের হল কবিতাটি বাংলাদেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যপুস্তকে পাঠ্য। তিনি ১৯৮২ সালে বাংলা একাডেমি এবং ২০০১ সালে একুশে পদক অর্জন করেন।

কবির বিখ্যাত কাব্যগ্রন্ত্রগুলির মধ্যে রয়েছে– হুলিয়া, অসমাপ্ত কবিতা, মানুষ, প্রেমাংশুর রক্ত চাই, আফ্রিকার প্রেমের কবিতা, নিরঞ্জনের পৃথিবী ইত্যাদি।

মানুষ, মানবিকতা, প্রেম-দ্রোহ, দেশাত্মবোধ নির্মলেন্দু গুণের কবিতার প্রধান উপজীব্য। রাজনৈতিক চেতনার কবিতা তিনি যেমন রচনা করেছেন তেমন প্রেম-বিরহ, একাকিত্বের যন্ত্রণা, প্রকৃতি মুগ্ধতা নিয়ে সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য পঙ্ক্তি। তার কবিতায় মায়া, ছায়া ও অস্তিত্বের বহুতল উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। শুধু আবেগসর্বস্ব পঙ্ক্তি রচনা করে অনেক কবি জনপ্রিয় হওয়ার দিকে ঝুঁকেছেন। নির্মলেন্দু গুণ এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। তার কবিতায় এক স্বতন্ত্র স্বর আবিষ্কৃত হয়েছে।

দেশের পলিমাটির ঘ্রাণ, সাধারণ মানুষের জীবনযাপন, সংগ্রাম থেকে শুরু করে নিম্নমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্তের চিন্তাধারার রূপান্তর কবিতার অন্তঃপ্রাণ। নেকাব্বর, রেখা কিংবা অন্য কেউ ঘুরে ফিরে এসেছে বাংলার প্রতিনিধি হয়ে। একই সঙ্গে পরিণত ও তরুণের হৃদয়ানুভূতি তার কবিতার বিষয় হয়ে যায়। কাল নির্মলেন্দু গুণের কবিতার অবস্থান বিচার করবে। এ মুহূর্তে শুধু বলা সঙ্গত, তিনি সমকালকে ধারণ করেছিলেন যথাযথভাবে। বিদ্রোহ, প্রেম ও মানবিক সম্পর্ক একসঙ্গে মিলিয়ে তিনি যে কবিতা নির্মাণ করেন তা আমাদের জীবনের গল্প।

কবির জন্মস্থান কাশবনে পৈতৃক বাড়ি উদ্ধারের মানসে তৈরি করেছেন বাড়িটি। যেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি , মাইকেল মধুসূদনের প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়েছে।শৈলজারঞ্জন সংগ্ৰহশালা তৈরি করে বিভিন্ন বই সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আছে সংগীত চর্চা কেন্দ্র ও কবিতা লিখতে গিয়ে পাওয়া অসংখ্য পুরস্কার।

কবি ভক্ত বারহাট্টা উপজেলা চেয়ারম্যান মইনুল হক কাসেম বলেছেন, কবি নির্মলেন্দু গুণের জীবন কাহিনী বলার মেধা আমার নেই। তিনি শুধু কবি নন, সামাজিক মানুষ হিসেবে অনেক বড়। জাতীয় দিবস, জন্মদিন উপলক্ষে বাড়িতে এলে এলাকার মানুষ এসে ভিড় করে। ভিড় করে বিভিন্ন গ্রাম ও অঞ্চল থেকে আসা সকল শ্রেণির মানুষ, কবি , সাহিত্যিক সাংবাদিক ও নেতৃবৃন্দ।

উদীচি শিল্পী গোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক অসিত কুমার ঘোষ বলেন, স্বচক্ষে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। কবি নির্মলেন্দু গুন কতটা মিশুক ও উদার মনের মানুষ।তার গড়ে তোলা নেত্রকোনার কবিতা কুঞ্জ দেখতে দেশ বিদেশের অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন আসেন। যেখানে কবি নির্মলেন্দু গুন ও বিশ্বের সেরা লেখকদের শেষ বাক্য,বই সাজিয়ে রাখা হয়েছে।