হাওর বার্তা ডেস্কঃ একের পর এক বন্দুক হামলায় বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। বন্দুক হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না স্কুল, হাসপাতাল, গির্জা কিংবা শপিংমলের মতো স্থানগুলোও। সম্প্রতি টেক্সাসের একটি স্কুলে চালানো হামলায় প্রাণ হারিয়েছে ১৯ শিশু শিক্ষার্থীসহ ২১ জন।
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীসহ নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও অন্যান্য স্টাফদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র তথা বন্দুক তুলে দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত উত্তর আমেরিকার এই দেশটির ওহাইও অঙ্গরাজ্য শিক্ষকদের নিরাপত্তায় তাদের হাতে বন্দুক তুলে দেওয়ার একটি আইন কার্যকর করতে প্রস্তুত বলে জানানো হয়েছে।
এই আইনের সমর্থকদের আশা, নতুন এই আইনটি কার্যকরের মাধ্যমে শিক্ষদের সশস্ত্র করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোতে বন্দুক হামলা হ্রাস পাবে এবং এতে করে প্রাণহানির ঘটনায় কমবে। তবে শিক্ষকদের ইউনিয়ন এবং অঙ্গরাজ্যটির প্রধান পুলিশ অফিসার ইউনিয়ন-সহ এই বিলের বিরোধীরা বলছেন, এটি শিশুদের জন্য স্কুলগুলোকে আরও বিপজ্জনক করে তুলবে।
আলজাজিরা বলছে, টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের উভালদের একটি স্কুলে রাইফেল নিয়ে এক কিশোরের হামলার ১০ দিন পর বিলটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। বর্বর ওই হামলায় ১৯ জন শিশু শিক্ষার্থী-সহ দুই শিক্ষক নিহত হন।
ওহাইও অঙ্গরাজ্যের গভর্নর মাইক ডিওয়াইন বলেছেন, শিক্ষকদের হাতে বন্দুক তুলে দেওয়ার এই বিলে তিনি স্বাক্ষর করবেন এবং এটিকে আইনে পরিণত করবেন। রাজনৈতিকভাবে তিনি একজন রিপাবলিকান এবং আলোচিত বিলটি চলতি সপ্তাহে রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত ওহাইও’র সাধারণ পরিষদে পাস হয়েছে।
বিলের সমর্থকরা বলছেন, নতুন এই আইনটি কার্যকর হলে স্কুলে হামলার সময় পুলিশ আসার আগেই সশস্ত্র আক্রমণকারীর মোকাবিলা করতে পারবেন স্কুলের কর্মীরা। বিলের স্পন্সর ও রিপ্রেজেন্টেটিভ সদস্য টমাস হল এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমাদের স্কুলে জরুরি পরিস্থিতিতে প্রতিটি সেকেন্ডের গুরুত্ব রয়েছে এবং এই আইনের মাধ্যমে সম্ভাব্য ট্র্যাজেডি বা বিপর্যয় প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
আলজাজিরা বলছে, সশস্ত্র শিক্ষকদের ক্রিমিনাল ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করা হবে এবং প্রতি বছর তাদেরকে আট ঘণ্টার অতিরিক্ত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে।
অবশ্য ওহাইও এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন এবং ওহাইও ফেডারেশন অব টিচার্স একটি যৌথ বিবৃতিতে দাবি করেছে, বিলটি তাড়াহুড়া করে প্রণয়ন করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিলটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলেও দাবি করেছে তারা।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলা ও এতে প্রাণহানির ঘটনা কিছুতেই থামছে না। গত বুধবার ওকলাহোমার তুলসায় একটি হাসপাতালে বন্দুকধারীর গুলিবর্ষণে চারজনের মৃত্যু হয়। নিহত হয় ওই বন্দুকধারী নিজেও।
স্থানীয় পুলিশ জানায়, হঠাৎ করেই তুলসা শহরের সেন্ট ফ্রান্সিস হাসপাতাল এক ব্যক্তি হামলা চালায়। ওই হামলার কারণ কী ছিল তা নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
এর মাত্র সপ্তাহখানেক আগেই টেক্সাসে একটি স্কুলে ভয়াবহ হামলায় নিহত হয় ১৯ শিশু শিক্ষার্থীসহ ২১ জন। রব এলিমেন্টারি স্কুলের ওই ঘটনায় কেঁপে ওঠে গোটা যুক্তরাষ্ট্র। এরপরই আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে জোর দাবি উঠতে থাকে দেশজুড়ে।
এছাড়া শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া অঙ্গরাজ্যের একটি গির্জার বাইরে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত হয়েছেন দুইজন। পরে বন্দুকধারী নিজেও নিহত হয়েছেন।