হাওর বার্তা ডেস্কঃ কৃষকদের আলু তোলা শেষ পর্যায়ে। জয়পুরহাটের আলু উন্নত মানের হওয়ায় এবার ৬টি দেশে রপ্তানী হচ্ছে। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার আলুর দাম ভাল পাওয়ায় খুশি কৃষকরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, জয়পুরহাটের আলু উন্নত মানের হওয়ায়
দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করার পাশাপাশি দেশের গন্ডি পেরিয়ে বর্তমানে ৬টি দেশে রপ্তানী করা হচ্ছে। দেশ গুলো হচ্ছে মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর, দুবাই, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড ও আরব আমিরাত। চলতি ২০২১-২২ মৌসুমে জেলায় ৪০ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে।
জেলায় এবার আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে ৪০ হাজার হেক্টর জমির আলু তোলার কাজ শেষ হয়েছে। যা শতকরা ৯৯ ভাগ বলে জানান কৃষি বিভাগ। আলু উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা হিসাবে পরিচিত উত্তরাঞ্চলের ছোট জেলা জয়পুরহাটে আলু চাষ সফল করতে বিএডিসিসহ স্থানিয় কৃষি বিভাগ নানা উদ্যোগ গ্রহন করে। জেলায় আলু চাষ সফল করতে কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষন সহ উপ- সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক মনিটরিং ও কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করেন। বিএডিসি’র পক্ষ থেকে কৃষকদের মাঝে উন্নত জাতের আলু বীজ সরবরাহ করা হয়।
অন্যান্য বছর আলু তোলার সময় দাম কিছুটা কমে ৬/৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়ায় কৃষকরা লোকসান গুনতে হতো। এবার দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত অনেক পাইকারী ক্রেতারা জমি থেকেই আলু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাজারে এবার ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত (৪০ কেজি) মণ আলু বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে আলু প্রকার ভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কেজি বিক্রি হওয়ায় কৃষকরা খুশি বলে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: শফিকুল ইসলাম।
আলু তোলার ভরা মৌসুমে বৃষ্টির কারনে কৃষকরা কিছুটা ক্ষতির মধ্যে পড়লেও ফলন বেশি হওয়া আবার দাম ভালো পাওয়ায় সেই ক্ষতি পুশিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে বলেও জানায় কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগ জানায়, জয়পুরহাটের আলু উন্নত মানের হওয়ায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করার পাশাপাশি দেশের গন্ডি পেরিয়ে ৬টি দেশে রপ্তানী করা হচ্ছে। দেশ গুলো হচ্ছে মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর, দুবাই, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড ও আরব আমিরাত। প্রাচীন বরেন্দ্র অঞ্চল হিসেবে পরিচিত জয়পুরহাট জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণ জমিতে আলুর চাষ হয়ে থাকে। গত বছর ৪০ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল।
এতে আলু উৎপাদন হয় ৯ লাখ ১৬ হাজার মে: টন। ফলন ভাল হওয়ায় জেলায় গ্যানোলা, মিউজিকা, ডায়মন্ড ও ফ্রেস জাতের সাদা আলু বেশী রপ্তানী হয়ে থাকে। এ ছাড়াও জেলায় অন্যান্য জাতের মধ্যে এস্টোরিকস, কার্ডিনাল, রোজেটা ও দেশি জাতের আলু বেশি চাষ করে থাকেন কৃষকরা। জেলার ১৫ টি কোল্ড ষ্টোরেজে প্রায় দেড় লাখ মে: টন আলু রাখা সম্ভব হয়। জেলার কালাই ও ক্ষেতলাল উপজেলা থেকে ৫ ও ১০ কেজি করে নেট ব্যাগে আলু রপ্তানী করা হচ্ছে বলে জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো: শফিকুল ইসলাম। ইতোমধ্যে ২ হাজার মেট্রিক টন রপ্তানী করা সম্ভব হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে।