হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। কেবল ফেব্রুয়ারিতেই খাদ্যপণ্যের দাম বিশেষ করে ভোজ্যতেল এবং দুগ্ধজাত পণ্যের দাম বেড়েছে ২৪ দশমিক ১ শতাংশ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) স্থানীয় সময় শুক্রবার (৪ মার্চ) এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতেই উঠে এসেছে খাদ্যপণ্যের দামের এমন চিত্র।
সংস্থাটির প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে যে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে খাদ্যপণ্যের মূল্যসূচক বেড়ে পৌঁছেছে ১৪০ দশমিক ৭ পয়েন্টে। জানুয়ারিতে যা কিছুটা কমে ১৩৫ দশমিক ৪ পয়েন্ট হয়েছিল, যদিও পরে সেটি সংশোধন করা হয়। এর আগে জানুয়ারিতে খাদ্যপণ্যের মূল্য সূচক দাঁড়িয়েছিল ১৩৫ দশমিক ৭ পয়েন্টে।
উচ্চ খাদ্যমূল্যের কারণে মুদ্রাস্ফীতিও বাড়ে। ফলে করোনা মহামারির মধ্যে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এতে আমদানি নির্ভর দেশগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।
সংস্থাটির অর্থনীতিবিদ উপালি গ্যালকেটি আরাচিলেজ বলেছেন যে শস্যের অবস্থা এবং রপ্তানি নিয়ে উদ্বেগের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পায়।
খাদ্য মূল্যস্ফীতির জন্য একটি বড় ধাক্কা হলো বাইরের খাদ্য উৎপাদন। বিশেষ করে জ্বালানি, সার ও গবাদি পশুর খাবারের মতো খাতে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমদানিতে মন্থর গতি তৈরি হয়। এসব কারণে উৎপাদনকারীদের লাভের পরিমাণ কমে যায়। তাদের বিনিয়োগ ও উৎপাদন সম্প্রসারণকে নিরুসাহিত করে খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্য।
এফএও-র প্রতিবেদন বলছে, আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে ভোজ্যতেলের দাম সাড়ে ৮ শতাংশ বেড়ে রেকর্ড মূল্যে পৌঁছেছে। পাম, সয়াবিন ও সূর্যমূখী তেলের দামও বেড়ে গেছে, যেখানে ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে চাহিদার ৮০ শতাংশ সূর্যমুখী তেল সরবরাহ হয় বিশ্বজুড়ে। এছাড়া, গত মাসে দানাদার শস্যের দাম বেড়েছে ৩ শতাংশ, যার মধ্যে ৫ দশমিক ১ শতাংশ ভুট্টা এবং ২ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ছে গমের দাম। আর দুগ্ধজাত পণ্যের দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।
জাতিসংঘের এই সহযোগী সংস্থাটি বিশ্ববাজারে সবচেয়ে বেশি বেচাবিক্রি হয় এমন খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ে গবেষণা চালিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে দানাদার খাদ্যশস্যের পাশাপাশি ভোজ্যতেল ও দুগ্ধজাত পণ্যসহ পাঁচ ধরনের পণ্য তালিকাভুক্ত করা হয়। প্রতি মাসে খাদ্যপণ্যের গড় দামের সূচক প্রকাশ, একই সঙ্গে বিশ্ববাজার, খাদ্যশস্য ও পণ্যের উৎপাদন সম্পর্কে পূর্বাভাসও দেয় এফএও।