ঢাকা ০৩:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে তীব্র বিতর্ক: ১২তম দিনে গড়ালো কপ২৯ সম্মেলন ঢাকাবাসীকে যেকোনো উপায়ে নিরাপদ রাখতে হবে : ডিএমপি কমিশনার বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস ৫ আগস্টের পর ভুয়া মামলা তদন্তসাপেক্ষে প্রত্যাহার হবে, জানালেন নতুন আইজিপি আলেম সমাজের সাথে ঐতিহাসিক সুসম্পর্ক রয়েছে বিএনপির: ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাছির জুয়ার অ্যাপের প্রচারে নাম লেখালেন বুবলীও জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত’- তোফায়েল আহমেদ আমরা যা করতে চাই, জনগণকে সাথে নিয়ে করতে চাই : তারেক রহমান বহু নেতার শাসন আমরা দেখেছি, পরিবর্তন দেখিনি : ফয়জুল করীম গ্যাসের জন্য আ.লীগ আমলে ২০ কোটি টাকা ঘুস দিয়েছি : বাণিজ্য উপদেষ্টা

ভাঙা তরি ছেঁড়া পাল’ খ্যাতিই কাল হলো তার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:৫৯:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২২
  • ২৪২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ তিনটি হত্যা ও একটি চুরির মামলার আসামি হেলাল হোসেন ওরফে সেলিম ফকির। ২০০১ সালের একটি হত্যা মামলায় ২০১৫ সালে তার যাবজ্জীবন সাজা হয়। এরপর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। পরিচয় গোপন করে বড় চুল আর দাড়ি রেখে ‘বাউল সেলিম’ নাম নেন। মডেল হন ‘ভাঙা তরি ছেঁড়া পাল’ শিরোনামের একটি গানে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ পরিচিতি পান। সেই খ্যাতিই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। ইউটিউবে তার ভিডিও দেখে চিনতে পেরে এক ব্যক্তি র‌্যাবকে জানান। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত চালিয়ে বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলস্টেশন থেকে ‘সিরিয়াল কিলার’ হেলাল হোসেন ওরফে সেলিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হেলাল বগুড়ার বিদ্যুৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আসামি। আগে চুরির একটি মামলায়ও তিনি সাজা খেটেছিলেন। বছরপাঁচেক আগে নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনে কিশোর পলাশ ওরফে ‘গামছা পলাশের’ একটি গানের শুটিংয়ের সময় রেললাইনের পাশে এক লোক বাউল গান গাচ্ছিলেন। তখন শুটিংয়ের এক লোক তাকে গানের মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। এরপর সেই ‘বাউলকে’ দেখা যায় ‘ভাঙা তরি ছেঁড়া পাল’ গানের ‘মডেল’ হিসেবে। গানটির সঙ্গে সঙ্গে বাউলবেশী ‘সেলিম ফকিরও’ পরিচিতি পান।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ছয় মাস আগে এক ব্যক্তি ইউটিউবে গানটি দেখে র‌্যাবকে জানান যে, ওই মডেল সম্ভবত বগুড়ার বিদ্যুৎ হত্যা মামলার আসামি। তার দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে হেলাল ওরফে সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০০১ সালে বগুড়ার বিদ্যুৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হেলাল ১৯৯৭ সালে বগুড়ার বিষ্ণু হত্যা মামলা এবং ২০০৬ সালে রবিউল হত্যা মামলারও আসামি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়ার পর এলাকায় মুদি দোকানদার দিয়েছিলেন। পরে বিভিন্ন রেলস্টেশনে বাউল গান গেয়ে মানুষের সাহায্য নিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি জড়িয়ে পড়েন অপরাধে।

র‌্যাব জানায়, ২০০০ সালে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বগুড়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময়  হেলালের বাম হাত মারাত্মক জখম হয়। পরে ওই হাত অকেজো হয়ে যায়। ওই ঘটনার পর তিনি ‘দুর্ধর্ষ হেলাল’ ও ‘হাত লুলা’ হেলাল হিসেবে পরিচিতি পান। ২০১০ সালে বগুড়া সদর থানার এক চুরির মামলায় ২০১৫ সালে তিনি গ্রেফতার হন এবং জেলখেটে ওই বছরই জামিনে বের হন। পরে বিদ্যুৎ হত্যা মামলার রায় হলেফের আত্মগোপনে চলে যান। প্রথমে তিনি বগুড়া থেকে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে আসেন। এরপর ট্রেনে করে চট্টগ্রামে গিয়ে আমানত শাহ মাজারে ছদ্মবেশ ধারণ করে বেশ কিছুদিন অবস্থান করেন। সেখান থেকে সিলেটের শাহজালাল মাজারে গিয়ে আরও কিছুদিন কাটান।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, সেলিম বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন রেলস্টেশন ও মাজারে ছদ্মবেশে অবস্থান করেন। কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলস্টেশনে নাম-ঠিকানা ও পরিচয় গোপন রেখে সেলিম ফকির নাম ধারণ করেন। প্রায় সাত বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ফেরারি জীবনযাপন করেন। চার বছর ভৈরব রেলস্টেশনের পাশে এক নারীর সঙ্গে সংসারও করেন। স্টেশনে বাউল গান শুনিয়ে মানুষের কাছ থেকে পাওয়া অর্থেই চলত তার সংসার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে তীব্র বিতর্ক: ১২তম দিনে গড়ালো কপ২৯ সম্মেলন

ভাঙা তরি ছেঁড়া পাল’ খ্যাতিই কাল হলো তার

আপডেট টাইম : ০৮:৫৯:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ তিনটি হত্যা ও একটি চুরির মামলার আসামি হেলাল হোসেন ওরফে সেলিম ফকির। ২০০১ সালের একটি হত্যা মামলায় ২০১৫ সালে তার যাবজ্জীবন সাজা হয়। এরপর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। পরিচয় গোপন করে বড় চুল আর দাড়ি রেখে ‘বাউল সেলিম’ নাম নেন। মডেল হন ‘ভাঙা তরি ছেঁড়া পাল’ শিরোনামের একটি গানে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বেশ পরিচিতি পান। সেই খ্যাতিই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। ইউটিউবে তার ভিডিও দেখে চিনতে পেরে এক ব্যক্তি র‌্যাবকে জানান। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত চালিয়ে বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলস্টেশন থেকে ‘সিরিয়াল কিলার’ হেলাল হোসেন ওরফে সেলিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হেলাল বগুড়ার বিদ্যুৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজার আসামি। আগে চুরির একটি মামলায়ও তিনি সাজা খেটেছিলেন। বছরপাঁচেক আগে নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশনে কিশোর পলাশ ওরফে ‘গামছা পলাশের’ একটি গানের শুটিংয়ের সময় রেললাইনের পাশে এক লোক বাউল গান গাচ্ছিলেন। তখন শুটিংয়ের এক লোক তাকে গানের মিউজিক ভিডিওতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। এরপর সেই ‘বাউলকে’ দেখা যায় ‘ভাঙা তরি ছেঁড়া পাল’ গানের ‘মডেল’ হিসেবে। গানটির সঙ্গে সঙ্গে বাউলবেশী ‘সেলিম ফকিরও’ পরিচিতি পান।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ছয় মাস আগে এক ব্যক্তি ইউটিউবে গানটি দেখে র‌্যাবকে জানান যে, ওই মডেল সম্ভবত বগুড়ার বিদ্যুৎ হত্যা মামলার আসামি। তার দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে হেলাল ওরফে সেলিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২০০১ সালে বগুড়ার বিদ্যুৎ হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হেলাল ১৯৯৭ সালে বগুড়ার বিষ্ণু হত্যা মামলা এবং ২০০৬ সালে রবিউল হত্যা মামলারও আসামি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়ার পর এলাকায় মুদি দোকানদার দিয়েছিলেন। পরে বিভিন্ন রেলস্টেশনে বাউল গান গেয়ে মানুষের সাহায্য নিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি জড়িয়ে পড়েন অপরাধে।

র‌্যাব জানায়, ২০০০ সালে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বগুড়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময়  হেলালের বাম হাত মারাত্মক জখম হয়। পরে ওই হাত অকেজো হয়ে যায়। ওই ঘটনার পর তিনি ‘দুর্ধর্ষ হেলাল’ ও ‘হাত লুলা’ হেলাল হিসেবে পরিচিতি পান। ২০১০ সালে বগুড়া সদর থানার এক চুরির মামলায় ২০১৫ সালে তিনি গ্রেফতার হন এবং জেলখেটে ওই বছরই জামিনে বের হন। পরে বিদ্যুৎ হত্যা মামলার রায় হলেফের আত্মগোপনে চলে যান। প্রথমে তিনি বগুড়া থেকে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে আসেন। এরপর ট্রেনে করে চট্টগ্রামে গিয়ে আমানত শাহ মাজারে ছদ্মবেশ ধারণ করে বেশ কিছুদিন অবস্থান করেন। সেখান থেকে সিলেটের শাহজালাল মাজারে গিয়ে আরও কিছুদিন কাটান।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, সেলিম বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন রেলস্টেশন ও মাজারে ছদ্মবেশে অবস্থান করেন। কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলস্টেশনে নাম-ঠিকানা ও পরিচয় গোপন রেখে সেলিম ফকির নাম ধারণ করেন। প্রায় সাত বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ফেরারি জীবনযাপন করেন। চার বছর ভৈরব রেলস্টেশনের পাশে এক নারীর সঙ্গে সংসারও করেন। স্টেশনে বাউল গান শুনিয়ে মানুষের কাছ থেকে পাওয়া অর্থেই চলত তার সংসার।