ঢাকা ০৪:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আল্লাহর বিশ্বাস যেভাবে ক্ষমা ও মুক্তির নিশ্চয়তা দেয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:২৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২২
  • ১৬২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি যে মহান আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান, তুমি যত দিন পর্যন্ত আমার কাছে দোয়া করতে থাকবে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে, আমি তত দিন তোমার গুনাহ মাফ করতে থাকব, তুমি যা-ই করে থাকো আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করব না। হে আদম সন্তান, তোমার গুনাহ যদি আকাশের উচ্চতা পর্যন্তও পৌঁছে যায়, অতঃপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, তবু আমি তোমাকে ক্ষমা করব, আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করব না। হে আদম সন্তান, তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে আসো এবং আমার সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক না করে থাকো, তাহলে আমিও সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে আসব। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৪০৩৫)

উল্লিখিত হাদিসে আল্লাহ এমন ব্যক্তিদের জন্য ক্ষমার ঘোষণা দিয়েছেন, যারা আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক করে না এবং আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি নিখাঁদ বিশ্বাস লালন করে।

শিরকমুক্ত জীবনের গুরুত্ব : শিরক পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুতর পাপ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই শিরক চরম জুলুম।’ (সুরা লোকমান, আয়াত : ১৩)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শরিক করার অপরাধ ক্ষমা করবেন না। আর এটা ছাড়া অন্যসব গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৪৭)।

সুতরাং মুমিনের জন্য ঈমান-ইবাদতসহ জীবনের সর্বত্র শিরক পরিহার করা আবশ্যক।

শিরকমুক্ত জীবনের পুরস্কার

কোরআন ও হাদিসে শিরকমুক্ত ঈমান ও ইবাদত তথা মুমিন জীবনের অসংখ্য পুরস্কার বর্ণিত হয়েছে। যার কয়েকটি হলো—

১. কষ্ট ও ভোগান্তি হতে মুক্তি : আল্লাহ তাঁর মুমিন বান্দাদের যাবতীয় বিপদ থেকে রক্ষা করেন। আল্লাহ বলেন, ‘তারা যখন নৌযানে আরোহণ করে তখন তারা বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন স্থলে ভিড়িয়ে তাদের উদ্ধার করেন, তখন তারা শিরকে লিপ্ত হয়।’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত : ৬৫)

২. জান্নাত লাভ : যারা শিরকমুক্ত জীবন নিয়ে আল্লাহর দরবারে হাজির হবে, আল্লাহ তাদের জান্নাত দান করবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করে যে সে তাঁর সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক করেনি, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৮০)

৩. নিরাপত্তা ও হিদায়াত লাভ : যারা ঈমান আনার পর শিরকে লিপ্ত হয় না, আল্লাহ তাদের চূড়ান্ত হিদায়াত দান করেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং তাদের ঈমানের সঙ্গে জুলুমের (শিরকের) সংমিশ্রণ ঘটায়নি তাদের জন্যই নিরাপত্তা এবং তারা সৎপথপ্রাপ্ত।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ৮২)

৪. আল্লাহর ক্ষমা লাভ : যারা আল্লাহর সঙ্গে শরিক করবে না, আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেবেন। হাদিসে কুদসিতে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আদম সন্তান, তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে আসো এবং আমার সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক না করে থাকো, তাহলে আমিও সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে আসব।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৪০৩৫)

৫. আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ : যারা ঈমান ও ইবাদতে আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না পরকালে আল্লাহ তাদের সাক্ষাৎ দান করবেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার আকাঙ্ক্ষা করে সে যেন নেক আমল করে এবং তার প্রতিপালকের ইবাদতে কাউকে শরিক না করে।’ (সুরা কাহফ, আয়াত : ১১০)।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আল্লাহর বিশ্বাস যেভাবে ক্ষমা ও মুক্তির নিশ্চয়তা দেয়

আপডেট টাইম : ১০:২৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি যে মহান আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান, তুমি যত দিন পর্যন্ত আমার কাছে দোয়া করতে থাকবে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে, আমি তত দিন তোমার গুনাহ মাফ করতে থাকব, তুমি যা-ই করে থাকো আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করব না। হে আদম সন্তান, তোমার গুনাহ যদি আকাশের উচ্চতা পর্যন্তও পৌঁছে যায়, অতঃপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, তবু আমি তোমাকে ক্ষমা করব, আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করব না। হে আদম সন্তান, তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে আসো এবং আমার সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক না করে থাকো, তাহলে আমিও সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে আসব। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৪০৩৫)

উল্লিখিত হাদিসে আল্লাহ এমন ব্যক্তিদের জন্য ক্ষমার ঘোষণা দিয়েছেন, যারা আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক করে না এবং আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি নিখাঁদ বিশ্বাস লালন করে।

শিরকমুক্ত জীবনের গুরুত্ব : শিরক পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুতর পাপ। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই শিরক চরম জুলুম।’ (সুরা লোকমান, আয়াত : ১৩)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শরিক করার অপরাধ ক্ষমা করবেন না। আর এটা ছাড়া অন্যসব গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৪৭)।

সুতরাং মুমিনের জন্য ঈমান-ইবাদতসহ জীবনের সর্বত্র শিরক পরিহার করা আবশ্যক।

শিরকমুক্ত জীবনের পুরস্কার

কোরআন ও হাদিসে শিরকমুক্ত ঈমান ও ইবাদত তথা মুমিন জীবনের অসংখ্য পুরস্কার বর্ণিত হয়েছে। যার কয়েকটি হলো—

১. কষ্ট ও ভোগান্তি হতে মুক্তি : আল্লাহ তাঁর মুমিন বান্দাদের যাবতীয় বিপদ থেকে রক্ষা করেন। আল্লাহ বলেন, ‘তারা যখন নৌযানে আরোহণ করে তখন তারা বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন স্থলে ভিড়িয়ে তাদের উদ্ধার করেন, তখন তারা শিরকে লিপ্ত হয়।’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত : ৬৫)

২. জান্নাত লাভ : যারা শিরকমুক্ত জীবন নিয়ে আল্লাহর দরবারে হাজির হবে, আল্লাহ তাদের জান্নাত দান করবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করে যে সে তাঁর সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক করেনি, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৮০)

৩. নিরাপত্তা ও হিদায়াত লাভ : যারা ঈমান আনার পর শিরকে লিপ্ত হয় না, আল্লাহ তাদের চূড়ান্ত হিদায়াত দান করেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং তাদের ঈমানের সঙ্গে জুলুমের (শিরকের) সংমিশ্রণ ঘটায়নি তাদের জন্যই নিরাপত্তা এবং তারা সৎপথপ্রাপ্ত।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ৮২)

৪. আল্লাহর ক্ষমা লাভ : যারা আল্লাহর সঙ্গে শরিক করবে না, আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেবেন। হাদিসে কুদসিতে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আদম সন্তান, তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার কাছে আসো এবং আমার সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক না করে থাকো, তাহলে আমিও সমপরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে আসব।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৪০৩৫)

৫. আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ : যারা ঈমান ও ইবাদতে আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করবে না পরকালে আল্লাহ তাদের সাক্ষাৎ দান করবেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার আকাঙ্ক্ষা করে সে যেন নেক আমল করে এবং তার প্রতিপালকের ইবাদতে কাউকে শরিক না করে।’ (সুরা কাহফ, আয়াত : ১১০)।