সুবর্ণ ছোঁয়ায় সমাপ্তি ঘটনাবহুল বছরের শেষ দিন

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাত পোহালেই নতুন বছর। নতুন আশা নিয়ে শুরু হবে আবার পথচলা। ফেলে আসা প্রতিটি বছরই থাকে ঘটনাবহুল, তারপরও কিছু কিছু ঘটনা তো নাড়া দিয়েই যায়। কেমন গেল ২০২১- এখন চলছে তারই ময়না তদন্ত।

২০২১ সালটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বছর। এটি শেখ হাসিনার সরকারের চতুর্থ মেয়াদের তৃতীয় বছরও। এ বছর দেশ স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করেছে। আবার এই বছরই কোভিডে সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখেছে জাতি। সব মিলিয়ে একটি ঘটনাবহুল বছরই বলা যায় ২০২১।

করোনাভাইরাস মহামারীর প্রথম ধাক্কা কিছুটা কাটিয়ে উঠেছে বাংলাদেশ, এমন অবস্থার মধ্যেই ২০২১ সালের শুরু। দেশে সংক্রমণের হারও তখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে।

এমন পরিস্থিতিতে ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলা হাসপাতালের একজন নার্সকে টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। যদিও প্রথমে চিকিৎসক, নার্সসহ শুধু সম্মুখযোদ্ধারাই টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন। তবুও বছর শুরুতে এটিই জাতির জন্য একটি বড় ঘটনা।

 

টিকা কর্মসূচি চলার মাঝেই আবারও বাড়তে থাকে করোনাভাইরাসে সংক্রমণের হার; বাড়তে থাকে মৃত্যুও। যদিও ২০২০ সালের চেয়ে এসময় সচেতনতা কমতে থাকে সাধারণ মানুষের মাঝে।

এই বছর ২৬ মার্চ সারাদেশ উদযাপন করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। দেশজুড়ে ছিল যার আয়োজন।

 

দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জাতীয় পতাকা প্রদর্শন করে বগুড়া জেলা স্কুল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন।

সূবর্ণজয়ন্তীর আনুষ্ঠানিকতায় আমন্ত্রিত হয়ে এ বছর বাংলাদেশে আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২৬ মার্চ মোদীর এই সফরকে ঘিরে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে হেফাজতকর্মীরা।

এপ্রিলেও করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিদিনই রেকর্ড ছাড়ায় মৃত্যু, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু তখনও গড়ে ১০০ জন।

এ সময় হঠাৎই বন্ধ করা হয় কোভিড টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া, পরিবর্তে যারা প্রথম ডোজ পেয়েছেন তাদের টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান কর্মসূচি।

কোভিডে মৃত্যুর শোকের মধ্যেই মে মাসে পালিত হয় মুসলিম ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর।

সংক্রমণ কমাতে এমন সময় দুই দফা লকডাউনের কবলে পড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু তবু কমেনি করোনায় মৃত্যু। এক পর্যায়ে আগস্টের শুরুতে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখে বাংলাদেশ। সে সময় দিনে গড়ে ২৫০ জনের মৃত্যু হয় এই ভাইরাসে। তবে আগস্টের শেষ থেকেই তা কমতে থাকে।
তবে ঠিক এসময়ই রাজধানীতে বাড়তে থাকে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা।

 

আগস্টের শেষে, রাজধানীতে মেট্রোরেলের পরীক্ষামূলক চলাচল উদ্বোধন করা হয়। সরকারের আশা, আসছে বছরের মাঝামাঝিতেই মেট্রোরেলে যাতায়াত করতে পারবেন রাজধানীবাসী।

 

অক্টোবরের শুরু থেকে দেশজুড়ে শুরু হয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি। কিন্তু দেশের বিভিন্ন স্থানে মণ্ডপে হামলার মধ্য দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টাও হয়; অপচেষ্টা চলে ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্টের। তবে তা শক্ত হাতে দমন করে সরকার।

 

বছরের শেষভাগে জাতির জন্য একটি বড় খবর হল, প্রায় ২০ মাস পর গেল নভেম্বরে কোভিডে মৃত্যুশূন্য দিন দেখে দেশবাসী। এই মাসেই শিক্ষার্থীদের কোভিড টিকার আওতায় আনার কার্যক্রম শুরু হয়।

বছরের শেষটা ছিল অনেকটাই উৎসবমুখর। ডেঙ্গু ও করোনার প্রকোপ কমেছে অনেকটা। এর মাঝেই বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করে জাতি।

 

১৬ ডিসেম্বর সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আমন্ত্রিত হয়ে পরিবারসহ বাংলাদেশ সফরে আসেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ।

তবে সুবর্ণজয়ন্তীর পুরো আয়োজনই বিতর্কের মুখে পড়ে, ‘মুজিববর্ষ’ বানান ভুল করায়। যদিও এজন্য পরে ক্ষমা প্রার্থনা করেন আয়োজকরা।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর