তোমার আছে সময়, আছে স্বপ্ন, আছে বাড়ি এবং ঘর। বাড়ির ভিতর ঘরের ভিতর থাকবে তুমি কতেক বছর? সময় কমে অষ্টপ্রহর : দিতে তারে রং-বেদনায় পাড়ি।
তোমার নয়াবাড়ি-পুরানবাড়ি-জঙ্গলবাড়ি…সকল-বাড়ির সকল-পথে সময় চলে ধীরিধীরি। আসলেই কি ধীরিধীরি?
আর, আজ উলটাপথে হাঁটতে ডাকেন তোমায় কোন মহারাজ? বৎস তোমার, বন্ধু তোমার, একটুখানি ধরুক তোমায়। সোজা হয়ে হাঁটবে তুমি পথের ওপর, মাটির ওপর। গোঁসাই থাকেন মনের ভিতর? ডানে-বাঁয়ে সামনে-পিছে অনেক খবর, অনেক খবর। কমছে আয়ু বছর-বছর, অষ্টপ্রহর। জাগতে পারো ঘুমের ভিতর? দাঁড় টেনেছ নদীর বুকে জলের ওপর ঠান্ডা-হাওয়ায় গরম-হাওয়ায়। ঢাকা কিংবা উদলা-সময় কত গেছে টালবাহানায়।
সবুজ-পাতা, হলুদ-পাতা, ঝরছে পাতা অহরহ। জানো তুমি, ঘুরেফিরে ধরা তোমার খেতেই হবে পুলিশবিহীন অচিনপুরে। ঘরের ভিতর, পথেঘাটে, রৌদ্র-হাওয়ায় আছো তুমি অন্ধকারে। অন্ধকারে, অন্ধকারে। থাকবে তুমি অন্ধকারে?
যখন তুমি বসে থাকো, রৌদ্রভারে আকাশ মিশে মাটির সঙ্গে। আকাশ হবে তোমার মতো, তেমন-কিছু চাও কি তুমি? চাইতে পারো, চাইতে পারো। জঙ্গলবাড়ি-নয়াবাড়ি-পুরানবাড়ি… দিবস জুড়ে রাত্রি জুড়ে সময় চলে ধীরিধীরি। মহামহিম সময়-কিছু অম্ল-মধুর মিঠে-তেতো। আনন্দ কিংবা বেদনা তুমি খুঁড়তে থাকো, খুঁড়তে থাকো। ধীরিধীরি যাচ্ছে সময় কান্না কিংবা হাসি-গানে। সময় আছে : ভাবছো তুমি আপন মনে।
এবং, পৃথিবীটা গোলাকার। দেখা হলো আবার। গভীর-কালো-রাত্রিমুখ থেকে ভোরের আলো। দেখা পেলাম তোমার। তুমি আমি মুখোমুখি। সময় তো নেই বসে থাকার। তুমি কিছু মসলা বাটো; আমি না-হয় কয়লা-কিছু কুড়িয়ে নিয়ে চুলার ভিতর আগুন জ্বালাই। রাজবিধানে রাঁধতে হবে খিচুড়ি। খাবো এবার, আমরা খাবো। রাঁধাবাড়াও শিল্প-কিছু। মানুষ রাঁধে কতকিছু। খিচুড়িটা রাঁধতে হবে এবার।
আমরা ঘুরি পথের ওপর ক্ষুধা-তৃষ্ণায়? নাকি জ্বালবো বলে পিদিম? স্বপ্ন বড়ো আদিম। বছর-বছর কত প্রহর আমরা ছিলাম, আমরা আছি একলা কিংবা ভিড়ের ভিতর বৃষ্টি এবং রোদ্দুরে। সময় যখন ফুরিয়ে যাবে, আমরা তখন করবোটা কী? কোন পথেই-বা হাঁটবো তবে? দেখবো কারে জিজ্ঞেস করে?
পথের গান
অ্যা, এত জল, এত পথ কিংবা এত চাতুরী অজানার! এইদিকে কোনো পথ রয়েছে কি আর? এত আলো-জল, এত পথ কোন পথে যাওয়ার? সময়ের তোড়ে কত পথই থেকে যায় অচেনা। আলো চলে যাওয়ার আগে বেলাভূমির দিকে ঈগলেরা চলে যায়। এইদিকে কোনো পথ আছে কি আর এই সময়ে? এই দিকে বাড়ি তো জানি খরগোশ-ছানার; আর এইদিকে বিপন্ন জলাভূমি-যেখানে অস্বচ্ছ-জলে ঠোকর খেয়ে হাওয়া তার চোখ তুলে আকাশের দিকে তাকায়। এইদিকে ঈগলেরা যায়। এত আলো, এত স্রোত, এত পথ কোন পথে হারায়? সময়ে চাতুরী থেকেও তাড়া বেশি ছুটে চলার। বন্ধু, কোন পথ তোমার? ঈগলেরাও সময় খুঁজে একান্তে বসে একটু ঝিমিয়ে নেয়ার।
আর, আমাকে দেখো,-ক্লেশ কত পথের ওপর ফেলে দিয়ে ঘুমিয়ে থাকি অজানা জলের তলায়। সময় বেয়ে কত জল বয়ে যায়। পথে পথে কত চেনা-জানা-জল ঝরে আর উড়ে যায় কত। কিছুই তো থাকে না বেশিদিন,-ক্লেশ/বেদনা কিংবা রঙিন-দিন।