ডিসেম্বরের মধ্যে ৫-৬ কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হবে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, করোনা টিকা নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। সংসদে সমালোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে গতকাল স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে আমার কথা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আমরা প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনবো। এই সময়ের মধ্যে ১৬ কোটির মধ্যে ৫ থেকে ৬ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) মিলনায়তনে কলকারখানা, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনারোধ এবং নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে গঠিত সমন্বিত পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ টিমের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. এহছানে এলাহীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সালমান এফ রহমান বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাংলাদেশে তুলনামূলক কম। দেশে ২৭ হাজারের মতো মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে আমাদের থেকে সাতগুণ বেশি মানুষ মারা গেছে। সে হিসেবে সেখানে ২ লাখ লোক মারা যাওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে সাড়ে ৫ লাখেরও বেশি মানুষ মারা গেছে। আমাদের তুলনায় আমেরিকায় জনগণ দ্বিগুণ। আমাদের তুলনায় সেখানে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মানুষ মারা যাওয়া উচিৎ। কিন্তু সেখানে মারা গেছে সাড়ে ৫ লাখের বেশি। তিনি বলেন, আমরা সবসময়ই বলছি আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কাজ করেনি, স্বাস্থ্য অধিদফতর কাজ করেনি। তাহলে এটা কারা করলো, কেমনে করলো? আপনারা দেখেন টিকা আমরা বেসরকারি খাতে দেইনি। শতভাগ সরকারিভাবে টিকাকরণ করা হয়েছে। অন্যান্য দেশে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিখাতের মাধ্যমেও টিকাকরণ করা হয়েছে।

কলকারখানা প্রসঙ্গে সালমান এফ রহমান বলেন, মাননীয় মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে প্রথমেই জিজ্ঞেস করা হয়, কারখানা পরিদর্শন সংস্থা ডাইফি কী করেছে? ডাইফি তো ইন্সপেকশন করেছে বা করেনি সেটি জানানো হয়েছে। কিন্তু ফায়ারের দায়িত্ব আমার না, অনুমোদন দেওয়ার দায়িত্ব আমার না, পরিবেশ দেখার দায়িত্ব আমার না। আমার দায়িত্ব শুধু ইন্সপেকশন করা। এখানেই একটি বড় কন্ট্রাডিকশন রয়ে গেছে। এই জন্যই প্রধানমন্ত্রী জাতীয় কমিটি করেছেন। কমিটির সদস্যদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনাদের কাজ শুধু তথ্য সংগ্রহ করা। আপনাদের কাছ থেকে তথ্য পেলে সমন্বয় করে কিভাবে তা সমাধান করা যায় সেটা নিয়ে কাজ করবো। আমি কনফিডেন্ট যে, এই সমস্যা সমাধান করা যাবে। গার্মেন্টসে আমরা সফলতার সাথে সমাধান করতে পেরেছি। এখানেও আমরা পারবো। তিনি আরও বলেন, আমাকে রাজউক বলছে আমরা তো স্ট্রাকচারাল পারমিশন দেই না। আমরা শুধু প্ল্যান পাস করি। বিল্ডিং পড়ে যাচ্ছে.. রাজউক বলছে সেটা তো আমি দেখবো না। সেজন্য আমি বলছি যে, জাতীয় কমিটির মাধ্যমে আমরা এইসব বিষয় দেখবো। আমাদের সঠিক তথ্যটা দরকার। সমন্বিত কাজের মাধ্যমে এই সমস্যা আমরা সমাধান করতে পারবো।

মো. এহছানে এলাহী বলেন, আমরা সকলেই কাজ করছি কিন্তু সমন্বয়হীনতার কারণে আমরা আমাদের কাঙ্খিত সাফল্য পাচ্ছি না, তাই দেশের স্বার্থে আমাদের সমন্বিত ভাবে কাছ করতে হবে। আমাদের কাজে মাধ্যমে কেউ যেন বিরক্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে, কলকারখানার মালিকদের বুঝাতে হবে আমরা ফ্যাক্টরি বন্ধ করতে আসি নাই আমরা ফ্যাক্টরিগুলোর বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষন করতে এসেছি, এবং উন্নয়ন করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।

শিল্পকারখানার সুরক্ষায় পিপিপি’র মাধ্যমে সুরক্ষা সেল গঠনের তাগিদ দিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, কোন ভবনের নকশা অনুমোদনের সঙ্গে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান জড়িত থাকে। কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটলে শুধু মালিক পক্ষকে দায়ী করা হয়। দুর্ঘটনা তদন্তে বিভিন্ন কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু আস্তে আস্তে কমিটিগুলোর কার্যক্রম দেখা যায়না। তাই সমস্যারও সমাধান হয়না।

শিল্পকারখানায় দুর্ঘটনা এড়াতে প্লাস্টিক, রাসায়নিক ও হালকা প্রকৌশল শিল্পের স্থানান্তর প্রয়োজন। এজন্য সহজ শর্তে জায়গা বরাদ্দের আহ্বান জানান মো. জসিম উদ্দিন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিডার নির্বাহী সদস্য জনবা অভিজিৎ চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবং কমিটির সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. খলিলুর রহমান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মহাপরিদর্শক নাছির উদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় সংশ্লিষ্ট দফতরসমূহের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট-ইলেট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সংবাদপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর