আজ ভার্চুয়ালি অফিস চালু হচ্ছে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঈদুল আজহার ছুটি শেষ। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়সহ সরকারি অফিস আদালত খুলছে আজ রোববার। তবে এবার প্রতিবছরের মতো বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সচিবরা এবং সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী কোলাকুলি করতে পারছেন না। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অফিস করতে পারবেন বলে জানা গেছে।

করোনা বিধিনিষেধের সময়ে দেশের সকল সরকারি অফিসের দাফতরিক কাজসমূহ ই-নথি, ই-টেন্ডারিং, ই-মেইল, এসএমএস, হোয়াটস অ্যাপের মতো মাধ্যমসহ ভার্চুয়ালিসম্পন্ন করতে নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

ঈদের আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সরকারি অফিসের দাফতরিক কাজ ভার্চুয়ালি করার নির্দেশনা দিয়ে সব সিনিয়র সচিব/সচিবদের চিঠি দিয়েছে। এছাড়া গত ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীরা যাতে তাদের কর্মস্থলে থাকেন, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে এতে বলা হয়, করোনাভাইরাসজনিত রোগের সংক্রমণ বিস্তার রোধে আরোপিত বিধিনিষেধে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দেশের বর্তমান এ পরিস্থিতিতে ব্যতিক্রম হিসেবে সকল জরুরি অফিস ও সেবা কার্যক্রম চালু রয়েছে। এসব সরকারি অফিসের দাফতরিক কাজ ভার্চুয়ালি (ই-নথি, ই-টেন্ডারিং, ই-মেইল, এসএমএস, হোয়াটস অ্যাপসহ নানা মাধ্যম) সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয় চিঠিতে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে হয়ে যাওয়া গত তিনটি ঈদেও একই ধরনের নির্দেশনা ছিল। কিন্তু অনেক কর্মচারী এই নির্দেশনা মানেননি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আগেরবারের বিষয়গুলো আমলে নিয়ে এবার ভিন্ন কৌশল নিয়েছে। সচিবদের পাঠানো চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, বিধিনিষেধ আরোপকালীন অধীন বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সকল দফতরের সরকারি কর্মচারীকে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকা এবং তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাভাবে পালন করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হলো।

গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত ফের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। ঈদের পর কঠোর বিধিনিষেধ চলাকালে ২৩ ধরনের নির্দেশনা মানতে হবে। এগুলো হলোÑ সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) ও সবধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। শপিংমল/মার্কেটসহ সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে, সব পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে। সবধরনের শিল্প-কলকারখানা বন্ধ থাকবে, জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান (ওয়ালিমা), জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি) রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট আদালতগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করাসহ ২৩ নির্দেশনা এরই মধ্যে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ডেল্টা ধরনের বিস্তারে দেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশে গত ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের জন্য সরকার সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। দেওয়া হয় ২১টি নির্দেশনা। এই সময়ে জরুরি সেবা ছাড়া অন্যসব অফিস-আদালত বন্ধ, যান্ত্রিক যানবাহনে যাত্রী বহনও নিষিদ্ধ। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির পাশাপাশি ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠে ছিল সশস্ত্র বাহিনী। জনসাধারণকে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যেতে নিষেধ করা ছিল। রাস্তায় বেরিয়ে যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে না পারলে করা হয়েছে গ্রেফতার-জরিমানা। এই বিধিনিষেধের পরও পরিস্থিতির দৃশ্যমান কোনো উন্নতি হয়নি, বরং আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় নতুন রেকর্ড হয়েছে এর মধ্যে। এ সময় চলমান বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর পক্ষে সুপারিশ করে কোভিড সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ একপত্রের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, এ সময়ে পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্রে গমন ও জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান (যেমন : বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পিকনিক এবং রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান) পরিহার করতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর