হাওর বার্তা ডেস্কঃ নিরাপদ সন্তান প্রসব নারীর অধিকার। গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য ও নিরাপদ প্রসব নিশ্চিত করার প্রধান ও প্রমাণিত উপায় হলো প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব সেবা প্রদান ও গ্রহণ। এর মাধ্যমে গর্ভবতী মায়ের প্রসবকালীন জটিলতা ও মৃত্যুর হার কমানো যায়। সম্প্রতি সরকার জাতীয় মাতৃস্বাস্থ্য কৌশলপত্র ২০১৯-২০৩০ প্রণয়ন করেছে। দেশে ২০১০ সালে মাতৃ মৃত্যুহার ছিল প্রতি লাখ জীবিত জন্মে ১৯৪ (BMMS 2010), ২০১৯ সালে যা কমে ১৬৫-এ নেমে এসেছে (MICS 2019)। তারপরও এ হার অনেক বেশি। ২০৩০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা ৭০ বা তার নিচে নামিয়ে আনতে হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে এই লক্ষ্যমাত্রা কৌশলপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবহার শতকরা ৫৪ ভাগ থেকে ৮৫ ভাগ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রশিক্ষিত দক্ষ ধাত্রীর মাধ্যমে প্রসবহার শতকরা ৫৯ ভাগ থেকে বাড়িয়ে ৯০ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে (MHS 2019-2030) এবং এ লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো একসঙ্গে কাজ করছে।
এখনো বাংলাদেশে মাতৃ মৃত্যুহার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত হারের তুলনায় অনেক বেশি (১৬৫/লাখ জীবিত জন্ম); অথচ মাতৃমৃত্যুর উচ্চহার উপযুক্ত গর্ভকালীন সেবা, নিরাপদ প্রসব ও প্রসবোত্তর সেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে কমিয়ে আনা সম্ভব। একজন সুস্থ মা-ই, একটি সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে পারেন। মায়ের সুস্থতার জন্য প্রয়োজন গর্ভকালীন, প্রসবকালীন ও প্রসব পরবর্তী যত্ন। পরিবার ও জনগণের সচেতনতা এবং মানসম্মত স্বাস্থ্যকেন্দ্রই একজন গর্ভবতী মায়ের সেবা নিশ্চিত করতে পারে। এজন্য গর্ভবতী মাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। মাতৃ মৃত্যুহার কমানো কেবল সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন বেসরকারি এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, জনসচেতনতা ও সামাজিক আন্দোলন। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় সরকার, বেসরকারি সংস্থা ও গণমাধ্যম সবারই ভূমিকা রয়েছে।
সারওয়ার জাহান : সংবাদকর্মী