ঢাকা ০৫:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভাঙন শঙ্কায় তীরবর্তী মানুষ উত্তরে নদ-নদীতে বাড়ছে পানি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুন ২০২১
  • ১৯৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ টানা খরার পর এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে বর্ষণ। শুধু বগুড়া নয় পুরো উত্তরাঞ্চল এবং উজানের ভারতীয় এলাকাতেও এই সময়ে টানা বর্ষণের কারণে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। কোথাও কোথাও ভাঙছে নদীর তীর। ভাঙন আতঙ্কে নদী তীরবর্তী মানুষ উদ্বিগ্ন হলেও চিন্তাহীন ভাবে সময় পার করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
সপ্তাহ জুড়ে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, গাইবান্ধার সাঘাটা, ফুলছড়ি, বালাসীঘাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিনই ফুলে ফেঁপে উঠছে যমুনা। বালাসী ঘাটের পেশাদার নৌকার মাঝি শাহীন মিয়া বলেন, যমুনার যৌবন ফির‌্যা আইসাছে বাহে, স্রোতের টানে উজানে নৌকা ঠেলাই এখন কঠিন।
বিরুপ আবহাওয়ার কারণে ভারি বৃষ্টির সাথে ঝড়ো বাতাস সেই সাথে বজ্রপাত মূর্তিমান আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নৌকার যাত্রী, মাঝি এবং চরে বসবাসকারি মানুষদের জন্য। গত ২ মাসে বেশ কয়েকটি ছোট নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে। বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে নৌকা নিয়ে মাছ ধরার সময় বিপদ রায় মাঝি নামের একজন মাঝনদীতে বজ্রপাতে মারা গেছেন।
পানি শুধু যমুনায় নয় ভারত থেকে বয়ে আসা তিস্তা, ধরলা, করতোয়া ব্রহ্মপুত্র ও এর শাখা নদী গুলোতেও পানি বাড়ছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। ঘূর্ণিঝড় ’ইয়াস’ কেন্দ্রীক নিম্নচাপসহ বেশ কয়েকটি লঘুচাপের প্রভাবে হিমালয় সন্নিহিত অঞ্চলে খরা মৌসুমেও বৃষ্টি হয়েছে প্রচুর। এছাড়া তীব্র গরমে হিমালয়ের হিমবাহে বরফ গলা পানি প্রবাহেই মূলত বাড়ছে নদ-নদীর পানি। ফুলছড়ি, সাঘাটা, সারিয়াকান্দি, ধুনট ও কাজিপুরে ভাঙছে নদীর পাড়। ফলে আতঙ্কে আছে নদী তীরবর্তী লাখ লাখ মানুষ।
বগুড়া আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া মামুন জানান, গত এপ্রিলে ৪ দফায় যে বৃষ্টিপাত হয়েছে তার পরিমাণ ২৪ মিলিমিটার এটা স্বাভাবিক। তবে মে মাসে ১৪ দফায় যে ২৭৫ মি.মি. এবং জুনের প্রথম ৭ দিনে ১৫০ মি.মি. বৃষ্টিপাতের বিষয়টি অনেকটা আষাঢ় শ্রাবণের ভরা বর্ষার মত।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, সামনে আরও কিছু নিম্নচাপের কারণে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে সম্ভাব্য বন্যার জন্য এখন থেকেই পূর্ব প্রস্তুতির চিন্তা ভাবনা জরুরি হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা গেছে চরম অনীহার ভাব। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, বন্যা নিয়ে এখন ভাবার সময় আসেনি। টুকটাক বৃষ্টি হলে নদীর পানি একটু বাড়বেই এতে আতঙ্কের কিছু নেই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ভাঙন শঙ্কায় তীরবর্তী মানুষ উত্তরে নদ-নদীতে বাড়ছে পানি

আপডেট টাইম : ১০:৫২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুন ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ টানা খরার পর এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে বর্ষণ। শুধু বগুড়া নয় পুরো উত্তরাঞ্চল এবং উজানের ভারতীয় এলাকাতেও এই সময়ে টানা বর্ষণের কারণে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। কোথাও কোথাও ভাঙছে নদীর তীর। ভাঙন আতঙ্কে নদী তীরবর্তী মানুষ উদ্বিগ্ন হলেও চিন্তাহীন ভাবে সময় পার করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
সপ্তাহ জুড়ে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, গাইবান্ধার সাঘাটা, ফুলছড়ি, বালাসীঘাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিনই ফুলে ফেঁপে উঠছে যমুনা। বালাসী ঘাটের পেশাদার নৌকার মাঝি শাহীন মিয়া বলেন, যমুনার যৌবন ফির‌্যা আইসাছে বাহে, স্রোতের টানে উজানে নৌকা ঠেলাই এখন কঠিন।
বিরুপ আবহাওয়ার কারণে ভারি বৃষ্টির সাথে ঝড়ো বাতাস সেই সাথে বজ্রপাত মূর্তিমান আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নৌকার যাত্রী, মাঝি এবং চরে বসবাসকারি মানুষদের জন্য। গত ২ মাসে বেশ কয়েকটি ছোট নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে। বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে নৌকা নিয়ে মাছ ধরার সময় বিপদ রায় মাঝি নামের একজন মাঝনদীতে বজ্রপাতে মারা গেছেন।
পানি শুধু যমুনায় নয় ভারত থেকে বয়ে আসা তিস্তা, ধরলা, করতোয়া ব্রহ্মপুত্র ও এর শাখা নদী গুলোতেও পানি বাড়ছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। ঘূর্ণিঝড় ’ইয়াস’ কেন্দ্রীক নিম্নচাপসহ বেশ কয়েকটি লঘুচাপের প্রভাবে হিমালয় সন্নিহিত অঞ্চলে খরা মৌসুমেও বৃষ্টি হয়েছে প্রচুর। এছাড়া তীব্র গরমে হিমালয়ের হিমবাহে বরফ গলা পানি প্রবাহেই মূলত বাড়ছে নদ-নদীর পানি। ফুলছড়ি, সাঘাটা, সারিয়াকান্দি, ধুনট ও কাজিপুরে ভাঙছে নদীর পাড়। ফলে আতঙ্কে আছে নদী তীরবর্তী লাখ লাখ মানুষ।
বগুড়া আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া মামুন জানান, গত এপ্রিলে ৪ দফায় যে বৃষ্টিপাত হয়েছে তার পরিমাণ ২৪ মিলিমিটার এটা স্বাভাবিক। তবে মে মাসে ১৪ দফায় যে ২৭৫ মি.মি. এবং জুনের প্রথম ৭ দিনে ১৫০ মি.মি. বৃষ্টিপাতের বিষয়টি অনেকটা আষাঢ় শ্রাবণের ভরা বর্ষার মত।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, সামনে আরও কিছু নিম্নচাপের কারণে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে সম্ভাব্য বন্যার জন্য এখন থেকেই পূর্ব প্রস্তুতির চিন্তা ভাবনা জরুরি হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের মধ্যে লক্ষ্য করা গেছে চরম অনীহার ভাব। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, বন্যা নিয়ে এখন ভাবার সময় আসেনি। টুকটাক বৃষ্টি হলে নদীর পানি একটু বাড়বেই এতে আতঙ্কের কিছু নেই।