হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত ১৭ এপ্রিল ৭০ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের ‘মিষ্টি মেয়ে’ খ্যাত অভিনেত্রী ও সংসদ সদস্য সারাহ বেগম কবরী। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। নষ্ট হয়ে গিয়েছিল দুটি ফুসফুসই। অভিনেত্রীর মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে গোটা অভিনয় জগত। শোক জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদও।
কিন্তু প্রিয় সহশিল্পীর প্রয়ানে দু’কথা মন খুলে বলতে পারেননি ‘মিয়াভাই’ খ্যাত অভিনেতা ও সাংসদ আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। কারণ, তিনি নিজেই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের আইসিইউতে। গত সপ্তাহ পর্যন্ত তাকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছিল। তিনি এখনো জানেন না, কবরী মারা গেছেন।
কিন্তু এখন কেমন আছেন কবরীর ‘সারেং বউ’, ‘সুজন সখী’সহ হাফ ডজনের বেশি ছবির নায়ক ফারুক। এই অভিনেতার স্ত্রী ফারহানা পাঠান জানান, বর্তমানে ফারুকের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। যদিও সুস্থতার মাত্রা খুবই ধীর। শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে কতটা উন্নতি হয়েছে সেটা বলা যাবে এক সপ্তাহ পর।
ফারহানা আরো জানান, ফারুকের সুস্থতার ব্যাপারে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাদেরকে আশার বাণী শুনিয়েছেন। তিনি বলেন, বাকিটা আল্লাহর হাতে। স্বামীর সুস্থতার জন্য ফারহানা দেশবাসীর কাছে দোয়াও চেয়েছেন।
গত বছরের অক্টোবরের শেষের দিকে সিঙ্গাপুর থেকে নিয়মিত চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরেন ফারুক। তারপর থেকে তিনি সুস্থ ছিলেন। চিকিৎসকরা সে সময় জানিয়েছিলেন, কিছু শারীরিক জটিলতা থাকায় এই অভিনেতার অসুস্থতা হঠাৎ হঠাৎই বেড়ে যেতে পারে। সে জন্য প্রতি তিন মাস পরপর রুটিন চেকআপ করাতে হয় তাকে।
তারই অংশ হিসেবে গত ৪ মার্চ সিঙ্গাপুরে যান ফারুক। চেকআপের পর তার ইনফেকশন ধরা পড়লে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৫ মার্চ খিঁচুনি উঠায় ফারুককে আইসিইউতে নেয়া হয়। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে ১৮ মার্চ কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু ২১ মার্চ হঠাৎ জ্ঞান হারালে আবারও তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। রাখা হয় লাইফ সাপোর্টে।
গত বছর লকডাউনের মধ্যেও সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন অভিনেতা ফারুক। সেবার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার যক্ষ্মা ধরা পড়ে। এরপর দেড় মাস চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়ে তিনি দেশে ফেরেন। এর কিছুদিন না যেতে অক্টোবরের মাঝামাঝিতে ফারুক করোনায় আক্রান্ত হন। যক্ষ্মার মতো তিনি করোনাকেও জয় করেন।
চলতি বছরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ইতোমধ্যে এক ডজনেরও বেশি বিনোদন ব্যক্তিত্ব না ফেরার দেশে চলে গেছেন। গত ১৭ এপ্রিল মারা যান ফারুকের ‘সারেং বউ’ ছবির নায়িকা কবরী। পরদিনই চলে যান সোনালি দিনের আরেক তারকা ওয়াসিম। একে একে এভাবে প্রবীণ তারকাদের মৃত্যুতে ফারুককে নিয়ে শঙ্কায় পরিবার। তাদের আশা, সুস্থ হয়ে ফিরবেন অভিনেতা।