ঢাকা ০৩:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগামী মৌসুমে আরো বাড়বে ইলিশের উৎপাদন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৫৯:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২০
  • ১৬১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে শতকরা ৫১ দশমিক ২ ভাগ মা-ইলিশ সম্পূর্ণভাবে ডিম দিয়েছে। যা অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ মৎস্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) কর্তৃক পরিচালিত গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, চলতি বছর প্রজনন মৌসুমে গত ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরা নিষিদ্ধকালীন সময়ে মা-ইলিশ কর্তৃক ছাড়া মোট নিষিদ্ধ ডিমের পরিমাণ ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৬৫ কেজি। এর শতকরা ৫০ ভাগ হ্যাচিং ধরে এবং তার শতকরা ১০ ভাগ বাঁচার হার ধরে এ বছর প্রায় ৩৮ হাজার কোটি জাটকা ইলিশ পরিবারে যুক্ত হয়েছে। যা গতবারের চেয়ে ১ হাজার কোটি বেশি। আর গত বছর ইলিশের প্রজনন সফলতা ছিল ৪৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। বিএফআরআই বলেছে, যেহেতু এ বছর ইলিশের প্রজনন সফলতা রেকর্ড গড়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই আগামী মৌসুমে ইলিশের উৎপাদন আরো বাড়বে বলে আশা করছি।

বিএফআরআইর এই গবেষণায় দেখা যায়, প্রজনন মৌসুমের ২২ দিন সব প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকায় প্রজননাঞ্চলে স্ত্রী ইলিশের শতকরা হার ৮৮ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত বেড়েছে। ইলিশ প্রজননাঞ্চলে প্রথম সপ্তাহে স্পেন্ট ইলিশের হার গড়ে ৮ শতাংশ থাকলেও শেষ সপ্তাহসহ সামগ্রিক হিসাব মিলিয়ে এ বছর স্পেন্ট ইলিশের হার গড়ে প্রায় ৫১.২ শতাংশ পাওয়া যায়। তবে সম্পূর্ণ ডিম ছেড়ে দেওয়া এবং ডিম ছাড়ারত ইলিশের হিসাব শুধু প্রজননাঞ্চলে একত্রে বিবেচনা করলে সামগ্রিকভাবে এ বছর ইলিশ প্রজনন সফলতা ৮৩.৪ শতাংশ।

গবেষণায় তথ্য মতে, অন্যান্য বারের মতো এবারও ইলিশ সবচেয়ে বেশি ডিম ছেড়েছে পটুয়াখালী উপকূল এলাকায়। সেখানে ডিম ছাড়ার হার গড়ে ৭৫ শতাংশ। এরপরই রয়েছে ভোলার মনপুরায় ৬১ শতাংশ, কক্সবাজারে ৫০ শতাংশ ও চাঁদপুরে ৪১ শতাংশ। জরিপকালে ৩২ শতাংশ ইলিশ প্রজনন সক্ষম ছিল।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রজনন মৌসুমে ‘মা-ইলিশ’ রক্ষায় সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। ইলিশ ধরা নিষিদ্ধকালীন সময়ে ২২ দিন দেশের আট বিভাগে ২ হাজার ৬৪০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ১৯ হাজার ৮১৮টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে ২৪৩ কোটি ৩৬ লাখ ৪ হাজার টাকা মূল্যের ১২ কোটি ৯১ লাখ ৪৪ হাজার ৬০০ মিটার দৈর্ঘ্যের কারেন্ট জালসহ ২ হাজার ৬৮৫টি অন্য অবৈধ জাল জব্দ করা হয়।

মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে দেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টন। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩ লাখ ৮৭ হাজার টন ইলিশ উত্পাদন হলেও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সেটা বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ৩৩ হাজার টন।

এ প্রসঙ্গে বিএফআরআইর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, চলতি মৌসুমে একটি নিম্নচাপ ছিল যা ইলিশের প্রজনন সফলতায় প্রভাব ফেলেছে। তিনি বলেন, এবার উৎপাদিত ৩৮ হাজার কোটি জাটকা যথাযথ সুরক্ষা দিতে পারলে আগামী বছর ইলিশের উৎপাদন আরো বাড়বে বলে আশা করছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকায় ইলিশের পাশাপাশি দেশে পাঙ্গাস, পোয়া, বোয়াল, আইড়, বাঘাইড় ও রিটা মাছের উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

আগামী মৌসুমে আরো বাড়বে ইলিশের উৎপাদন

আপডেট টাইম : ০৯:৫৯:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি বছর ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে শতকরা ৫১ দশমিক ২ ভাগ মা-ইলিশ সম্পূর্ণভাবে ডিম দিয়েছে। যা অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ মৎস্যা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) কর্তৃক পরিচালিত গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, চলতি বছর প্রজনন মৌসুমে গত ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরা নিষিদ্ধকালীন সময়ে মা-ইলিশ কর্তৃক ছাড়া মোট নিষিদ্ধ ডিমের পরিমাণ ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৬৫ কেজি। এর শতকরা ৫০ ভাগ হ্যাচিং ধরে এবং তার শতকরা ১০ ভাগ বাঁচার হার ধরে এ বছর প্রায় ৩৮ হাজার কোটি জাটকা ইলিশ পরিবারে যুক্ত হয়েছে। যা গতবারের চেয়ে ১ হাজার কোটি বেশি। আর গত বছর ইলিশের প্রজনন সফলতা ছিল ৪৮ দশমিক ৯২ শতাংশ। বিএফআরআই বলেছে, যেহেতু এ বছর ইলিশের প্রজনন সফলতা রেকর্ড গড়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই আগামী মৌসুমে ইলিশের উৎপাদন আরো বাড়বে বলে আশা করছি।

বিএফআরআইর এই গবেষণায় দেখা যায়, প্রজনন মৌসুমের ২২ দিন সব প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকায় প্রজননাঞ্চলে স্ত্রী ইলিশের শতকরা হার ৮৮ থেকে ১০০ ভাগ পর্যন্ত বেড়েছে। ইলিশ প্রজননাঞ্চলে প্রথম সপ্তাহে স্পেন্ট ইলিশের হার গড়ে ৮ শতাংশ থাকলেও শেষ সপ্তাহসহ সামগ্রিক হিসাব মিলিয়ে এ বছর স্পেন্ট ইলিশের হার গড়ে প্রায় ৫১.২ শতাংশ পাওয়া যায়। তবে সম্পূর্ণ ডিম ছেড়ে দেওয়া এবং ডিম ছাড়ারত ইলিশের হিসাব শুধু প্রজননাঞ্চলে একত্রে বিবেচনা করলে সামগ্রিকভাবে এ বছর ইলিশ প্রজনন সফলতা ৮৩.৪ শতাংশ।

গবেষণায় তথ্য মতে, অন্যান্য বারের মতো এবারও ইলিশ সবচেয়ে বেশি ডিম ছেড়েছে পটুয়াখালী উপকূল এলাকায়। সেখানে ডিম ছাড়ার হার গড়ে ৭৫ শতাংশ। এরপরই রয়েছে ভোলার মনপুরায় ৬১ শতাংশ, কক্সবাজারে ৫০ শতাংশ ও চাঁদপুরে ৪১ শতাংশ। জরিপকালে ৩২ শতাংশ ইলিশ প্রজনন সক্ষম ছিল।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রজনন মৌসুমে ‘মা-ইলিশ’ রক্ষায় সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। ইলিশ ধরা নিষিদ্ধকালীন সময়ে ২২ দিন দেশের আট বিভাগে ২ হাজার ৬৪০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ১৯ হাজার ৮১৮টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে ২৪৩ কোটি ৩৬ লাখ ৪ হাজার টাকা মূল্যের ১২ কোটি ৯১ লাখ ৪৪ হাজার ৬০০ মিটার দৈর্ঘ্যের কারেন্ট জালসহ ২ হাজার ৬৮৫টি অন্য অবৈধ জাল জব্দ করা হয়।

মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে দেশে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় দেড় লাখ টন। গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩ লাখ ৮৭ হাজার টন ইলিশ উত্পাদন হলেও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সেটা বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ৩৩ হাজার টন।

এ প্রসঙ্গে বিএফআরআইর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, চলতি মৌসুমে একটি নিম্নচাপ ছিল যা ইলিশের প্রজনন সফলতায় প্রভাব ফেলেছে। তিনি বলেন, এবার উৎপাদিত ৩৮ হাজার কোটি জাটকা যথাযথ সুরক্ষা দিতে পারলে আগামী বছর ইলিশের উৎপাদন আরো বাড়বে বলে আশা করছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকায় ইলিশের পাশাপাশি দেশে পাঙ্গাস, পোয়া, বোয়াল, আইড়, বাঘাইড় ও রিটা মাছের উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে।