ঢাকা ০৩:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৮০ শতাংশ বিবাহিত পুরুষ স্ত্রীর ‘নির্যাতনের শিকার’

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩৪:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ নভেম্বর ২০২০
  • ১৭১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ মেন’স রাইটস ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারি সংগঠন জানিয়েছে দেশের বিবাহিত পুরুষদের ৮০ শতাংশ ‘মানসিক’ নির্যাতনের শিকার। অনেকেই এসব বিষয় প্রকাশ করতে চান না সামাজিক লজ্জার ভয়ে। নিজেদের পরিচালিত এক গবেষণার ভিত্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে তারা।

সংগঠনটি জানায়, সামাজিক লজ্জার ভয়ে পরিচয় প্রকাশ করেন না অভিযোগকারীরা। বিবাহিত অনেক পুরুষের নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিষয়ে একমত মানবাধিকার কর্মীরাও। তারা বলছেন, পুরুষদের নির্যাতিত হওয়ার খবর তাদের কাছে আসে। তবে যেই নির্যাতিত হোক তার আইনি সুরক্ষার দাবি জানান তারা।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কিছু বেসরকারি সংস্থা আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস পালন করছে। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ মেন’স রাইটস ফাউন্ডেশন প্রতি বছর ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশে পুরুষ দিবস পালন করছে। এ বছরেও এমন আয়োজন করা হবে বলে জানায় সংগঠনটি।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান শেখ খাইরুল আলম জানান, ‘নির্যাতিত পুরুষদের’ পরামর্শ ও আইনি লড়াইয়ে সহযোগিতা দিতে এই সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে প্রতিদিন যে ফোন আসছে তাতে আমরা দেখেছি, নীরবে চোখের জল ফেলছেন অনেক পুরুষ। লজ্জায় তারা নির্যাতনের কথা বলতে পারছেন না। কোনও নারী নির্যাতিত হলে তিনি তো বিচার চাইতে পারেন। অনেক সংগঠন তার পাশে দাঁড়ায়। নির্যাতিত পুরুষদের সহযোগিতার জন্য আমরা এ সংগঠনটি করেছি।”

নিজেও এমন নির্যাতনের শিকার দাবি করে আলম বলেন, ‘‘নির্যাতনের শিকার হয়ে আমি অনেক মানবাধিকার সংগঠনের কাছে গেছি। তারা কেউই নির্যাতিত পুরুষদের পাশে দাঁড়াতে রাজি হয়নি। অনেকটা বাধ্য হয়েই আমরা এই সংগঠন করেছি। এখন আমরা নির্যাতনের শিকার পুরুষকে আইনি লড়াইয়ে সহযোগিতা করছি। তাদের পরামর্শ দিচ্ছি। জাতীয় সংসদে পুরুষ নির্যাতনবিরোধী আইন করার জন্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছি। এই আইনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে প্রচারণাও চালাচ্ছি।’’

সংগঠনটির গবেষণার বিষয়ে জানতে চাইলে আলম বলেন, ‘‘আমাদের কাছে প্রতিদিন যে অভিযোগ আসে তার ভিত্তিতেই আমরা গবেষণাটি করেছি। তবে সমস্যা হলো, কেউই লিখিত অভিযোগ করতে চান না। ফলে আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনও দলিলাদি নেই।’’

সংগঠনটির দাবি বিদেশ থেকে ফোন করেও অনেকে তাদের কাছে নির্যাতনের অভিযোগ করছে।

এদিকে পুরুষ নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটে কিনা জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইম্যান অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সানজীদা আখতার বলেন, ‘‘আমাদের সমাজে পুরুষ একই সঙ্গে কিন্তু নির্যাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ। কোনও কোনও ক্ষেত্রে শ্রেণিভেদে তারা নির্যাতিত হলেও হতে পারে।’’

তিনি বলেন, ‘‘গত বছর আমাদের এখানে ছোট পরিসরে পুরুষ দিবস উদযাপিত হয়েছে। পুরুষ নির্যাতন নিয়ে আমরা এখনো কোনও গবেষণা বা পরিসংখ্যান পাইনি। পুরুষরা যত বেশি পুরুষ হিসেবে নির্যাতিত হয়ে থাকেন তার চেয়ে অনেক বেশি শ্রেণি, অবস্থান ও আর্থসামাজিক দুর্বল অবস্থানের কারণে নির্যাতিত হন। একই কারণে নারীও নির্যাতিত হন। আমি মনে করি সব নির্যাতনেরই আইনি সুরক্ষা থাকা প্রয়োজন।’’

তার মতে, পুরুষ দিবসকে তাৎপর্যপূর্ণ করতে চাইলে সমাজে পুরুষকে যেভাবে তৈরি করা হয় সেই জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে হবে।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

৮০ শতাংশ বিবাহিত পুরুষ স্ত্রীর ‘নির্যাতনের শিকার’

আপডেট টাইম : ১২:৩৪:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ নভেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ মেন’স রাইটস ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারি সংগঠন জানিয়েছে দেশের বিবাহিত পুরুষদের ৮০ শতাংশ ‘মানসিক’ নির্যাতনের শিকার। অনেকেই এসব বিষয় প্রকাশ করতে চান না সামাজিক লজ্জার ভয়ে। নিজেদের পরিচালিত এক গবেষণার ভিত্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে তারা।

সংগঠনটি জানায়, সামাজিক লজ্জার ভয়ে পরিচয় প্রকাশ করেন না অভিযোগকারীরা। বিবাহিত অনেক পুরুষের নির্যাতনের শিকার হওয়ার বিষয়ে একমত মানবাধিকার কর্মীরাও। তারা বলছেন, পুরুষদের নির্যাতিত হওয়ার খবর তাদের কাছে আসে। তবে যেই নির্যাতিত হোক তার আইনি সুরক্ষার দাবি জানান তারা।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কিছু বেসরকারি সংস্থা আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস পালন করছে। ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ মেন’স রাইটস ফাউন্ডেশন প্রতি বছর ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশে পুরুষ দিবস পালন করছে। এ বছরেও এমন আয়োজন করা হবে বলে জানায় সংগঠনটি।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান শেখ খাইরুল আলম জানান, ‘নির্যাতিত পুরুষদের’ পরামর্শ ও আইনি লড়াইয়ে সহযোগিতা দিতে এই সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে প্রতিদিন যে ফোন আসছে তাতে আমরা দেখেছি, নীরবে চোখের জল ফেলছেন অনেক পুরুষ। লজ্জায় তারা নির্যাতনের কথা বলতে পারছেন না। কোনও নারী নির্যাতিত হলে তিনি তো বিচার চাইতে পারেন। অনেক সংগঠন তার পাশে দাঁড়ায়। নির্যাতিত পুরুষদের সহযোগিতার জন্য আমরা এ সংগঠনটি করেছি।”

নিজেও এমন নির্যাতনের শিকার দাবি করে আলম বলেন, ‘‘নির্যাতনের শিকার হয়ে আমি অনেক মানবাধিকার সংগঠনের কাছে গেছি। তারা কেউই নির্যাতিত পুরুষদের পাশে দাঁড়াতে রাজি হয়নি। অনেকটা বাধ্য হয়েই আমরা এই সংগঠন করেছি। এখন আমরা নির্যাতনের শিকার পুরুষকে আইনি লড়াইয়ে সহযোগিতা করছি। তাদের পরামর্শ দিচ্ছি। জাতীয় সংসদে পুরুষ নির্যাতনবিরোধী আইন করার জন্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছি। এই আইনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে প্রচারণাও চালাচ্ছি।’’

সংগঠনটির গবেষণার বিষয়ে জানতে চাইলে আলম বলেন, ‘‘আমাদের কাছে প্রতিদিন যে অভিযোগ আসে তার ভিত্তিতেই আমরা গবেষণাটি করেছি। তবে সমস্যা হলো, কেউই লিখিত অভিযোগ করতে চান না। ফলে আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোনও দলিলাদি নেই।’’

সংগঠনটির দাবি বিদেশ থেকে ফোন করেও অনেকে তাদের কাছে নির্যাতনের অভিযোগ করছে।

এদিকে পুরুষ নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটে কিনা জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইম্যান অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সানজীদা আখতার বলেন, ‘‘আমাদের সমাজে পুরুষ একই সঙ্গে কিন্তু নির্যাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ। কোনও কোনও ক্ষেত্রে শ্রেণিভেদে তারা নির্যাতিত হলেও হতে পারে।’’

তিনি বলেন, ‘‘গত বছর আমাদের এখানে ছোট পরিসরে পুরুষ দিবস উদযাপিত হয়েছে। পুরুষ নির্যাতন নিয়ে আমরা এখনো কোনও গবেষণা বা পরিসংখ্যান পাইনি। পুরুষরা যত বেশি পুরুষ হিসেবে নির্যাতিত হয়ে থাকেন তার চেয়ে অনেক বেশি শ্রেণি, অবস্থান ও আর্থসামাজিক দুর্বল অবস্থানের কারণে নির্যাতিত হন। একই কারণে নারীও নির্যাতিত হন। আমি মনে করি সব নির্যাতনেরই আইনি সুরক্ষা থাকা প্রয়োজন।’’

তার মতে, পুরুষ দিবসকে তাৎপর্যপূর্ণ করতে চাইলে সমাজে পুরুষকে যেভাবে তৈরি করা হয় সেই জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে হবে।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে।