ঢাকা ১২:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাঁটুব্যথা প্রতিরোধের উপায়গুলো জেনে নিন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৪ বার

মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অস্থিসন্ধি হলো হাঁটু। এটি শুধু শরীরের ওজনই বহন করে না, স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে, সোজা হয়ে দাঁড়াতে, দৌড়াতে, এমনকি আমাদের বসতেও সাহায্য করে। নাবালক থেকে বৃদ্ধ, সব বয়সেব যে কারও হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। তাই এ রোগ অবহেলাযোগ্য নয়।

হাঁটুব্যথার কারণ : বয়সজনিত যেসব কারণে হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ হলো হাঁটুর হাড়, তরুণাস্থিসহ বিভিন্ন গাঠনিক পরিবর্তন। বাতব্যথার কারণে হাঁটুব্যথা হতে পারে।  আঘাতজনিত কারণেও হাঁটুব্যথা হতে পারে। হাঁটুর পেশি ও লিগামেন্টে হঠাৎ করে টান বা চাপ খেলে বা লিগামেন্ট ছিড়ে গেলে অথবা আঘাতপ্রাপ্ত হলে এই সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। জীবাণুর সংক্রমণজনিত কারণে হাঁটুব্যথা হতে পারে। ক্রিস্টাল বা স্ফটিকজাতীয় পদার্থের অস্বাভাবিক উপস্থিতি এবং তার প্রভাবে দেখা দিতে পারে হাঁটুতে ব্যথা। কোমরের সমস্যাজনিত ব্যথা হাঁটুতে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়লে তাতে বেড়ে যেতে পারে হাঁটুব্যথা। সঠিক দেহভঙ্গির অভাবে হাঁটুর ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে। এ কারণে হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। টিউবারকিউলোসিস, হিমোফিলিয়া, ক্যানসার ইত্যাদি।

উপসর্গ : হাঁটুব্যথা, হাঁটু ফুলে থাকা, ভাঁজ করতে কষ্ট হওয়া, বসা থেকে দাঁড়ানো ও দাঁড়ানো থেকে বসতে কষ্ট হওয়া, হাঁটু পুরোপুরি সোজা করতে অক্ষম এ রোগের গুরুতর উপসর্গ।

সমাধানের উপায় : হাঁটুব্যথার জন্য সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার প্রয়োজন হয়ে থাকে। এজন্য ক্লিনিকাল পরীক্ষার পাশাপাশি ল্যাবরেটরি বা প্যাথলোজিক্যাল পরীক্ষার প্রয়োজন। চিকিৎসকের পরামর্শমতো ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে রিহ্যাবিলিটেশন বা পুনর্বাসন চিকিৎসা খুব কার্যকর। ফিজিক্যাল এজেন্টের ব্যবহার এবং সুনির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম করলে অনেকাংশ ক্ষেত্রেই রোগী ভালো থাকতে পারেন। আবার কিছু ক্ষেত্রে ইন্টারভেনশনাল চিকিৎসাও দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে, এমনকি মারাত্মক কিছু ক্ষেত্রে হাঁটু রিপ্লেসমেন্টেরও প্রয়োজন হতে পারে। প্রয়োজনে চলাফেরায় হাঁটুতে বাহ্যিক চিকিৎসাসেবা হিসেবে হাঁটুবন্ধনী বা স্পিøন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।

হাঁটুব্যথা প্রতিরোধের উপায় : চলাফেরার সময় যথাসম্ভব সমতল রাস্তা ব্যবহার করুন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করবেন না। করতে হলে একটি টুলে এক পা রেখে করুন। কিছুক্ষণ বিশ্রাম দিন। মাঝেমধ্যে হাঁটাচলা করুন। বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে উপর-নিচে ওঠানামার সময় লিফট ব্যবহার করুন। অন্যথায় সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় ভালো পা (ব্যথাবিহীন হাঁটু), নামার সময় অন্য পা আগে ব্যবহার করুন। একনাগাড়ে দীর্ঘ উচ্চতার সিঁড়ি ব্যবহারের সময় মাঝে বিরতি দিয়ে উঠুন। তবে অযথা সিঁড়ি ব্যবহার করবেন না। উঁচু হিলের জুতা পরিহার করুন। সতর্কতার সঙ্গে হাঁটাচলা করুন। প্রয়োজনে ওয়াকিং এইড ব্যবহার করুন। ভারী কাজে সতর্কতা অবলম্বন করুন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য সূর্যের আলোয় থাকুন। ক্যালসিয়াম, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-ই, কোলাজেন ও বিভিন্ন খনিজ লবণসমৃদ্ধ খাবার খাবেন। ডায়াবেটিস থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। উঁচু কমোড বা পায়খানা ব্যবহার করবেন। তবে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তাতে ভালো থাকবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

হাঁটুব্যথা প্রতিরোধের উপায়গুলো জেনে নিন

আপডেট টাইম : ১১:৩৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫

মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অস্থিসন্ধি হলো হাঁটু। এটি শুধু শরীরের ওজনই বহন করে না, স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে, সোজা হয়ে দাঁড়াতে, দৌড়াতে, এমনকি আমাদের বসতেও সাহায্য করে। নাবালক থেকে বৃদ্ধ, সব বয়সেব যে কারও হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। তাই এ রোগ অবহেলাযোগ্য নয়।

হাঁটুব্যথার কারণ : বয়সজনিত যেসব কারণে হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ হলো হাঁটুর হাড়, তরুণাস্থিসহ বিভিন্ন গাঠনিক পরিবর্তন। বাতব্যথার কারণে হাঁটুব্যথা হতে পারে।  আঘাতজনিত কারণেও হাঁটুব্যথা হতে পারে। হাঁটুর পেশি ও লিগামেন্টে হঠাৎ করে টান বা চাপ খেলে বা লিগামেন্ট ছিড়ে গেলে অথবা আঘাতপ্রাপ্ত হলে এই সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। জীবাণুর সংক্রমণজনিত কারণে হাঁটুব্যথা হতে পারে। ক্রিস্টাল বা স্ফটিকজাতীয় পদার্থের অস্বাভাবিক উপস্থিতি এবং তার প্রভাবে দেখা দিতে পারে হাঁটুতে ব্যথা। কোমরের সমস্যাজনিত ব্যথা হাঁটুতে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়লে তাতে বেড়ে যেতে পারে হাঁটুব্যথা। সঠিক দেহভঙ্গির অভাবে হাঁটুর ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে। এ কারণে হাঁটুতে ব্যথা হতে পারে। টিউবারকিউলোসিস, হিমোফিলিয়া, ক্যানসার ইত্যাদি।

উপসর্গ : হাঁটুব্যথা, হাঁটু ফুলে থাকা, ভাঁজ করতে কষ্ট হওয়া, বসা থেকে দাঁড়ানো ও দাঁড়ানো থেকে বসতে কষ্ট হওয়া, হাঁটু পুরোপুরি সোজা করতে অক্ষম এ রোগের গুরুতর উপসর্গ।

সমাধানের উপায় : হাঁটুব্যথার জন্য সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার প্রয়োজন হয়ে থাকে। এজন্য ক্লিনিকাল পরীক্ষার পাশাপাশি ল্যাবরেটরি বা প্যাথলোজিক্যাল পরীক্ষার প্রয়োজন। চিকিৎসকের পরামর্শমতো ব্যথানাশক ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে রিহ্যাবিলিটেশন বা পুনর্বাসন চিকিৎসা খুব কার্যকর। ফিজিক্যাল এজেন্টের ব্যবহার এবং সুনির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম করলে অনেকাংশ ক্ষেত্রেই রোগী ভালো থাকতে পারেন। আবার কিছু ক্ষেত্রে ইন্টারভেনশনাল চিকিৎসাও দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে, এমনকি মারাত্মক কিছু ক্ষেত্রে হাঁটু রিপ্লেসমেন্টেরও প্রয়োজন হতে পারে। প্রয়োজনে চলাফেরায় হাঁটুতে বাহ্যিক চিকিৎসাসেবা হিসেবে হাঁটুবন্ধনী বা স্পিøন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।

হাঁটুব্যথা প্রতিরোধের উপায় : চলাফেরার সময় যথাসম্ভব সমতল রাস্তা ব্যবহার করুন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করবেন না। করতে হলে একটি টুলে এক পা রেখে করুন। কিছুক্ষণ বিশ্রাম দিন। মাঝেমধ্যে হাঁটাচলা করুন। বহুতল ভবনের ক্ষেত্রে উপর-নিচে ওঠানামার সময় লিফট ব্যবহার করুন। অন্যথায় সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় ভালো পা (ব্যথাবিহীন হাঁটু), নামার সময় অন্য পা আগে ব্যবহার করুন। একনাগাড়ে দীর্ঘ উচ্চতার সিঁড়ি ব্যবহারের সময় মাঝে বিরতি দিয়ে উঠুন। তবে অযথা সিঁড়ি ব্যবহার করবেন না। উঁচু হিলের জুতা পরিহার করুন। সতর্কতার সঙ্গে হাঁটাচলা করুন। প্রয়োজনে ওয়াকিং এইড ব্যবহার করুন। ভারী কাজে সতর্কতা অবলম্বন করুন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য সূর্যের আলোয় থাকুন। ক্যালসিয়াম, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-ই, কোলাজেন ও বিভিন্ন খনিজ লবণসমৃদ্ধ খাবার খাবেন। ডায়াবেটিস থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। উঁচু কমোড বা পায়খানা ব্যবহার করবেন। তবে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তাতে ভালো থাকবেন।