ঢাকা ০৭:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ২৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

শীতকালে অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকবেন যেভাবে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:০৮:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৩ বার

অ্যালার্জি হলো কোনো জিনিসের (অ্যান্টিজেন) প্রতি শরীরের রোগ- প্রতিরোধ ব্যবস্থার বাড়তি প্রতিক্রিয়া। যখন অ্যান্টিজেন শরীরে প্রবেশ করে, শরীর ভুল করে এটিকে অতিবিপজ্জনক বলে ভেবে নেয়। যার অ্যালার্জি আছে তার শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভুলক্রমে নিরীহ বস্তু, যেমনÑ ফুলের রেণু, প্রাণীর ত্বকের বা পালকের ঝরে যাওয়া ক্ষুদ্র অংশ, ডিম, দুধ ইত্যাদি বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করে। এই আপাতদুষ্ট বস্তুগুলোর নামই অ্যালার্জেন।

যেমন প্রতিক্রিয়া হয় শরীরে : অ্যালার্জেন প্রথমবার শরীরে প্রবেশ করলে দেহের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা এটিকে বিপজ্জনক চিহ্নিত করে এর জন্য প্রতিরোধক তৈরি করে, যার নাম আইজিই। এটি পরবর্তীকালে অ্যালার্জেন শনাক্ত করতে দেহকে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলে। এটিকে বলা হয় সংবেদনশীলতা। পরবর্তীকালে যখন ওই সংবেদনশীল ব্যক্তি অ্যালার্জেনের মুখোমুখি হয়, আইজিই অ্যান্টিবডি মাস্ট সেল থেকে মুহূর্তের মধ্যেই হিস্টামিন ও অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য রক্তে অবমুক্ত করে। তখন অ্যালার্জির লক্ষণ প্রকাশ পায়। লক্ষণ অল্প অল্প করেও প্রকাশ পেতে পারে, আবার সারা শরীরে প্রকাশ পেতে পারে।

অবমুক্ত রাসায়নিক দ্রব্যগুলো মূলত রক্তনালি, শ্লেষ্মা-ঝিল্লি ও শ্বাসনালি আক্রমণ করে বসে।

রোগের লক্ষণ : এ রোগের লক্ষণ হচ্ছে সাধারণত টিস্যু ফুলে যাওয়া ও প্রদাহ দেখা দেওয়া। অ্যালার্জি হলে স্থানীয়ভাবে প্রদাহ, চুলকানি, ত্বকে প্রদাহ থেকে অ্যানাফাইলেক্সিস হতে পারে। অ্যানাফাইলেক্রিসের লক্ষণ হলোÑ শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ, ঠোঁট, মুখ ফুলে যাওয়া, বমি, ডায়রিয়া ও নিম্ন রক্তচাপ। অনেক ধরনের অ্যালার্জেন হাঁপানি রোগীর লক্ষণ প্রকাশেও ভূমিকা পালন করে থাকে।

সচরাচর যেসব অ্যালার্জেন দেখা যায় : ঘরের ভেতর অ্যালার্জেন, যেমন- ধুলা, পোষা প্রাণীর ত্বক বা পালকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ; ঘরের বাইরের অ্যালার্জেন, যেমন ফুলের রেণু, গাছপালা, রোদ, ঠাণ্ডা আবহাওয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া খাদ্যদ্রব্য, অন্য ত্বক ও কেশচর্চা প্রাণী বা কীটপতঙ্গের হুলের প্রতি অ্যালার্জি হতে পারে। প্রসাধনসামগ্রী বা অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য এবং ওষুধের (ব্যবস্থাপত্রসহ কিংবা ছাড়া) প্রতিও অ্যালার্জি হতে পারে।

চিকিৎসা : অ্যালার্জি চিকিৎসায় অ্যান্টিহিস্টামিন, ডিকনজেসটেন্ট, মাস্ট সেল স্ট্যাবিলাইজার, কর্টিকোস্টেরয়েড, এনএসএআইডি, ব্রংকোডাইলেটর প্রভৃতি ওষুধ ব্যবহৃত হয়। এছাড়া অ্যালার্জি শট পদ্ধতিতে বেশ কয়েকটি ইনজেকশনের মাধ্যমে রোগীকে ডিসেনসিটাই করা হয়। এ ব্যবস্থা নিতে কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। কিন্তু এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। এছাড়া খাদ্যদ্রব্যের প্রতি অ্যালার্জি হলে এতে কাজ হয় না।

প্রতিরোধই উত্তম : অ্যালার্জিমুক্ত থাকতে হলে সবচেয়ে ভালো ব্যবস্থা হলো পরিচিত সব অ্যালার্জেন, যেমন- ফুলের রেণু, ধুলাবালি, পোষা পাখি বা প্রাণীর ত্বক বা পালক ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। তবেই এই শীতে অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকা সম্ভব।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে একসাথে সাকিব-তামিম

শীতকালে অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকবেন যেভাবে

আপডেট টাইম : ০৬:০৮:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৫

অ্যালার্জি হলো কোনো জিনিসের (অ্যান্টিজেন) প্রতি শরীরের রোগ- প্রতিরোধ ব্যবস্থার বাড়তি প্রতিক্রিয়া। যখন অ্যান্টিজেন শরীরে প্রবেশ করে, শরীর ভুল করে এটিকে অতিবিপজ্জনক বলে ভেবে নেয়। যার অ্যালার্জি আছে তার শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভুলক্রমে নিরীহ বস্তু, যেমনÑ ফুলের রেণু, প্রাণীর ত্বকের বা পালকের ঝরে যাওয়া ক্ষুদ্র অংশ, ডিম, দুধ ইত্যাদি বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করে। এই আপাতদুষ্ট বস্তুগুলোর নামই অ্যালার্জেন।

যেমন প্রতিক্রিয়া হয় শরীরে : অ্যালার্জেন প্রথমবার শরীরে প্রবেশ করলে দেহের রোগ-প্রতিরোধ ব্যবস্থা এটিকে বিপজ্জনক চিহ্নিত করে এর জন্য প্রতিরোধক তৈরি করে, যার নাম আইজিই। এটি পরবর্তীকালে অ্যালার্জেন শনাক্ত করতে দেহকে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলে। এটিকে বলা হয় সংবেদনশীলতা। পরবর্তীকালে যখন ওই সংবেদনশীল ব্যক্তি অ্যালার্জেনের মুখোমুখি হয়, আইজিই অ্যান্টিবডি মাস্ট সেল থেকে মুহূর্তের মধ্যেই হিস্টামিন ও অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য রক্তে অবমুক্ত করে। তখন অ্যালার্জির লক্ষণ প্রকাশ পায়। লক্ষণ অল্প অল্প করেও প্রকাশ পেতে পারে, আবার সারা শরীরে প্রকাশ পেতে পারে।

অবমুক্ত রাসায়নিক দ্রব্যগুলো মূলত রক্তনালি, শ্লেষ্মা-ঝিল্লি ও শ্বাসনালি আক্রমণ করে বসে।

রোগের লক্ষণ : এ রোগের লক্ষণ হচ্ছে সাধারণত টিস্যু ফুলে যাওয়া ও প্রদাহ দেখা দেওয়া। অ্যালার্জি হলে স্থানীয়ভাবে প্রদাহ, চুলকানি, ত্বকে প্রদাহ থেকে অ্যানাফাইলেক্সিস হতে পারে। অ্যানাফাইলেক্রিসের লক্ষণ হলোÑ শ্বাসকষ্ট, বুকে চাপ, ঠোঁট, মুখ ফুলে যাওয়া, বমি, ডায়রিয়া ও নিম্ন রক্তচাপ। অনেক ধরনের অ্যালার্জেন হাঁপানি রোগীর লক্ষণ প্রকাশেও ভূমিকা পালন করে থাকে।

সচরাচর যেসব অ্যালার্জেন দেখা যায় : ঘরের ভেতর অ্যালার্জেন, যেমন- ধুলা, পোষা প্রাণীর ত্বক বা পালকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ; ঘরের বাইরের অ্যালার্জেন, যেমন ফুলের রেণু, গাছপালা, রোদ, ঠাণ্ডা আবহাওয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া খাদ্যদ্রব্য, অন্য ত্বক ও কেশচর্চা প্রাণী বা কীটপতঙ্গের হুলের প্রতি অ্যালার্জি হতে পারে। প্রসাধনসামগ্রী বা অন্যান্য রাসায়নিক দ্রব্য এবং ওষুধের (ব্যবস্থাপত্রসহ কিংবা ছাড়া) প্রতিও অ্যালার্জি হতে পারে।

চিকিৎসা : অ্যালার্জি চিকিৎসায় অ্যান্টিহিস্টামিন, ডিকনজেসটেন্ট, মাস্ট সেল স্ট্যাবিলাইজার, কর্টিকোস্টেরয়েড, এনএসএআইডি, ব্রংকোডাইলেটর প্রভৃতি ওষুধ ব্যবহৃত হয়। এছাড়া অ্যালার্জি শট পদ্ধতিতে বেশ কয়েকটি ইনজেকশনের মাধ্যমে রোগীকে ডিসেনসিটাই করা হয়। এ ব্যবস্থা নিতে কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। কিন্তু এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। এছাড়া খাদ্যদ্রব্যের প্রতি অ্যালার্জি হলে এতে কাজ হয় না।

প্রতিরোধই উত্তম : অ্যালার্জিমুক্ত থাকতে হলে সবচেয়ে ভালো ব্যবস্থা হলো পরিচিত সব অ্যালার্জেন, যেমন- ফুলের রেণু, ধুলাবালি, পোষা পাখি বা প্রাণীর ত্বক বা পালক ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। তবেই এই শীতে অ্যালার্জি থেকে দূরে থাকা সম্ভব।