ঢাকা ০৬:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনার মতোই’ ছড়াতে পারে এইচএমপিভি, ভারতে সতর্কতা জারি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫৫:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৩ বার

উত্তর চীনের বিভিন্ন অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) হিসেবে চিহ্নিত একটি ভাইরাস। খবর পাওয়া গেছে-চীনের প্রতিবেশী কয়েকটি দেশেও ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে বলে জানা যায়। সংক্রমণ ও উপসর্গের দিক থেকে কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাসের সঙ্গে ‘মিল’ থাকায় এইচএমপিভিও করোনার মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের।

ভারতের বেঙ্গালুরুর পর কলকাতায়ও এইচএমপিভি সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে দেশটিতে এইচএমপিভি আক্রান্তের সংখ্যা সাতজনে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম। সংক্রমণ বাড়ায় মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকসহ বেশ কিছু রাজ্যে সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির হাসপাতালগুলোকে রোগীর চাপ সামলাতে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়স্ক ও শিশুরা এই ভাইরাসের সংক্রমণের মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। ২০২০ সালের করোনা মহামারির পর এইচএমপিভি নতুন সংকট তৈরি করতে পারে। ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠান্ডা জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে, যা গুরুতর অবস্থায় নিউমোনিয়া পর্যন্ত গড়াতে পারে।

চীনের স্বাস্থ্য বিভাগ ভাইরাসটির সংক্রমণের হার বৃদ্ধি নিয়ে আগে থেকেই সতর্কবার্তা জারি করলেও, এইচএমপিভির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তারা এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক পদক্ষেপ না নিলে শীতকালীন সময়ে এই ভাইরাসটি আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এদিকে, মালয়েশিয়ায় এইচএমপিভি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় আগেই দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে জনসাধারণকে মাস্ক পরতে এবং বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। এবার জনগণকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ দেশ’ ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতার নির্দেশ দিয়েছে তারা। হংকংয়েও এইচএমপিভি সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।

ভারতে এইচএমপিভি প্রথম শনাক্ত হয় বেঙ্গালুরুতে। আক্রান্তদের মধ্যে তিন মাস বয়সী এক শিশু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও, আট মাস বয়সী অপর এক শিশু এখনও চিকিৎসাধীন। সম্প্রতি কলকাতায়ও এক শিশুর দেহে শনাক্ত করা হয় এই ভাইরাস।

দেশটির সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সোমবারই কয়েক দফা নির্দেশনা জারি করে কর্ণাটক সরকার। এতে হাঁচি বা কাশির সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখা, মাস্ক পরা, একই রুমাল বার বার ব্যবহার না করা, সাবান ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, অসুস্থ ব্যক্তির থেকে দূরে থাকাসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্র ও গুজরাটও সতর্কতা জারি করেছে।

এছাড়া, দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ‘সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সংকট’ রোধে কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, এরইমধ্যে দিল্লি সরকার রাজধানীর সব হাসপাতালকে বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

করোনার মতোই’ ছড়াতে পারে এইচএমপিভি, ভারতে সতর্কতা জারি

আপডেট টাইম : ০৬:৫৫:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫

উত্তর চীনের বিভিন্ন অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) হিসেবে চিহ্নিত একটি ভাইরাস। খবর পাওয়া গেছে-চীনের প্রতিবেশী কয়েকটি দেশেও ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে বলে জানা যায়। সংক্রমণ ও উপসর্গের দিক থেকে কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাসের সঙ্গে ‘মিল’ থাকায় এইচএমপিভিও করোনার মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের।

ভারতের বেঙ্গালুরুর পর কলকাতায়ও এইচএমপিভি সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে দেশটিতে এইচএমপিভি আক্রান্তের সংখ্যা সাতজনে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির সংবাদমাধ্যম। সংক্রমণ বাড়ায় মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকসহ বেশ কিছু রাজ্যে সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির হাসপাতালগুলোকে রোগীর চাপ সামলাতে প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়স্ক ও শিশুরা এই ভাইরাসের সংক্রমণের মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। ২০২০ সালের করোনা মহামারির পর এইচএমপিভি নতুন সংকট তৈরি করতে পারে। ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠান্ডা জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে, যা গুরুতর অবস্থায় নিউমোনিয়া পর্যন্ত গড়াতে পারে।

চীনের স্বাস্থ্য বিভাগ ভাইরাসটির সংক্রমণের হার বৃদ্ধি নিয়ে আগে থেকেই সতর্কবার্তা জারি করলেও, এইচএমপিভির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তারা এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক পদক্ষেপ না নিলে শীতকালীন সময়ে এই ভাইরাসটি আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এদিকে, মালয়েশিয়ায় এইচএমপিভি আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় আগেই দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে জনসাধারণকে মাস্ক পরতে এবং বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। এবার জনগণকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ দেশ’ ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতার নির্দেশ দিয়েছে তারা। হংকংয়েও এইচএমপিভি সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।

ভারতে এইচএমপিভি প্রথম শনাক্ত হয় বেঙ্গালুরুতে। আক্রান্তদের মধ্যে তিন মাস বয়সী এক শিশু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও, আট মাস বয়সী অপর এক শিশু এখনও চিকিৎসাধীন। সম্প্রতি কলকাতায়ও এক শিশুর দেহে শনাক্ত করা হয় এই ভাইরাস।

দেশটির সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সোমবারই কয়েক দফা নির্দেশনা জারি করে কর্ণাটক সরকার। এতে হাঁচি বা কাশির সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখা, মাস্ক পরা, একই রুমাল বার বার ব্যবহার না করা, সাবান ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, অসুস্থ ব্যক্তির থেকে দূরে থাকাসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্র ও গুজরাটও সতর্কতা জারি করেছে।

এছাড়া, দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ‘সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সংকট’ রোধে কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, এরইমধ্যে দিল্লি সরকার রাজধানীর সব হাসপাতালকে বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।