ঢাকা ০৩:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএনওর ওপর হামলায় রবিউলের সম্পৃক্ততা যেভাবে নিশ্চিত করছে পুলিশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:৩৮:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • ১৮৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ওপর হামলাকারী একজন। তিনি ইউএনওর বাড়ির সদ্য বহিষ্কৃত মালি রবিউল ইসলাম। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর দেওয়া বক্তব্য, আলামত, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও ঘটনার বর্ণনা সবই পরস্পর সামঞ্জস্যপূর্ণ। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা তদন্তে সংশ্লিষ্ট পুলিশের পক্ষ থেকে এমন উল্লেখ করা হয়েছে।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, প্রথম অবস্থায় র‌্যাবের দাবি করা আসাদুলকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার পর চার দিনই তিনি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে ফুটেজ, আলামত বা বর্ণনা কিছুরই মিল পাওয়া যাচ্ছিল না। চতুর্থ দিনের শেষে আসাদুল বলেছেন, তিনি এ ঘটনায় জড়িত নন।

আসাদুল সন্দেহের বাইরে চলে যাওয়ার পর পুলিশ নজর দেয় ইউএনওর সঙ্গে কাদের দ্বিমত আছে এবং কারা তাঁর ওপর অসন্তুষ্ট হতে পারে। এমন বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও ক্লু পাওয়া যাচ্ছিল না। একপর্যায়ে পুলিশের সামনে আসে মালি রবিউলের সাময়িক বহিষ্কার হওয়ার বিষয়টি।

রবিউলকে সন্দেহের কেন্দ্রে রেখে তদন্ত শুরু করলেও কোনো সূত্র খুঁজে পাচ্ছিল না পুলিশ। অবশেষে একটি মোবাইল ফোন নম্বর পাওয়া যায়। সেটিতে দিনাজপুরের বিরল থেকে ঘোড়াঘাট যাওয়ার লোকেশন দেখাচ্ছিল। নম্বরটি রবিউলের কিনা তা নিশ্চিত হতে তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে বিভিন্ন উপায়ে নিশ্চিত হওয়া যায় যে রবিউলই সেদিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল স্বীকার করেন যে হামলার সঙ্গে তিনি জড়িত। পরে তিনি পুরো ঘটনা বর্ণনা করেন। ভিডিও ফুটেজে রবিউলের হাতে লাঠি দেখা গেছে। অথচ হামলা চালানো হয়েছে হাতুড়ি দিয়ে। এসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গভীররাতে ওই রাস্তায় কয়েকটি কুকুর থাকে। কুকুরের আক্রমণ এড়াতে তিনি লাঠি নিয়েছিলেন। পরে পুলিশের কর্মকর্তারা রাতে ঘোড়াঘাটের ওই রাস্তায় গিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন যে আসলেই সেখানে কয়েকটি কুকুর থাকে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর রাত ১টা ১০ মিনিটে নিজ বাড়ি থেকে রবিউলকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটি হাতুড়ি, আলমারির চাবি, মই ও লাঠি উদ্ধার করা হয়। তবে রবিউল জানিয়েছেন, আলামত মুছতে সেদিন তিনি যেসব কাপড়, টুপি ও মাস্ক পরেছিলেন সেগুলো পুড়িয়ে ফেলেছেন। আর এ জন্যই সিসি ক্যামেরায় তাঁর হাতে একটি ব্যাগ দেখা গিয়েছিল, যেটিতে নতুন শার্ট-প্যান্ট ছিল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ইউএনওর ওপর হামলায় রবিউলের সম্পৃক্ততা যেভাবে নিশ্চিত করছে পুলিশ

আপডেট টাইম : ০৯:৩৮:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ওপর হামলাকারী একজন। তিনি ইউএনওর বাড়ির সদ্য বহিষ্কৃত মালি রবিউল ইসলাম। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর দেওয়া বক্তব্য, আলামত, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও ঘটনার বর্ণনা সবই পরস্পর সামঞ্জস্যপূর্ণ। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা তদন্তে সংশ্লিষ্ট পুলিশের পক্ষ থেকে এমন উল্লেখ করা হয়েছে।

পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, প্রথম অবস্থায় র‌্যাবের দাবি করা আসাদুলকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়ার পর চার দিনই তিনি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে ফুটেজ, আলামত বা বর্ণনা কিছুরই মিল পাওয়া যাচ্ছিল না। চতুর্থ দিনের শেষে আসাদুল বলেছেন, তিনি এ ঘটনায় জড়িত নন।

আসাদুল সন্দেহের বাইরে চলে যাওয়ার পর পুলিশ নজর দেয় ইউএনওর সঙ্গে কাদের দ্বিমত আছে এবং কারা তাঁর ওপর অসন্তুষ্ট হতে পারে। এমন বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও ক্লু পাওয়া যাচ্ছিল না। একপর্যায়ে পুলিশের সামনে আসে মালি রবিউলের সাময়িক বহিষ্কার হওয়ার বিষয়টি।

রবিউলকে সন্দেহের কেন্দ্রে রেখে তদন্ত শুরু করলেও কোনো সূত্র খুঁজে পাচ্ছিল না পুলিশ। অবশেষে একটি মোবাইল ফোন নম্বর পাওয়া যায়। সেটিতে দিনাজপুরের বিরল থেকে ঘোড়াঘাট যাওয়ার লোকেশন দেখাচ্ছিল। নম্বরটি রবিউলের কিনা তা নিশ্চিত হতে তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে বিভিন্ন উপায়ে নিশ্চিত হওয়া যায় যে রবিউলই সেদিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল স্বীকার করেন যে হামলার সঙ্গে তিনি জড়িত। পরে তিনি পুরো ঘটনা বর্ণনা করেন। ভিডিও ফুটেজে রবিউলের হাতে লাঠি দেখা গেছে। অথচ হামলা চালানো হয়েছে হাতুড়ি দিয়ে। এসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গভীররাতে ওই রাস্তায় কয়েকটি কুকুর থাকে। কুকুরের আক্রমণ এড়াতে তিনি লাঠি নিয়েছিলেন। পরে পুলিশের কর্মকর্তারা রাতে ঘোড়াঘাটের ওই রাস্তায় গিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন যে আসলেই সেখানে কয়েকটি কুকুর থাকে।

গত ৯ সেপ্টেম্বর রাত ১টা ১০ মিনিটে নিজ বাড়ি থেকে রবিউলকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটি হাতুড়ি, আলমারির চাবি, মই ও লাঠি উদ্ধার করা হয়। তবে রবিউল জানিয়েছেন, আলামত মুছতে সেদিন তিনি যেসব কাপড়, টুপি ও মাস্ক পরেছিলেন সেগুলো পুড়িয়ে ফেলেছেন। আর এ জন্যই সিসি ক্যামেরায় তাঁর হাতে একটি ব্যাগ দেখা গিয়েছিল, যেটিতে নতুন শার্ট-প্যান্ট ছিল।