হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশের ২১ জেলায় চলমান বন্যাজনিত কারণে আক্রান্ত এলাকার হাজার হাজার মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে। ডায়রিয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা (আরটিআই), চর্মরোগ, চোখের প্রদাহ ও অন্যান্য আঘাতজনিত কারণসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এছাড়া সাপের কামড় ও পানিতে ডোবাসহ নানা কারণে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্য বলছে, গত ৩০ জুন থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত সময়ে বন্যায় দেশের ২১ জেলায় ১১১ জনের মৃত্যু হয়। মোট মৃতের সর্বোচ্চ সংখ্যক ৮৯ জনের মৃত্যু হয় পানিতে ডুবে। এছাড়া ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে একজন, সাপের কামড়ে ১২ জন, বজ্রপাতে আটজন এবং অন্যান্য কারণে একজনের মৃত্যু হয়। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় পানিতে ডুবে আটজন এবং সাপের কামড়ে তিনজনসহ মোট ১১ জনের মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, বর্তমানে দেশের ২১ জেলা বন্যায় আক্রান্ত। জেলাগুলো হলো-লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, রংপুর, সুনামগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, জামালপুর, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর, নেত্রকোনা, নওগাঁ, ফেনী, ঢাকা, শরীয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জ।
এসব জেলার ১৬৮টি উপজেলার মধ্যে ৭৮টি দুর্গত উপজেলা রয়েছে। এসব জেলা-উপজেলার এক হাজার ৫৩৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪০১টি ইউনিয়ন আক্রান্ত। এ সকল এলাকায় মোট আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা ৪৪৩টি। বর্তমানে এসব এলাকায় মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য এক হাজার ৭৬৬টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
বন্যা আক্রান্ত ২১ জেলায় গত ৩০ জন থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত সময়ে ডায়রিয়া চার হাজার ২০৯ জন, শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যায় এক হাজার ১১১ জন, বজ্রপাতে ৩৮ জন, সাপের কামড়ে ২৬ জন, পানিতে ডুবে ৯২ জন, চর্মরোগে এক হাজার ৪৫৬ জন, চোখের প্রদাহে ২৪৪ জন, আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ২৭২ জন এবং অন্যান্য রোগে দুই হাজার ১৮ জনসহ মোট ৯ হাজার ৪৬৬ জন আক্রান্ত হন।
এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারী ১১১ জনের মধ্যে লালমনিরহাটে ১০ জন, কুড়িগ্রামে ২০ জন, গাইবান্ধায় ১০ জন, নীলফামারীতে দুইজন, রংপুরে তিনজন, সুনামগঞ্জে ১০ জন, বগুড়ায় ২৭ জন, টাঙ্গাইলে ১৩ জন, মানিকগঞ্জে আটজন, নেত্রকোনায় পাঁচজন এবং শরীয়তপুরে একজনের মৃত্যু হয়।