ঐক্যফ্রন্ট প্রধান থাকছেন না ড. কামাল

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আগের কাঠামো আর কার্যকর থাকছে না। তার বদলে যৌথ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের একটি কাঠামো তৈরির চেষ্টা চলছে। ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াতকে এই কাঠামোর বাইরে রাখা হবে। বিভিন্ন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ছাড়াও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টভুক্ত দলগুলোর পাশাপাশি বামপন্থী কয়েকটি দলকে এই কাঠামোতে সম্পৃক্ত করে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। যদিও বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টা এখনো অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে রয়ে গেছে। তবে বাম দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। দলটি মনে করছে, সর্বশেষ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের বর্তমান কাঠামো ও নেতৃত্ব ব্যর্থ হয়েছে।

সর্বশেষ গত ৯ জুলাই বিএনপির গবেষণা সেল বিএনআরসির (বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার) উদ্যোগে এক ভার্চুয়াল সভায় সংশ্লিষ্ট দলগুলোর নেতারা জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার বিষয়ে বক্তব্য দেন। সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না এবং বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশীদ ফিরোজ বক্তব্য দেন। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল বাম জোটের সর্বদলীয় এক সভায়ও বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বক্তব্য দেন।

২০১৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট কার্যত দুর্বল হয়ে পড়েছে। জোটের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেন নির্বাচন করতে রাজি না হওয়ার বিষয়টি এর প্রধান কারণ বলে অনেকে মনে করেন। বিএনপি মনে করে, ওই কারণে নেতৃত্বহীন অবস্থায় নির্বাচন করতে হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক মহল এতে রুষ্ট হয়েছে। তাই ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ফ্রন্টের বৈঠকে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।

তারা মনে করেন, কামাল হোসেন নির্বাচনে অংশ নিলে ফল ভালো হতে পারত। এদিকে কৌশলগত এমন কারণে আবার দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুলও বৈঠকে কম যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে আলোচনা হলো— ড. কামাল হোসেনকে সামনে রেখে এবং বর্তমান কাঠামো দিয়ে ঐক্যফ্রন্ট আর চলছে না।

এর আগে গণফোরামের সুপারিশে মনোনয়ন পাওয়া ফ্রন্টের দুই এমপির সংসদে যাওয়ার প্রশ্নে আগে সিদ্ধান্ত নেয়ায় ঘটনায় ক্ষোভ আছে বিএনপিতে। তবে বয়োভারাক্রান্ত ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে সাম্প্রতিককালে জোটের মধ্যে নতুন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। তার দল গণফোরামসহ ফ্রন্টভুক্ত বেশির ভাগ দলই মনে করছে, শারীরিকভাবে অসুস্থ ড. কামাল ফ্রন্টের বৈঠকে এখন কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারছেন না।

নিজ দল গণফোরামের দলীয় ফোরামের বৈঠকে ড. কামাল হোসেন রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার কথা অনেকবার বলেছেন বলে জানা গেছে। দলটির শীর্ষ পর্যায়ের অন্তত দুজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অবসর নেয়ার কথা তিনি অনেক দিন ধরেই বলছেন। আর এটিও ঠিক, ৮৪ বছর বয়সের একজন নেতার নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টকে কার্যকর করা সম্ভব নয়।

গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীর মতে, ড. কামাল হোসেন কখনোই একক নেতৃত্বে বিশ্বাস করেন না। ফলে যৌথ নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট চললে অসুবিধার কিছু নেই।

গণফোরামের সাবেক মহাসচিব মোস্তফা মহসিন মন্টুর মতে, ঐক্যফ্রন্ট এখন ফলপ্রসূ কিছু করতে পারছে না। এর কাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর