ঢাকা ০৪:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘরে কোয়ারেন্টাইনে কী করবেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৪৮:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ মার্চ ২০২০
  • ১৯৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানুষকে হোম কোয়ারেন্টাইনে অর্থাৎ ঘরে থাকতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগও গত সপ্তাহের শেষ থেকে জোরেশোরে কেন্দ্রীয়ভাবে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দিচ্ছে। আর বিদেশফেরত সবাইকে ঘরে বা স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাপইনে থাকতে বলা হচ্ছে।

বিদেশ থেকে দেশে ফেরা প্রবাসীদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় কিছু নির্দেশনা মেনে চলতে অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গত সোমবার সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে এসব জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে-

১. কোয়ারেন্টাইনে বাড়ির অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা থাকতে হবে। অন্যদের থেকে অন্তত ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

২. ঘুমানোর জন্য আলাদা বিছানায় থাকতে হবে। এমন ঘরে থাকতে হবে, যেখানে আলো–বাতাস প্রবেশ করে।

৩. সম্ভব হলে পৃথক গোসলখানা ও শৌচাগার ব্যবহার করতে হবে। সম্ভব না হলে ওই স্থানগুলোতে জানালা খুলে রেখে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন। শিশুর কাছে যাওয়ার সময় মাস্ক পরতে হবে ও ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে।

৫. কোয়ারেন্টাইনে থাকা শিশুদের করোনা বিষয়ে ব্রিফ করতে হবে। খেলার আগে ও পরে খেলনাগুলো জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

৬. কোয়ারেন্টাইনে কোনো পশুপাখি রাখা যাবে না।

৭. বাড়ির অন্য সদস্যদের সঙ্গে একই ঘরে অবস্থান করলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

৮. মাস্ক পরে থাকার সময় এটি হাত দিয়ে ধরা যাবে না। মাস্ক ব্যবহারের সময় সর্দি, থুতু, কাশি ও বমি সংস্পর্শে এলে সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক খুলে নতুন মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

৯. ব্যবহার করা মাস্ক ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলে সাবান–পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে।

১০. একজনের ব্যক্তিগত সামগ্রী আরেকজন ব্যবহার করবেন না। কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির থালা, গ্লাস, কাপসহ বাসনপত্র, তোয়ালে, বিছানার চাদর অন্য কেউ ব্যবহার করবেন না। এসব ব্যবহারের পর সাবান-পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

১১. কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির ব্যবহৃত মাস্ক, গ্লাভস, টিস্যুসহ যে কোনো আবর্জনা ওই ঘরে রাখা ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলতে হবে। এসব আবর্জনা উন্মুক্ত স্থানে না ফেলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

১২. খাওয়া, হালকা ব্যায়াম করতে হবে। সম্ভব হলে বাসা থেকে অফিসের কাজ করতে হবে।

১৩. পরিবারের কারও দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার, অ্যাজমা ইত্যাদি নেই, এমন একজন ব্যক্তি পরিচর্যাকারী হিসেবে নিয়োজিত হতে পারেন।

১৪. কোয়ারেন্টাইনে আছেন, এমন ব্যক্তির সঙ্গে কোনো অতিথিকে দেখা করতে দেয়া যাবে না।

১৫. পরিচর্যাকারী খালি হাতে ওই ঘরের কোনো কিছু স্পর্শ করবেন না।

১৬. কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, ঘরে ঢুকলে, খাবার তৈরির আগে ও পরে, খাবার আগে, শৌচাগার ব্যবহারের পর, গ্লাভস পরার আগে এবং খোলার পর বা যখনই হাত দেখে নোংরা মনে হবে, তখনই দুই হাত পরিষ্কার করতে হবে।

১৭. ঘরের মেঝে, আসবাব, শৌচাগার ও বাথরুম প্রতিদিন অন্তত একবার পরিষ্কার করতে হবে। পরিষ্কারের জন্য এক লিটার পানির মধ্যে ২০ গ্রাম বা ২ টেবিল চামচ ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে তা দিয়ে ভালোভাবে মুছে ফেলতে হবে। ওই দ্রবণ সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে।

১৮. কোয়ারেন্টাইনের সময় ফোন, ইন্টারনেটের সাহায্যে যোগাযোগ রাখতে হবে।

১৯. কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় কোনো উপসর্গ যেমন ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি জ্বর, কাশি, সর্দি, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি দেখা দিলে অতি দ্রুত আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করে পরবর্তী করণীয় জেনে নিতে হবে।

২০. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কোয়ারেন্টাইন শেষ হবে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একজন থেকে অন্যজনের কোয়ারেন্টাইনের সময়সীমা বেশি বা কম হতে পারে। তবে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ সময়সীমা ১৪ দিন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ঘরে কোয়ারেন্টাইনে কী করবেন

আপডেট টাইম : ০২:৪৮:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ মার্চ ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানুষকে হোম কোয়ারেন্টাইনে অর্থাৎ ঘরে থাকতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগও গত সপ্তাহের শেষ থেকে জোরেশোরে কেন্দ্রীয়ভাবে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দিচ্ছে। আর বিদেশফেরত সবাইকে ঘরে বা স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাপইনে থাকতে বলা হচ্ছে।

বিদেশ থেকে দেশে ফেরা প্রবাসীদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় কিছু নির্দেশনা মেনে চলতে অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। গত সোমবার সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে এসব জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে-

১. কোয়ারেন্টাইনে বাড়ির অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা থাকতে হবে। অন্যদের থেকে অন্তত ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

২. ঘুমানোর জন্য আলাদা বিছানায় থাকতে হবে। এমন ঘরে থাকতে হবে, যেখানে আলো–বাতাস প্রবেশ করে।

৩. সম্ভব হলে পৃথক গোসলখানা ও শৌচাগার ব্যবহার করতে হবে। সম্ভব না হলে ওই স্থানগুলোতে জানালা খুলে রেখে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন। শিশুর কাছে যাওয়ার সময় মাস্ক পরতে হবে ও ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে।

৫. কোয়ারেন্টাইনে থাকা শিশুদের করোনা বিষয়ে ব্রিফ করতে হবে। খেলার আগে ও পরে খেলনাগুলো জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

৬. কোয়ারেন্টাইনে কোনো পশুপাখি রাখা যাবে না।

৭. বাড়ির অন্য সদস্যদের সঙ্গে একই ঘরে অবস্থান করলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

৮. মাস্ক পরে থাকার সময় এটি হাত দিয়ে ধরা যাবে না। মাস্ক ব্যবহারের সময় সর্দি, থুতু, কাশি ও বমি সংস্পর্শে এলে সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক খুলে নতুন মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

৯. ব্যবহার করা মাস্ক ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলে সাবান–পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে।

১০. একজনের ব্যক্তিগত সামগ্রী আরেকজন ব্যবহার করবেন না। কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির থালা, গ্লাস, কাপসহ বাসনপত্র, তোয়ালে, বিছানার চাদর অন্য কেউ ব্যবহার করবেন না। এসব ব্যবহারের পর সাবান-পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

১১. কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির ব্যবহৃত মাস্ক, গ্লাভস, টিস্যুসহ যে কোনো আবর্জনা ওই ঘরে রাখা ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলতে হবে। এসব আবর্জনা উন্মুক্ত স্থানে না ফেলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

১২. খাওয়া, হালকা ব্যায়াম করতে হবে। সম্ভব হলে বাসা থেকে অফিসের কাজ করতে হবে।

১৩. পরিবারের কারও দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার, অ্যাজমা ইত্যাদি নেই, এমন একজন ব্যক্তি পরিচর্যাকারী হিসেবে নিয়োজিত হতে পারেন।

১৪. কোয়ারেন্টাইনে আছেন, এমন ব্যক্তির সঙ্গে কোনো অতিথিকে দেখা করতে দেয়া যাবে না।

১৫. পরিচর্যাকারী খালি হাতে ওই ঘরের কোনো কিছু স্পর্শ করবেন না।

১৬. কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে, ঘরে ঢুকলে, খাবার তৈরির আগে ও পরে, খাবার আগে, শৌচাগার ব্যবহারের পর, গ্লাভস পরার আগে এবং খোলার পর বা যখনই হাত দেখে নোংরা মনে হবে, তখনই দুই হাত পরিষ্কার করতে হবে।

১৭. ঘরের মেঝে, আসবাব, শৌচাগার ও বাথরুম প্রতিদিন অন্তত একবার পরিষ্কার করতে হবে। পরিষ্কারের জন্য এক লিটার পানির মধ্যে ২০ গ্রাম বা ২ টেবিল চামচ ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে তা দিয়ে ভালোভাবে মুছে ফেলতে হবে। ওই দ্রবণ সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে।

১৮. কোয়ারেন্টাইনের সময় ফোন, ইন্টারনেটের সাহায্যে যোগাযোগ রাখতে হবে।

১৯. কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় কোনো উপসর্গ যেমন ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি জ্বর, কাশি, সর্দি, গলাব্যথা, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি দেখা দিলে অতি দ্রুত আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করে পরবর্তী করণীয় জেনে নিতে হবে।

২০. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কোয়ারেন্টাইন শেষ হবে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একজন থেকে অন্যজনের কোয়ারেন্টাইনের সময়সীমা বেশি বা কম হতে পারে। তবে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ সময়সীমা ১৪ দিন।