ঢাকা ০১:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তামিমের মুখে তালা ডাবলের পরও

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:২৯:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২০
  • ২৪৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিনের খেলা শেষ। ড্রেসিংরুমে ম্যাসাজ নিচ্ছিলেন মুমিনুল হক। টিম বয়ের দেওয়া তথ্যমতে ডাবল সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল তখন আইস বাথ নিচ্ছেন। মুঠোফোনে এক সাংবাদিক অপরাজিত ২২২ রান করা এই ওপেনারকে অনুরোধ করলেন কথা বলতে। তামিমের সোজা জবাব ছিল, ‘অসম্ভব’।

কিছুক্ষণ পর ড্রেসিংরুম থেকে বের হয়ে আসলেও কথা বলতে রাজি হননি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলার পরও তামিমের মুখে কুলুপ। খুব বেশি বাক্য ব্যয় না করে ফিরে গেছেন ড্রেসিংরুমে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) প্রথম রাউন্ডে গতকাল মিরপুর স্টেডিয়ামে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলের বিরুদ্ধে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের হয়ে খেলা তামিম। বিসিএলে ছয় বছর পর নেমেই ডাবল হাঁকালেন তিনি। এর আগে লংগার ভার্সনে তার ডাবল সেঞ্চুরি ছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ২০১৫ সালে খুলনায় ২০৬ রান করেছিলেন। গতকাল সেই ইনিংসকেও ছাড়িয়ে গেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পেয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। ঘরোয়ায় এর আগে তার সর্বোচ্চ ছিল ১৯২ রানের ইনিংস, ২০১২ সালে।

মিরপুরে গতকাল সকাল থেকেই তামিমের ব্যাটিং দেখেছেন নির্বাচকরা। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু দিন শেষে বলেছেন, খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। লম্বা ইনিংস খেলেছে। দিনটা শেষ করে এসেছে। এই আত্মবিশ্বাস পাকিস্তানে কাজে লাগবে।

২৮১ বলে ৩০টি চারে অপরাজিত ২২২ রান করেছেন তামিম। তারপরও এমন দিনে তার মুখে তালা দেওয়ার কারণটা সহজেই অনুমেয়। পাকিস্তান সফরে টি-২০ সিরিজে তামিমের ব্যাটিং দেশ জুড়ে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিল। দলের এবং সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েও সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। দুই ম্যাচে ১০৪ রান করেছিলেন তিনি। পাকিস্তান সফরে টি-২০ তে তামিমের ধীর গতির ব্যাটিং, স্ট্রাইক রেটই ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। প্রথম ম্যাচে ৩৪ বলে ৩৯, দ্বিতীয় ম্যাচে ৫৩ বলে ৬৫ রান করেন তিনি। পাওয়ার প্লেতে তার সতর্ক ব্যাটিং মনে ধরেনি কারোই।

সমালোচনার সেই ঝড়ই হয়তো তামিমের মনোবেদনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে মিডিয়া থেকে দূরে থাকার নীতি অবলম্বন করছেন তিনি।

টি-২০ তে ধীর লয়ে খেললেও গতকাল সাদা পোশাকে তামিমের ব্যাটিং ছিল ওয়ানডের ছন্দে। শুভাগত হোমের অফ স্পিনের বিপক্ষে কিছুটা সাবধানী ছিলেন, কিন্তু পেসারদের খেলেছেন দাপটের সঙ্গে। মুস্তাফিজ-মুকিদুল-শহীদুলরা টলাতে পারেননি এই বাঁহাতিকে। দ্রুত গতিতে রান তুলেছেন তিনি। ৭৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি, ১২৫ বলে সেঞ্চুরি, ১৮০ বলে ১৫০ রান পূর্ণ করেন। ২৯টি চারে ২৪২ বলে তুলে নেন ডাবল সেঞ্চুরি।

ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এর আগে তামিমের সেঞ্চুরি ছিল ২০১৫ সালে। বরিশালের বিরুদ্ধে ১৩৭ রান করেছিলেন চট্টগ্রামের এই ব্যাটসম্যান। এরপর গত কয়েক বছরে মাত্র দুটি ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন তিনি।

গতকাল পূর্বাঞ্চলের অধিনায়ক মুমিনুলের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ২৯৬ রানের জুটি গড়েছিলেন তামিম। যার মাধ্যমে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের প্রস্তুতিও সারলেন তারা। মুমিনুলও ১১১ রান করেছেন।

লাল বলে অনুশীলনের জন্য এদিন ব্যাটিংয়ে অনেক সিরিয়াস ছিলেন তামিম। দিন শেষে মুমিনুল বলেছেন, ‘যারা সামনে থেকে দেখেছে, আপনারা ছিলেন কি-না জানি না, কিন্তু আমি দেখেছি। আমি বলবো অসাধারণ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

তামিমের মুখে তালা ডাবলের পরও

আপডেট টাইম : ০২:২৯:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২০

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দিনের খেলা শেষ। ড্রেসিংরুমে ম্যাসাজ নিচ্ছিলেন মুমিনুল হক। টিম বয়ের দেওয়া তথ্যমতে ডাবল সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল তখন আইস বাথ নিচ্ছেন। মুঠোফোনে এক সাংবাদিক অপরাজিত ২২২ রান করা এই ওপেনারকে অনুরোধ করলেন কথা বলতে। তামিমের সোজা জবাব ছিল, ‘অসম্ভব’।

কিছুক্ষণ পর ড্রেসিংরুম থেকে বের হয়ে আসলেও কথা বলতে রাজি হননি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলার পরও তামিমের মুখে কুলুপ। খুব বেশি বাক্য ব্যয় না করে ফিরে গেছেন ড্রেসিংরুমে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) প্রথম রাউন্ডে গতকাল মিরপুর স্টেডিয়ামে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলের বিরুদ্ধে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের হয়ে খেলা তামিম। বিসিএলে ছয় বছর পর নেমেই ডাবল হাঁকালেন তিনি। এর আগে লংগার ভার্সনে তার ডাবল সেঞ্চুরি ছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ২০১৫ সালে খুলনায় ২০৬ রান করেছিলেন। গতকাল সেই ইনিংসকেও ছাড়িয়ে গেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পেয়েছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। ঘরোয়ায় এর আগে তার সর্বোচ্চ ছিল ১৯২ রানের ইনিংস, ২০১২ সালে।

মিরপুরে গতকাল সকাল থেকেই তামিমের ব্যাটিং দেখেছেন নির্বাচকরা। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু দিন শেষে বলেছেন, খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। লম্বা ইনিংস খেলেছে। দিনটা শেষ করে এসেছে। এই আত্মবিশ্বাস পাকিস্তানে কাজে লাগবে।

২৮১ বলে ৩০টি চারে অপরাজিত ২২২ রান করেছেন তামিম। তারপরও এমন দিনে তার মুখে তালা দেওয়ার কারণটা সহজেই অনুমেয়। পাকিস্তান সফরে টি-২০ সিরিজে তামিমের ব্যাটিং দেশ জুড়ে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছিল। দলের এবং সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েও সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। দুই ম্যাচে ১০৪ রান করেছিলেন তিনি। পাকিস্তান সফরে টি-২০ তে তামিমের ধীর গতির ব্যাটিং, স্ট্রাইক রেটই ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। প্রথম ম্যাচে ৩৪ বলে ৩৯, দ্বিতীয় ম্যাচে ৫৩ বলে ৬৫ রান করেন তিনি। পাওয়ার প্লেতে তার সতর্ক ব্যাটিং মনে ধরেনি কারোই।

সমালোচনার সেই ঝড়ই হয়তো তামিমের মনোবেদনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে মিডিয়া থেকে দূরে থাকার নীতি অবলম্বন করছেন তিনি।

টি-২০ তে ধীর লয়ে খেললেও গতকাল সাদা পোশাকে তামিমের ব্যাটিং ছিল ওয়ানডের ছন্দে। শুভাগত হোমের অফ স্পিনের বিপক্ষে কিছুটা সাবধানী ছিলেন, কিন্তু পেসারদের খেলেছেন দাপটের সঙ্গে। মুস্তাফিজ-মুকিদুল-শহীদুলরা টলাতে পারেননি এই বাঁহাতিকে। দ্রুত গতিতে রান তুলেছেন তিনি। ৭৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি, ১২৫ বলে সেঞ্চুরি, ১৮০ বলে ১৫০ রান পূর্ণ করেন। ২৯টি চারে ২৪২ বলে তুলে নেন ডাবল সেঞ্চুরি।

ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এর আগে তামিমের সেঞ্চুরি ছিল ২০১৫ সালে। বরিশালের বিরুদ্ধে ১৩৭ রান করেছিলেন চট্টগ্রামের এই ব্যাটসম্যান। এরপর গত কয়েক বছরে মাত্র দুটি ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন তিনি।

গতকাল পূর্বাঞ্চলের অধিনায়ক মুমিনুলের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ২৯৬ রানের জুটি গড়েছিলেন তামিম। যার মাধ্যমে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের প্রস্তুতিও সারলেন তারা। মুমিনুলও ১১১ রান করেছেন।

লাল বলে অনুশীলনের জন্য এদিন ব্যাটিংয়ে অনেক সিরিয়াস ছিলেন তামিম। দিন শেষে মুমিনুল বলেছেন, ‘যারা সামনে থেকে দেখেছে, আপনারা ছিলেন কি-না জানি না, কিন্তু আমি দেখেছি। আমি বলবো অসাধারণ।