ঢাকা ০৪:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৪৭ মিনিটেই শেষ গোলাপি টেস্টে বাংলাদেশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৩৯:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৯
  • ২৯২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পুরো কলকাতা শহর মুড়ে ফেলা হয়েছিল গোলাপি ক্যানভাসে। উপমহাদেশের মাটিতে প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্টটিকে স্মরণীয় করে রাখতে কতই না আয়োজন করেছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) নতুন সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী।

গোলাপি হাইপে ম্যাচ শুরুর চারদিন আগেই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল প্রথম চারদিনের সব টিকিট। তৃতীয় ও চতুর্থদিনের টিকিট কেটে রাখা দর্শকরা সামান্য হতাশ হলেও সব আয়োজনই সার্থক স্বাগতিকদের জন্য। দিনশেষে ফলটাই তো মুখ্য।

সেই ফল বিরাট কোহলিদের জন্য যতটা মধুর হল, ততটাই তেত মুমিনুল হকদের জন্য। ইডেনের গোলাপি মঞ্চে ভারত গাঁথল রেকর্ডের মালা, বাংলাদেশ লিখল লজ্জার আখ্যান।

ম্যাচ তৃতীয়দিনে টেনে নিতে পারাই হয়ে থাকল বাংলাদেশের একমাত্র সাফল্য। মুশফিকুর রহিমের লড়াকু ফিফটিতে সেটা সম্ভব হলেও ইনিংস হারের অমোঘ নিয়তি এড়ানো যায়নি।

বিভীষিকাময় ব্যাটিংয়ে গোলাপি টেস্টে বাংলাদেশকে হতে হল ‘নীল’। ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল দ্বিতীয়দিনেই। দেখার ছিল লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে কতটা লড়াই করতে পারেন মুশফিক। কিন্তু অভাবনীয় কিছুই হল না।

রোববার মাত্র ৪৭ মিনিটেই শেষ হয়েছে তৃতীয়দিনের লড়াই। বাংলাদেশ টিকতে পেরেছে মাত্র ৮.৪ ওভার। দ্রুত শেষ তিন উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস ১৯৫ রানে গুটিয়ে দেন উমেশ যাদব।

নিজেদের প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্টে ইনিংস ও ৪৬ রানে হেরেছে মুমিনুল হকের দল।

দুই ম্যাচের সিরিজ ভারত জিতে নিল ২-০ ব্যবধানে। সফরে দুটি টেস্টই তিনদিনে ও ইনিংস ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ। ইন্দোরে হেরেছিল ইনিংস ও ১৩০ রানে।

ছয় উইকেটে ১৫২ রানে দ্বিতীয়দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। ৫৯ রানে অপরাজিত থাকা মুশফিককে কাল ৭৪ রানে থামানোর আগে ও পরে ইবাদত ও আল-আমিনকে ফিরিয়ে ৪৭ মিনিটেই জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে ফেলেন দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেয়া উমেশ যাদব।

আগের দিন হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে আহত অবসরে যাওয়া মাহমুদউল্লাহ কাল আর ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি। দুই ইনিংস মিলিয়ে নয় উইকেট নেয়া ইশান্ত শর্মা হয়েছেন ম্যাচ ও সিরিজসেরা।

কলকাতা টেস্ট সোয়া দুইদিনে জিতে বেশ কয়েকটি রেকর্ডও গড়েছে ভারত। এ নিয়ে ঘরের মাঠে টানা ১২টি টেস্ট সিরিজ জিতল তারা। প্রথম দল হিসেবে টানা চার টেস্টে জিতল ইনিংস ব্যবধানে।

এছাড়া নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টানা সাত টেস্ট জিতল ভারত। যার সবগুলোই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে। সাত ম্যাচে ৩৬০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চূড়ায় বিরাট কোহলির দল। অন্যদিকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের প্রথম সিরিজ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি শূন্য।

কলকাতা টেস্টে খেলা হয়েছে মাত্র ৯৬৮ বল। ঘরের মাঠে এত কম বলে কখনও টেস্ট জেতেনি ভারত। এছাড়া দেশের মাটিতে এই প্রথম কোনো টেস্ট জিতল ভারত যেখানে প্রতিপক্ষের সব উইকেট নিয়েছেন পেসাররা।

স্বাগতিকদের এত কীর্তির ভিড়ে বাংলাদেশের বিবর্ণ পারফরম্যান্স নিদারুণ হতাশ করেছে সবাইকে। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই গোলাপি বলে টেস্ট খেলতে কেন রাজি হল বাংলাদেশ?

তবে প্রস্তুতি নয়, ‘অর্ডিনারি’ বাংলাদেশের সামর্থ্য ও নিবেদনেই ঘাটতি দেখছেন ভারতীয় ব্যাটিং গ্রেট সুনীল গাভাস্কার। তৃতীয়দিনের খেলা শুরুর আগেই পিচ রিপোর্ট নিয়ে আলোচনার ফাঁকে বাংলাদেশকে ধুয়ে দিয়েছিলেন গাভাস্কার, ‘পিচ যেমনই হোক তাতে বেশি কিছু যায়-আসে না। এই বাংলাদেশ খুব সাধারণ এক দল। সাধারণ তাদের নিবেদন।

সাধারণ তাদের টেকনিক। পিচ যেমনই হোক, ম্যাচ শেষ হবে দ্রুতই। খারাপ লাগে বাংলাদেশের সমর্থকদের জন্য। ক্রিকেটের প্রতি তাদের প্রবল আবেগ রয়েছে। কিন্তু দলের কাছে থেকে কতটা প্রতিদান পাচ্ছে তারা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

৪৭ মিনিটেই শেষ গোলাপি টেস্টে বাংলাদেশ

আপডেট টাইম : ০৭:৩৯:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পুরো কলকাতা শহর মুড়ে ফেলা হয়েছিল গোলাপি ক্যানভাসে। উপমহাদেশের মাটিতে প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্টটিকে স্মরণীয় করে রাখতে কতই না আয়োজন করেছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) নতুন সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী।

গোলাপি হাইপে ম্যাচ শুরুর চারদিন আগেই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল প্রথম চারদিনের সব টিকিট। তৃতীয় ও চতুর্থদিনের টিকিট কেটে রাখা দর্শকরা সামান্য হতাশ হলেও সব আয়োজনই সার্থক স্বাগতিকদের জন্য। দিনশেষে ফলটাই তো মুখ্য।

সেই ফল বিরাট কোহলিদের জন্য যতটা মধুর হল, ততটাই তেত মুমিনুল হকদের জন্য। ইডেনের গোলাপি মঞ্চে ভারত গাঁথল রেকর্ডের মালা, বাংলাদেশ লিখল লজ্জার আখ্যান।

ম্যাচ তৃতীয়দিনে টেনে নিতে পারাই হয়ে থাকল বাংলাদেশের একমাত্র সাফল্য। মুশফিকুর রহিমের লড়াকু ফিফটিতে সেটা সম্ভব হলেও ইনিংস হারের অমোঘ নিয়তি এড়ানো যায়নি।

বিভীষিকাময় ব্যাটিংয়ে গোলাপি টেস্টে বাংলাদেশকে হতে হল ‘নীল’। ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল দ্বিতীয়দিনেই। দেখার ছিল লোয়ার অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে কতটা লড়াই করতে পারেন মুশফিক। কিন্তু অভাবনীয় কিছুই হল না।

রোববার মাত্র ৪৭ মিনিটেই শেষ হয়েছে তৃতীয়দিনের লড়াই। বাংলাদেশ টিকতে পেরেছে মাত্র ৮.৪ ওভার। দ্রুত শেষ তিন উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস ১৯৫ রানে গুটিয়ে দেন উমেশ যাদব।

নিজেদের প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্টে ইনিংস ও ৪৬ রানে হেরেছে মুমিনুল হকের দল।

দুই ম্যাচের সিরিজ ভারত জিতে নিল ২-০ ব্যবধানে। সফরে দুটি টেস্টই তিনদিনে ও ইনিংস ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ। ইন্দোরে হেরেছিল ইনিংস ও ১৩০ রানে।

ছয় উইকেটে ১৫২ রানে দ্বিতীয়দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। ৫৯ রানে অপরাজিত থাকা মুশফিককে কাল ৭৪ রানে থামানোর আগে ও পরে ইবাদত ও আল-আমিনকে ফিরিয়ে ৪৭ মিনিটেই জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে ফেলেন দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেয়া উমেশ যাদব।

আগের দিন হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে আহত অবসরে যাওয়া মাহমুদউল্লাহ কাল আর ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি। দুই ইনিংস মিলিয়ে নয় উইকেট নেয়া ইশান্ত শর্মা হয়েছেন ম্যাচ ও সিরিজসেরা।

কলকাতা টেস্ট সোয়া দুইদিনে জিতে বেশ কয়েকটি রেকর্ডও গড়েছে ভারত। এ নিয়ে ঘরের মাঠে টানা ১২টি টেস্ট সিরিজ জিতল তারা। প্রথম দল হিসেবে টানা চার টেস্টে জিতল ইনিংস ব্যবধানে।

এছাড়া নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো টানা সাত টেস্ট জিতল ভারত। যার সবগুলোই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে। সাত ম্যাচে ৩৬০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চূড়ায় বিরাট কোহলির দল। অন্যদিকে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের প্রথম সিরিজ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি শূন্য।

কলকাতা টেস্টে খেলা হয়েছে মাত্র ৯৬৮ বল। ঘরের মাঠে এত কম বলে কখনও টেস্ট জেতেনি ভারত। এছাড়া দেশের মাটিতে এই প্রথম কোনো টেস্ট জিতল ভারত যেখানে প্রতিপক্ষের সব উইকেট নিয়েছেন পেসাররা।

স্বাগতিকদের এত কীর্তির ভিড়ে বাংলাদেশের বিবর্ণ পারফরম্যান্স নিদারুণ হতাশ করেছে সবাইকে। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই গোলাপি বলে টেস্ট খেলতে কেন রাজি হল বাংলাদেশ?

তবে প্রস্তুতি নয়, ‘অর্ডিনারি’ বাংলাদেশের সামর্থ্য ও নিবেদনেই ঘাটতি দেখছেন ভারতীয় ব্যাটিং গ্রেট সুনীল গাভাস্কার। তৃতীয়দিনের খেলা শুরুর আগেই পিচ রিপোর্ট নিয়ে আলোচনার ফাঁকে বাংলাদেশকে ধুয়ে দিয়েছিলেন গাভাস্কার, ‘পিচ যেমনই হোক তাতে বেশি কিছু যায়-আসে না। এই বাংলাদেশ খুব সাধারণ এক দল। সাধারণ তাদের নিবেদন।

সাধারণ তাদের টেকনিক। পিচ যেমনই হোক, ম্যাচ শেষ হবে দ্রুতই। খারাপ লাগে বাংলাদেশের সমর্থকদের জন্য। ক্রিকেটের প্রতি তাদের প্রবল আবেগ রয়েছে। কিন্তু দলের কাছে থেকে কতটা প্রতিদান পাচ্ছে তারা।