হাওর বার্তা ডেস্কঃ সম্প্রতি রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে রাখা বৈদ্যুতিক খুঁটির সমস্যা নিয়ে একটি লাইভ ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তাতে তিনি সিলেটের ওসমানীনগরে সাদীপুর ইউনিয়ন এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ওপর বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে রাখা নিয়ে লাইভে প্রতিবাদ জানান এবং বিদ্যুৎ বিভাগের চরম গাফলতির বিষয়টিও তুলে ধরেন। এ সময় তিনি স্থানীয় কিছু যুবককে সঙ্গে নিয়ে সড়কে থাকা খুঁটি সরিয়ে দেন।
ব্যারিস্টার সুমন সেই ভিডিওটি করার আগে নিজেই লোকজন নিয়ে খুঁটিটি রাস্তার মধ্যে নিয়ে এসেছিলেন এবং তা আবার সড়কের পাশে ঠেলে পাঠিয়েছেন, এমন অভিযোগ করে ফেসবুকে একটি ট্রল ভিডিও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
যদিও অনুসন্ধানে দেখা যায়, বাস্তবে ট্রল ভিডিওতে যে দৃশ্য ব্যবহার করা হয় তা বাস্তবে ব্যারিস্টার সুমনের ভিডিওটিরই অংশবিশেষকে উল্টো করে চালিয়ে কারসাজি করা হয়েছে। এতে করে অনেকেই মনে করছেন, ব্যারিস্টার সুমন বিদ্যুতের খুঁটিটি নিজেরাই ঠেলে সড়কের মাঝে এনে তারপর জনভোগান্তির অভিযোগে ভিডিও করেছেন। যদিও এই কারসাজি ধরা পড়ে গেছে অনুসন্ধানে।
গত শুক্রবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ওসমানীনগরের সাদীপুর ইউনিয়নের এই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় এ দৃশ্য ধরা পড়লে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভে এসে এর প্রতিবাদ জানান ব্যারিস্টার সুমন।
সে সময় লাইভে তিনি বলেন, ‘পল্লি বিদ্যুতের একটি খুঁটি সড়কের পাশ থেকে প্রায় চারফুট ভেতরে রাখা হয়েছে। লাইভে তিনি ওসমানীনগর নেতাদের ও প্রশাসনসহ পল্লি বিদ্যুৎ অফিসের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। যাতে ভবিষ্যতে এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ না করেন। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
যা বলা হয় ওই ট্রলে
ব্যারিস্টার সুমন বিদ্যুতের খুঁটিটি নিজেরাই ঠেলে সড়কের মাঝে এনে তারপর কর্তৃপক্ষকে দোষ দিয়ে ভিডিও করেছেন, এমনটাই অভিযোগ করা হয় ট্রলে। সেই সঙ্গে একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়, যেখানে দেখানো হয় ব্যারিস্টার সুমন তার লোকজন নিয়ে বিদ্যুতের খুঁটিটি ঠেলে সড়কে নিয়ে আসছেন। ট্রলে দাবি করা হয়, ব্যারিস্টার সুমন সেই ভিডিওটি করার আগে নিজেই লোকজন নিয়ে খুঁটিটি রাস্তার মধ্যে নিয়ে এসেছিলেন এবং তা আবার সড়কের পাশে ঠেলে পাঠিয়েছেন।
ট্রল ভিডিওটি দেখুন এখানে-
যেভাবে ধরা পড়ল ট্রল ভিডিওর কারসাজি
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ব্যারিস্টার সুমন যে খুঁটিটি রাস্তায় নিয়ে আসছেন বলে ভিডিও দেখিয়ে দাবি করা হয়েছে, তা বাস্তবে ব্যারিস্টার সুমনের ভিডিওটি ঠেলে সড়কের বাইরে পাঠানোর দৃশ্যটি রিভার্স করে দেখানো অংশ। বিডিফ্যাক্ট চেক নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ ট্রলের বিষয়টি অনলাইনে তুলে ধরে জানায়, প্রকৃতপক্ষে ক্লিপটি সুমনের পেজে আপলোড করা মূল ভিডিও থেকে কেটে এডিট করে রিভার্স করা হয়েছে।
মূল ভিডিওর ৪০ সেকেন্ডের পরে দেখা যাবে লাল রঙের বাসটি সড়কে দাঁড়ানো সুমনদের পেছন দিক থেকে এসে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এডিট করা ভিডিওর ৫ম সেকেন্ড দেখা যাচ্ছে, বাসটি ব্যাক গিয়ারে আসছে। এটি দেখলেই ট্রল করা ওই ভিডিওটি যে ভুয়া তা প্রমাণ হয়।