ঢাকা ০৩:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নারীবাদী মালালার ‘ওড়না’ নিয়েও পশ্চিমের এই মাথাব্যথা কেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৪৭:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০১৯
  • ২৭৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শান্তিতে নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাইয়ের সঙ্গে ছবি তুলে বিপাকে পড়েছেন কানাডার কুইবেক অঙ্গরাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন দেখা দেয়, কেন নোবেলজয়ী পশ্চিমাদের আইকন হিসাবে খ্যাত নারী অধিকার কর্মী মালালার সাথে ছবি তুলে সমালোচিত হচ্ছেন ওই মন্ত্রী। আর কিছু না, পশ্চিমাদের সমালোচনার প্রধান টার্গেট মালালার ‘ওড়না’।

আলোচিত ওই ছবিতে দেখা যায়, কুইবেকের শিক্ষামন্ত্রী জ্যঁ-ফাঁসোয়া রবেয়ার্জের পাশে দাঁড়িয়ে আছে মাথায় উড়না পরিহিতা মালালা ইউসুফজাই। মালালার সঙ্গে কুইবেকের শিক্ষামন্ত্রীর দেখা হয় ফ্রান্সে। সেখানেই ছবিটি তোলা হয়েছিল। জানা যায়, মালালার সঙ্গে ওই সাক্ষাতে শিক্ষা ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ে কথা হয়েছে তাঁর।

গত মাসে কুইবেকের প্রাদেশিক সরকার ‘হিজাব’ নিষিদ্ধ করে একটি আইন পাস করে। এই আইনের একজন ঘোর সমর্থক ছিলেন এই মন্ত্রী। এই আইনের সমর্থন করে তিনি কিভাবে উড়না পরিহিতা মালালার সাথে হাসিমুখে ছবি তুলেছেন এই নিয়ে পশ্চিমের লোকজন সমালোচনা করছেন। এমনকি সামাজিক মাধ্যমগুলোতে বিভিন্নজন তাকে ‘প্রতারক’ বলেও আখ্যায়িত করছেন।

এ ঘটনায়  ইসলামের যে কোনো নিদর্শনের প্রতি বিশেষত ‘হিজাবের’ প্রতি পশ্চিমাদের ‘এ্যালার্জি’টা প্রকটভাবে ধরা পড়েছে। ইসলামের সাথে সম্পৃক্ত কোনো নিদর্শনের ধারক যদি তাদের কোনো তল্পিবাহকও হন, তাহলেও তার কোনো নিস্তার নেই।

এই যে মালালা, পশ্চিমাদের কাছে তিনি শুধু একজন ব্যক্তিই নন, একটি আদর্শ। পশ্চিমাবিশ্ব মালালাকে নারীবাদীদের আইকন হিসাবে উপস্থাপন করে থাকে। মালালার জাতীয় ও আন্তার্জাতিক পুরস্কার ও স্বীকৃতিও অনেক। জাতিসংঘ থেকে হোয়ইট হাউজ সব জায়গায় তার গ্রহণযোগ্যতা। সর্বোপরি, পশ্চিমাদের নারী এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যে তিনি দেশে বিদেশে দিবানিশি কসরত করে যাচ্ছেন।

কিন্তু অবাক হওয়ার মত বিষয় হল, পশ্চিমাদের জন্যে এত ত্যাগ স্বীকার করেও মালালা জাতে উঠতে পারলেন না। মাথায় একটা ‘কাপড়ের’ টুকরা থাকার কারণে নিন্দা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ভন্ডামি, প্রতারণা বলে গালি দেওয়া হচ্ছে মন্ত্রীকে।

এ ঘটনা আমাদের চোখে আবারও আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, কুরআনের ভাষায়-‘ ইহুদি খৃস্টানরা তোমার প্রতি ততক্ষণ পর্যন্ত খুশী হবে যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্ম গ্রহণ করবে।’

মালালার সঙ্গে কুইবেকের শিক্ষামন্ত্রীর ছবিটি  সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর টুইটারে সালিম নাদিম নামের এক সাংবাদিক জ্যঁ-ফাঁসোয়া রবেয়ার্জের কাছে জানতে চান—মালালা যদি কুইবেকে পড়াতে চান, তাহলে কী পদক্ষেপ নেবেন তিনি?

উত্তরে জ্যঁ-ফাঁসোয়া রবেয়ার্জ যা বললেন, তার খোলাসা হল, যদি মালালা কুইবেকে শিক্ষকতা করতে চান তাহলে তাকে ‘উড়না’ খুলেই শিক্ষকতা করতে হবে।

মন্ত্রীর কথায় মালালা কী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন তা এখনো জানা যায়নি। তবে ইতিমধ্যে অনেকে সংশয় প্রকাশ করা শুরু করেছেন, মালালা যদি মন্ত্রীর কথামত ‘উড়না’ খুলেও সেখানে শিক্ষকতা শুরু করেন তাহলেও তিনি পশ্চিমাদের জাতে উঠতে পারবেন না।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

নারীবাদী মালালার ‘ওড়না’ নিয়েও পশ্চিমের এই মাথাব্যথা কেন

আপডেট টাইম : ০২:৪৭:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শান্তিতে নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাইয়ের সঙ্গে ছবি তুলে বিপাকে পড়েছেন কানাডার কুইবেক অঙ্গরাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন দেখা দেয়, কেন নোবেলজয়ী পশ্চিমাদের আইকন হিসাবে খ্যাত নারী অধিকার কর্মী মালালার সাথে ছবি তুলে সমালোচিত হচ্ছেন ওই মন্ত্রী। আর কিছু না, পশ্চিমাদের সমালোচনার প্রধান টার্গেট মালালার ‘ওড়না’।

আলোচিত ওই ছবিতে দেখা যায়, কুইবেকের শিক্ষামন্ত্রী জ্যঁ-ফাঁসোয়া রবেয়ার্জের পাশে দাঁড়িয়ে আছে মাথায় উড়না পরিহিতা মালালা ইউসুফজাই। মালালার সঙ্গে কুইবেকের শিক্ষামন্ত্রীর দেখা হয় ফ্রান্সে। সেখানেই ছবিটি তোলা হয়েছিল। জানা যায়, মালালার সঙ্গে ওই সাক্ষাতে শিক্ষা ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ে কথা হয়েছে তাঁর।

গত মাসে কুইবেকের প্রাদেশিক সরকার ‘হিজাব’ নিষিদ্ধ করে একটি আইন পাস করে। এই আইনের একজন ঘোর সমর্থক ছিলেন এই মন্ত্রী। এই আইনের সমর্থন করে তিনি কিভাবে উড়না পরিহিতা মালালার সাথে হাসিমুখে ছবি তুলেছেন এই নিয়ে পশ্চিমের লোকজন সমালোচনা করছেন। এমনকি সামাজিক মাধ্যমগুলোতে বিভিন্নজন তাকে ‘প্রতারক’ বলেও আখ্যায়িত করছেন।

এ ঘটনায়  ইসলামের যে কোনো নিদর্শনের প্রতি বিশেষত ‘হিজাবের’ প্রতি পশ্চিমাদের ‘এ্যালার্জি’টা প্রকটভাবে ধরা পড়েছে। ইসলামের সাথে সম্পৃক্ত কোনো নিদর্শনের ধারক যদি তাদের কোনো তল্পিবাহকও হন, তাহলেও তার কোনো নিস্তার নেই।

এই যে মালালা, পশ্চিমাদের কাছে তিনি শুধু একজন ব্যক্তিই নন, একটি আদর্শ। পশ্চিমাবিশ্ব মালালাকে নারীবাদীদের আইকন হিসাবে উপস্থাপন করে থাকে। মালালার জাতীয় ও আন্তার্জাতিক পুরস্কার ও স্বীকৃতিও অনেক। জাতিসংঘ থেকে হোয়ইট হাউজ সব জায়গায় তার গ্রহণযোগ্যতা। সর্বোপরি, পশ্চিমাদের নারী এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যে তিনি দেশে বিদেশে দিবানিশি কসরত করে যাচ্ছেন।

কিন্তু অবাক হওয়ার মত বিষয় হল, পশ্চিমাদের জন্যে এত ত্যাগ স্বীকার করেও মালালা জাতে উঠতে পারলেন না। মাথায় একটা ‘কাপড়ের’ টুকরা থাকার কারণে নিন্দা সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ভন্ডামি, প্রতারণা বলে গালি দেওয়া হচ্ছে মন্ত্রীকে।

এ ঘটনা আমাদের চোখে আবারও আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, কুরআনের ভাষায়-‘ ইহুদি খৃস্টানরা তোমার প্রতি ততক্ষণ পর্যন্ত খুশী হবে যতক্ষণ না তুমি তাদের ধর্ম গ্রহণ করবে।’

মালালার সঙ্গে কুইবেকের শিক্ষামন্ত্রীর ছবিটি  সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর টুইটারে সালিম নাদিম নামের এক সাংবাদিক জ্যঁ-ফাঁসোয়া রবেয়ার্জের কাছে জানতে চান—মালালা যদি কুইবেকে পড়াতে চান, তাহলে কী পদক্ষেপ নেবেন তিনি?

উত্তরে জ্যঁ-ফাঁসোয়া রবেয়ার্জ যা বললেন, তার খোলাসা হল, যদি মালালা কুইবেকে শিক্ষকতা করতে চান তাহলে তাকে ‘উড়না’ খুলেই শিক্ষকতা করতে হবে।

মন্ত্রীর কথায় মালালা কী প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন তা এখনো জানা যায়নি। তবে ইতিমধ্যে অনেকে সংশয় প্রকাশ করা শুরু করেছেন, মালালা যদি মন্ত্রীর কথামত ‘উড়না’ খুলেও সেখানে শিক্ষকতা শুরু করেন তাহলেও তিনি পশ্চিমাদের জাতে উঠতে পারবেন না।