ঈদের ছুটিতে সিলেট ভ্রমণ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ এবারের ঈদের ছুটিটা বেশ লম্বা। মাঝে এক দিন ছুটি নিতে পারলে ৩১ মে থেকে আগামী ৮ জুন পর্যন্ত নয় দিনের একটি লম্বা ছুটি পাওয়া যাবে। ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে সিলেট হতে পারে আপনার পছন্দের গন্তব্যগুলোর একটি।

মালনীছড়া চা-বাগান
বাংলাদেশের বর্ষার রানী বলা হয় সিলেটকে। বর্ষায় সিলেটের আকর্ষণ বেড়ে যায় বহুগুণে। চা-বাগান, বন, স্বচ্ছ পানির নদী, ঝরনা সবকিছু মিলে সিলেট ছুটি কাটানোর আদর্শ জায়গা। ভ্রমণপিয়াসীদের কাছে সিলেটের প্রথম আকর্ষণ চা-বাগান। মালনীছড়া চা-বাগান দুটিই সিলেট শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত। শহরের কেন্দ্রস্থল জিন্দাবাজার পয়েন্ট থেকে গাড়িতে মাত্র ১৫ মিনিটের পথ। সিলেট শহর থেকে রিকশাযোগে অথবা অটোরিকশা বা গাড়িতে বিমানবন্দর রোডে চা-বাগানটি পাওয়া যাবে। গাড়িতে যেতে আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে ১০ মিনিটের পথ। রিকশাযোগে যেতে আধাঘণ্টা লাগবে।

বিছানাকান্দি
পান্থমাই ভ্রমণ শেষে আপনার এবারের গন্তব্য বিছানাকান্দি। প্রকৃতির রাজকন্যা বিছানাকান্দির দিকে নৌকা যতই এগোতে থাকবে, ততই চারপাশের সৌন্দর্যটা যেন উপচে পড়বে আপনার ওপর। মুগ্ধতা ততটাই বেড়ে যাবে। এ মুহূর্তগুলো পুরো ভ্রমণটাকে আরও স্মরণীয় করে রাখবে। একটু দূরের দুই পাশে মেঘে ঢাকা মেঘালয় পাহাড় যেন স্বাগত জানাবে আপনাকে। অবাক বিস্ময়ে বিছানাকান্দির রূপ দেখতে দেখতে এগোতে থাকবেন মূল স্পটের দিকে। গিয়ে এবার জলকেলিতে মেতে ওঠার পালা। বিছানাকান্দিতে রয়েছে ছোট-বড় অগণিত পাথরের সমারোহ।

চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অজস্র পাথর, দেখে যেন মনে হয় পুরো এলাকাটাই পাথরের বিছানা। পিয়াইন নদীর অগণিত পাথরের মাঝে আপনাকে হাঁটতে হবে সাবধানে পা ফেলে। একটু অসাবধানতার ফলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। পানির গভীরতা কম হলেও পাথরের মাঝে আপনার ভ্রমণকে করবে আরও রোমাঞ্চিত। একটু পরপর বিজিবি সদস্যদের সতর্কবাণী আপনাকে এনে দেবে আরও থ্রিলার। জলপাথরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে নিজের একটা ছবি হলেও ফ্রেমবন্দি করে রাখতে ব্যস্ত হবেন। ওপরে নীল আকাশ ঠিকরে পড়েছে জলে। জল হয়েছে নীলাভ। ডানে-বাঁয়ে সামনে মেঘালয়ের উঁচু পাহাড়।

রাতারগুল
জলের মধ্যে ভেসে উঠেছে অরণ্য। তাই এটি জলারণ্য। নাম রাতারগুল। রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট। বাংলাদেশের একমাত্র জলাবন যা সিলেটের সুন্দরবন নামে খ্যাত। নিচে পানি ওপরে গাছ। নৌকা করে রাতারগুল ঘুরে বেড়ানো তো হয়ে উঠতে পারে দারুণ এক অ্যাডভেঞ্চার। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নে গুয়াইন নদীর দক্ষিণে এই বনের অবস্থান। সিলেট শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার। রাতারগুলে জলে কোমর ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বৃক্ষদের দেখতে পর্যটকরা ভিড় জমান ভরা বর্ষা মৌসুমে। বনময় ঘুরে বেড়ানো যায় নৌকায় চড়ে। ডিঙিতে চড়ে বনের ভেতর ঘুরতে ঘুরতে দেখতে পাবেন দেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট। জলমগ্ন বলে এই বনে সাপের আবাসটাই বেশি। বানরও আছে বনে, তবে সংখ্যায় কম। তা ছাড়া চোখে পড়বে সাদা বক, কানা বক, মাছরাঙা, টিয়া, বুলবুলি, পানকৌড়ি, ঢুপি, ঘুঘু, চিলসহ নানা জাতের পাখি। আর জলাবনের গহিন অরণ্য। সেখানে আপনার জন্য অপেক্ষমাণ অবারিত অদ্ভুত এক বন, যা হয়তো আপনি এত দিন কেবল অ্যামাজন নিয়ে তৈরি সিনেমাতেই দেখেছেন!

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর