বিদেশে কাঁচা পাট রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ কাঁচা পাট মজুদ থাকা সত্ত্বেও কোনো রকম পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হটাৎ বিদেশে কাঁচা পাট রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার।

রফতানিকারকদের সঙ্গে আলোচনা ব্যতীত কাঁচা পাট রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় চরম বিপাকে পড়েছেন রফতানিকারকসহ সংশ্লিষ্টরা। দেশে বর্তমানে ১০ হাজার টন রফতানিযোগ্য পাট মজুদ রয়েছে এবং প্রতি টনের মূল্য পাঁচশ ডলার বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের-বিজেএ’র নেতৃবৃন্দ।

এদিকে, বিদেশে কাঁচা পাট রফতানি বন্ধের আদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করা না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এ সংগঠনের নেতারা।

পাশাপাশি বিদেশে কাঁচা পাট রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্তে দৌলতপুর-খুলনার জুট প্রেসের প্রায় ২০ হাজার জুট প্রেস শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে হাহাকার বিরাজ করছে। পাল্টে যাচ্ছে খুলনার দৌলতপুরে শ্রমিকের কোলাহলের চিত্র।

জুট প্রেসে কাজ না থাকায় ২০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন বলেও জানান দৌলতপুর-খুলনা জুট প্রেস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ। রফতানি বন্ধের ফলে প্রেস মালিকদের ওপর দিন দিন দেনার বোঝা বৃদ্ধির পাশাপাশি মানবিক সংকটের আশঙ্কা করছেন সবাই।

বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক এফ এম সাইফুজ্জামান মুকুল বলেন, আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই সরকার কাঁচা পাট রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাঁচা পাট রফতানিকারকদের বিরাজমান সমস্যা সমাধানকল্পে ও তাদের ব্যবসায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় হতে গত বছরের ২৪ এপ্রিল একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তারই প্রেক্ষিতে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে কাঁচা পাট রফতানিকারকরা সবেমাত্র ব্যবসা শুরু করেছেন। এরই মধ্যে হঠাৎ করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় গত ১৮ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আন-কাট বিটিআর এবং বিডব্লিউআর গ্রেডের কাঁচা পাট রফতানি বন্ধের আদেশ জারি করে।

তিনি বলেন, এ সিদ্ধান্তের কারণে আমারা একদিকে যেমন ব্যবসায়িকভাবে চরম আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত হব। অন্যদিকে বৈদেশিক ক্রেতা হারাব এবং আমরাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন পাট খাতও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা এবং দেশের সরকারি ও বেসরকারি জুট মিলগুলো পাটের গোড়া কাটার ফলে যে কাটিং বের হয় সেটা সম্পূর্ণ রূপে বিদেশে রফতানি করা যায় না। এমনকি দেশের জুট মিলগুলোও সেই কাটিংয়ের সম্পূর্ণ অংশ ব্যবহার করতে পারে না। এরপর আমাদের যদি আন-কাট বিটিআর এবং বিডব্লিউআর রফতানি না করে সকল পাট গোড়া কেটে রফতানি করতে হয়। তখন যে পরিমাণে কাটিং বের হবে, সেই কাটিং বিক্রির কোনো জায়গা থাকবে না। আর কাটিংয়ের মূল্য হ্রাস পাবে এবং তা অবিক্রিত থাকার ফলে পচন ধরে নষ্ট হবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হব আমরা।

বিজেএ’র চেয়ারম্যান শেখ সৈয়দ আলী, ভাইস চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সোবহান শরীফ, সাবেক চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমান শরীফ, এ এম হারুন অর রশীদ, আলহাজ মো. টিপু সুলতান, হাফিজুর রহমান, মো. সাইফুজ্জামান মুকুল, শেখ রুহুল আমিন, মো. কুতুব উদ্দিন এ বিষয়ে জানান, অবিলম্বে কাঁচা পাট রফতানি চালু করা না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর