চুরির টাকায় গাড়ি কিনেছিলেন জনতা ব্যাংকের সেই কর্মকর্তা

চুরির টাকা দিয়ে গাড়ি কিনেছিলেন জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা রাজিবুল হাসান। এতে তিনি খরচ করেছিলেন ১৫ লাখ টাকা। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ধরা পড়ার পর চুরির পুরো টাকাই ফেরত দিতে হচ্ছে তাকে। নগদ যে টাকা উদ্ধার করা হয়েছে এর বাইরে স্ত্রীর নামে কেনা একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা বুঝে নিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

গতকাল ওই কর্মকর্তা অফিসে গেলেও বিকালে তাকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে। রাজিবুল হাসানের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত দেড় কোটি টাকা উদ্ধার করা গেছে নগদ। বাকি ৪০ লাখ টাকা বাবদ তার ধানমন্ডির ফ্ল্যাটটি নিয়ে নিচ্ছে ব্যাংক।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ দিনের পরিকল্পনা হলেও গত বছরের অক্টোবর থেকে টাকা সরাতে থাকে রাজিবুল হাসান। দুটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সে টাকা সরায়। প্রথম অ্যাকাউন্ট খোলে ২০১৫ সালের অক্টোবরে।

এখানে রাখা হয় ৫৮ লাখ টাকা। দ্বিতীয় অ্যাকাউন্ট খোলে চলতি বছরের ১২ই জানুয়ারি। এখানে রাখা হয় ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

ওদিকে জনতা ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. মুকুল হোসেন প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সমপ্রতি জনতা ব্যাংক লিমিটেডের লোকাল অফিসের এক্সিকিউটিভ অফিসার রাজীবুল হাসান কর্তৃক ১,৯০,০০,০০০ (এক কোটি নব্বই লক্ষ) টাকার আত্মসাতের বিষয়টি এমডিস ভিজিল্যান্স ডিপার্টমেন্টের নজরে আসে।

বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে অদ্য ২২/০৩/২০১৬ তারিখে উক্ত কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। উক্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে এ পর্যন্ত নগদ ও এফডিআর (নগদায়নযোগ্য) মোট ১,৫৮,৯০,০০০ (এক কোটি আটান্ন লক্ষ নব্বই হাজার) টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। অবশিষ্ট টাকা উদ্ধারের লক্ষ্যে অভিযুক্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে একটি অগ্রিম চেকসহ তার স্ত্রীর নামে রায়ের বাজারে অবস্থিত একটি ফ্ল্যাটের মূল দলিল ব্যাংকের জিম্মায় নেয়া হয়েছে।

এ ছাড়াও সার্বিক বিষয়ে তার কাছ থেকে একটি অঙ্গীকারনামাও নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সর্বোচ্চ সতর্কতাসহ দাপ্তরিক কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ইতিমধ্যে ২২/০৩/১৬ তারিখে মতিঝিল থানায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে (মামলা নম্বর- ২১)।

এ ছাড়া আরও কোনো আত্মসাৎ বা অনিয়ম হয়েছে কিনা এ বিষয়ে ব্যাংকের ভিজিল্যান্স ডিপার্টমেন্ট এবং অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ কর্তৃক পৃথকভাবে তদন্ত কার্য অব্যাহত আছে। আলোচ্য ঘটনায় ব্যাংকের কোনো গ্রাহকের আমানত হিসাব হতে কোনো অর্থ আত্মসাৎ হয়নি এবং শাখার সকল গ্রাহকের স্বার্থ সুরক্ষিত আছে বলে দাবি করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর