ঢাকা ০১:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিঙ্গেলরা সবচেয়ে বেশি সুখী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১৬:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ এপ্রিল ২০১৯
  • ২৫৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্তমানে ডেটিং অ্যাপ আর ওয়েবসাইটে বাজার সয়লাব। নিজেদের জীবনসঙ্গী খুঁজে নিতে সবাই ব্যস্ত। পৃথিবীজুড়ে সবাই খুঁজছেন তাদের নিখুঁত মনের মানুষটিকে। সবাই যখন সঙ্গীকে নিয়ে ঘুরছেন, উপভোগ করছেন জীবনটাকে, আপনি হয়ত তখন নিজের সিঙ্গেল জীবন নিয়ে হাপিত্যেশ করে যাচ্ছেন। একা থাকাটা বেদনার, কারণটা কারো অজানা নয়। আর যখন বন্ধুরা আপনার সিঙ্গেল জীবন নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে, তখন কষ্টটা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কিন্তু সময় বদলাচ্ছে, এই সহস্রাব্দের লোকেরা ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা করে, এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় নিজেকে। এর মাঝে কাউকে কথা দেয়া না দেয়া নিয়ে হয়ত তারা ভীত থাকে।

সে যাই হোক, আপনি কি জানেন বিজ্ঞান কি বলে? সিঙ্গেল থাকার যে কত সুবিধা আছে, সেটাকি আপনার জানা আছে? হ্যাঁ, আপনি ঠিক-ই শুনছেন। সিঙ্গেল জীবন কোনো অভিশাপ নয়, বরং বিজ্ঞানের মতে এটিতে রয়েছে আশীর্বাদ। সমাজ আমাদেরকে শিখিয়েছে, জীবন সুখের হয় যখন আপনার একজন সঙ্গী থাকে, কিন্তু বিজ্ঞানতো কখনো মিথ্যা বলেনা। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী এরিক ক্লাইনেনবার্থ উল্লেখ করেন যে, সিঙ্গেল লোকেরা সামাজিকভাবে বেশি সক্রিয় থাকেন অন্য সবার থেকে। এমনকি তিনি আরো বলেন যে, যেসব শহরে সিঙ্গেল মানুষ বেশি সে স্থানের লোক সমাগম এবং লোক সংস্কৃতি অনেক উন্নত।

প্রথমত, সিঙ্গেল থাকার কারণে আপনি চারদিকে একটি সুন্দর সামাজিক জাল বা নেটওয়ার্ক তৈরি করেন। সেইসঙ্গে সকলের সঙ্গে অনেক শক্তিশালী একটি বন্ধন আপনি ধরে রাখতে পারেন। এটি নিছক মুখের কথা নয়। নাতালিয়া সারকিসিয়ান এবং নাওমি গারস্তেল নামের দু’জন সমাজবিজ্ঞানী এটি তাদের গবেষণায় উদ্ঘাটন করেন। দ্বিতীয়ত, একা থাকলে আপনার শারীরিক ফিটনেস ভাল থাকে। বয়স ১৮ বছর থেকে ৬৪ বছর, এমন ১৩ হাজার লোকের মধ্যে চালানো এক জরিপে দেখা যায়, যারা তাদের জীবনে কখনই বিয়ে করেননি তারা অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন এবং নিয়মিত শরীর চর্চা করে থাকেন এবং সর্বশেষ, যদি আপনি একাকী অনুভব করেন, এবং ছুটির দিনগুলো একা একাই কাটান তাতে মন খারাপ করার কিছুই নেই।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সিঙ্গেল ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত পর্যায়ের উন্নয়ন অন্যান্যদের থেকে বেশি। কারন তারা একা সময় কাটানোর সুযোগ থেকে নিজেদের চিন্তার বিকাশ ঘটানোর প্রচুর সুবিধা পেয়ে থাকেন। ১৯৯৮ এ মার্কিন প্রতিষ্ঠান, ন্যাশনাল সার্ভে অব ফ্যামিলিস এন্ড হাউজহোল্ডস, এর এক গবেষণাপত্র থেকে উপলব্ধিত হয় যে, সিঙ্গেল ব্যক্তিমাত্রই অধিকতর ব্যক্তিগত উন্নয়নের অভিজ্ঞতার বাহক, যা সহস্রাব্দের মানুষের জন্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে বলা হয়েছে, ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে -ব্যক্তিস্বাধীনতা, ব্যক্তিগত বিকাশ বিবাহিতদের থেকে অবিবাহিত বা সিঙ্গেলদের ক্ষেত্রে বেশি ঘটে থাকে’।

মনোবিজ্ঞানী এমি মরিন তার একটি প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘একা সময়, একাকী-ই হতে হবে এমন নয়”। তিনি আরো লিখেছেন, একাকী সময় মানুষকে বেশি কার্যক্ষম করে তোলে’। তাই, সিঙ্গেল জীবন নিয়ে হতাশা না করে, নিজেকে সময় দিন। একাকী সময়ে বই পড়ুন, মুভি দেখুন কিংবা বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডেও অংশ নিতে পারেন। এতে করে যেমন আপনার সময় কাটবে, তেমনি ব্যক্তিমর্যাদার বিকাশও ঘটবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

সিঙ্গেলরা সবচেয়ে বেশি সুখী

আপডেট টাইম : ০১:১৬:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ এপ্রিল ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বর্তমানে ডেটিং অ্যাপ আর ওয়েবসাইটে বাজার সয়লাব। নিজেদের জীবনসঙ্গী খুঁজে নিতে সবাই ব্যস্ত। পৃথিবীজুড়ে সবাই খুঁজছেন তাদের নিখুঁত মনের মানুষটিকে। সবাই যখন সঙ্গীকে নিয়ে ঘুরছেন, উপভোগ করছেন জীবনটাকে, আপনি হয়ত তখন নিজের সিঙ্গেল জীবন নিয়ে হাপিত্যেশ করে যাচ্ছেন। একা থাকাটা বেদনার, কারণটা কারো অজানা নয়। আর যখন বন্ধুরা আপনার সিঙ্গেল জীবন নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে, তখন কষ্টটা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কিন্তু সময় বদলাচ্ছে, এই সহস্রাব্দের লোকেরা ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা করে, এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় নিজেকে। এর মাঝে কাউকে কথা দেয়া না দেয়া নিয়ে হয়ত তারা ভীত থাকে।

সে যাই হোক, আপনি কি জানেন বিজ্ঞান কি বলে? সিঙ্গেল থাকার যে কত সুবিধা আছে, সেটাকি আপনার জানা আছে? হ্যাঁ, আপনি ঠিক-ই শুনছেন। সিঙ্গেল জীবন কোনো অভিশাপ নয়, বরং বিজ্ঞানের মতে এটিতে রয়েছে আশীর্বাদ। সমাজ আমাদেরকে শিখিয়েছে, জীবন সুখের হয় যখন আপনার একজন সঙ্গী থাকে, কিন্তু বিজ্ঞানতো কখনো মিথ্যা বলেনা। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী এরিক ক্লাইনেনবার্থ উল্লেখ করেন যে, সিঙ্গেল লোকেরা সামাজিকভাবে বেশি সক্রিয় থাকেন অন্য সবার থেকে। এমনকি তিনি আরো বলেন যে, যেসব শহরে সিঙ্গেল মানুষ বেশি সে স্থানের লোক সমাগম এবং লোক সংস্কৃতি অনেক উন্নত।

প্রথমত, সিঙ্গেল থাকার কারণে আপনি চারদিকে একটি সুন্দর সামাজিক জাল বা নেটওয়ার্ক তৈরি করেন। সেইসঙ্গে সকলের সঙ্গে অনেক শক্তিশালী একটি বন্ধন আপনি ধরে রাখতে পারেন। এটি নিছক মুখের কথা নয়। নাতালিয়া সারকিসিয়ান এবং নাওমি গারস্তেল নামের দু’জন সমাজবিজ্ঞানী এটি তাদের গবেষণায় উদ্ঘাটন করেন। দ্বিতীয়ত, একা থাকলে আপনার শারীরিক ফিটনেস ভাল থাকে। বয়স ১৮ বছর থেকে ৬৪ বছর, এমন ১৩ হাজার লোকের মধ্যে চালানো এক জরিপে দেখা যায়, যারা তাদের জীবনে কখনই বিয়ে করেননি তারা অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন এবং নিয়মিত শরীর চর্চা করে থাকেন এবং সর্বশেষ, যদি আপনি একাকী অনুভব করেন, এবং ছুটির দিনগুলো একা একাই কাটান তাতে মন খারাপ করার কিছুই নেই।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, সিঙ্গেল ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত পর্যায়ের উন্নয়ন অন্যান্যদের থেকে বেশি। কারন তারা একা সময় কাটানোর সুযোগ থেকে নিজেদের চিন্তার বিকাশ ঘটানোর প্রচুর সুবিধা পেয়ে থাকেন। ১৯৯৮ এ মার্কিন প্রতিষ্ঠান, ন্যাশনাল সার্ভে অব ফ্যামিলিস এন্ড হাউজহোল্ডস, এর এক গবেষণাপত্র থেকে উপলব্ধিত হয় যে, সিঙ্গেল ব্যক্তিমাত্রই অধিকতর ব্যক্তিগত উন্নয়নের অভিজ্ঞতার বাহক, যা সহস্রাব্দের মানুষের জন্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে বলা হয়েছে, ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে -ব্যক্তিস্বাধীনতা, ব্যক্তিগত বিকাশ বিবাহিতদের থেকে অবিবাহিত বা সিঙ্গেলদের ক্ষেত্রে বেশি ঘটে থাকে’।

মনোবিজ্ঞানী এমি মরিন তার একটি প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘একা সময়, একাকী-ই হতে হবে এমন নয়”। তিনি আরো লিখেছেন, একাকী সময় মানুষকে বেশি কার্যক্ষম করে তোলে’। তাই, সিঙ্গেল জীবন নিয়ে হতাশা না করে, নিজেকে সময় দিন। একাকী সময়ে বই পড়ুন, মুভি দেখুন কিংবা বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডেও অংশ নিতে পারেন। এতে করে যেমন আপনার সময় কাটবে, তেমনি ব্যক্তিমর্যাদার বিকাশও ঘটবে।