ঢাকা ১১:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তদন্ত শেষে ম্যুলারের প্রতিবেদন পেশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৬:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০১৯
  • ২২০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্প ক্যাম্পেইনের আঁতাত প্রশ্নে প্রায় দুই বছর ধরে তদন্তের পর বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট ম্যুলার অবশেষে তাঁর চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করেছেন। গতকাল শুক্রবার অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বার জানিয়েছেন, রবার্ট ম্যুলারের তদন্ত শেষ হয়েছে এবং প্রস্তুত চূড়ান্ত প্রতিবেদন তাঁর হাতে পৌঁছেছে। এই সপ্তাহান্তের মধ্যেই তিনি এই প্রতিবেদনের মূল বক্তব্যের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ কংগ্রেসের উদ্দেশে পাঠাবেন।

প্রতিবেদনে কী আছে, সে কথা বিল বার ছাড়া অন্য কেউ এখনো জানেন না; সম্ভবত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও নন। বিচার বিভাগের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ম্যুলার নতুন কোনো অভিযোগনামা পেশ করবেন না। এ কথার অর্থ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বা তাঁর পরিবারের কেউ আপাতত কোনো বেআইনি কার্যকলাপের জন্য অভিযুক্ত হচ্ছেন না। এটি ট্রাম্পের জন্য স্বস্তির সংবাদ। প্রথম থেকেই তিনি বলে আসছেন, পুরো তদন্ত কমিটি ডেমোক্র্যাটদের সাজানো একটি চক্রান্ত, কারণ রাশিয়ার সঙ্গে কোনো আঁতাতে তিনি জড়িত নন।

আঁতাতের বিষয়টি ছাড়াও বিচারপ্রক্রিয়ায় ট্রাম্প কোনো বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন কি না, ম্যুলার তাঁর তদন্তে সেটাও তলিয়ে দেখেছেন। উল্লেখ্য, রাশিয়া প্রশ্নে কোনো তদন্ত না করার অনুরোধ অগ্রাহ্য করায় ট্রাম্প এফবিআইয়ের প্রধান জেমস কমিকে পদচ্যুত করলে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস তাঁর মন্ত্রণালয়ের নীতিমালার অধীনে সাবেক এফবিআইপ্রধান রবার্ট ম্যুলারকে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেন।

বার এক চিঠিতে কংগ্রেসকে জানিয়েছেন, প্রতিবেদনটির ব্যাপারে তিনি যত দূর সম্ভব স্বচ্ছ থাকতে চান। তিনি এ কথাও জানিয়েছেন, এই তদন্তপ্রক্রিয়ার কোনো পর্যায়েই বিচার বিভাগ ম্যুলারের কাজে কোনো বাধা সৃষ্টি করেনি।

ম্যুলার তাঁর তদন্তপ্রক্রিয়ায় ট্রাম্প ক্যাম্পেইনের সঙ্গে জড়িত এমন ৩৪ জনের ব্যাপারের অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন এবং পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। এঁদের মধ্যে ট্রাম্পের সাবেক ক্যাম্পেইন চেয়ারম্যান পল ম্যানাফোর্টও রয়েছেন। কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারের অভিযোগে তাঁর ইতিমধ্যে প্রায় সাড়ে সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। দুই ডজনের মতো রুশ নাগরিকের বিরুদ্ধেও ম্যুলার অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন, তবে অনুপস্থিত থাকার কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ডেমোক্রেটিক নেতৃত্ব দাবি করেছে, তারা অবিকৃত অবস্থায় পুরো ম্যুলার প্রতিবেদন পেতে চায়। স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও সিনেটে ডেমোক্রেটিক নেতা চাক শুমার বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব সম্পূর্ণ প্রতিবেদন ও তদন্তকালে সংগৃহীত তথ্যাদি কংগ্রেসের হাতে তুলে দিতে হবে। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বার সে অনুরোধ মানবেন—এ কথা ভাবার কোনো কারণ নেই।

পুরো প্রতিবেদনটি সব নাগরিকের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি করলেও তা পালনে বিচার বিভাগকে বাধ্য করার কোনো শক্ত হাতিয়ার ডেমোক্র্যাটদের হাতে নেই। তাঁরা বড়জোর এ প্রতিবেদন চেয়ে অথবা ম্যুলারকে সাক্ষী দিতে বাধ্য করতে সমন জারি করতে পারেন। সেই সমন উপেক্ষা করলে তাঁদের এ ব্যাপারে আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে।

ম্যুলার তদন্ত শেষ হলেও ট্রাম্প ও তাঁর সহযোগীদের আইনি ঝামেলা অবশ্য এখানেই শেষ হচ্ছে না। নিউইয়র্কের একটি ফেডারেল আদালতে ট্রাম্পের ব্যবসায়িক লেনদেন ও আর্থিক অনিয়ম নিয়ে যে শুনানি চলছে, তা অব্যাহত থাকবে। এই আদালতের বিবেচনাধীন বিষয়ের অন্যতম হলো ২০১৬ সালের নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলকে মুখবন্ধ রাখার জন্য নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করে অর্থ প্রদান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

তদন্ত শেষে ম্যুলারের প্রতিবেদন পেশ

আপডেট টাইম : ১২:১৬:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্প ক্যাম্পেইনের আঁতাত প্রশ্নে প্রায় দুই বছর ধরে তদন্তের পর বিশেষ কৌঁসুলি রবার্ট ম্যুলার অবশেষে তাঁর চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করেছেন। গতকাল শুক্রবার অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বার জানিয়েছেন, রবার্ট ম্যুলারের তদন্ত শেষ হয়েছে এবং প্রস্তুত চূড়ান্ত প্রতিবেদন তাঁর হাতে পৌঁছেছে। এই সপ্তাহান্তের মধ্যেই তিনি এই প্রতিবেদনের মূল বক্তব্যের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ কংগ্রেসের উদ্দেশে পাঠাবেন।

প্রতিবেদনে কী আছে, সে কথা বিল বার ছাড়া অন্য কেউ এখনো জানেন না; সম্ভবত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও নন। বিচার বিভাগের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ম্যুলার নতুন কোনো অভিযোগনামা পেশ করবেন না। এ কথার অর্থ, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বা তাঁর পরিবারের কেউ আপাতত কোনো বেআইনি কার্যকলাপের জন্য অভিযুক্ত হচ্ছেন না। এটি ট্রাম্পের জন্য স্বস্তির সংবাদ। প্রথম থেকেই তিনি বলে আসছেন, পুরো তদন্ত কমিটি ডেমোক্র্যাটদের সাজানো একটি চক্রান্ত, কারণ রাশিয়ার সঙ্গে কোনো আঁতাতে তিনি জড়িত নন।

আঁতাতের বিষয়টি ছাড়াও বিচারপ্রক্রিয়ায় ট্রাম্প কোনো বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন কি না, ম্যুলার তাঁর তদন্তে সেটাও তলিয়ে দেখেছেন। উল্লেখ্য, রাশিয়া প্রশ্নে কোনো তদন্ত না করার অনুরোধ অগ্রাহ্য করায় ট্রাম্প এফবিআইয়ের প্রধান জেমস কমিকে পদচ্যুত করলে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনস তাঁর মন্ত্রণালয়ের নীতিমালার অধীনে সাবেক এফবিআইপ্রধান রবার্ট ম্যুলারকে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেন।

বার এক চিঠিতে কংগ্রেসকে জানিয়েছেন, প্রতিবেদনটির ব্যাপারে তিনি যত দূর সম্ভব স্বচ্ছ থাকতে চান। তিনি এ কথাও জানিয়েছেন, এই তদন্তপ্রক্রিয়ার কোনো পর্যায়েই বিচার বিভাগ ম্যুলারের কাজে কোনো বাধা সৃষ্টি করেনি।

ম্যুলার তাঁর তদন্তপ্রক্রিয়ায় ট্রাম্প ক্যাম্পেইনের সঙ্গে জড়িত এমন ৩৪ জনের ব্যাপারের অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন এবং পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। এঁদের মধ্যে ট্রাম্পের সাবেক ক্যাম্পেইন চেয়ারম্যান পল ম্যানাফোর্টও রয়েছেন। কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারের অভিযোগে তাঁর ইতিমধ্যে প্রায় সাড়ে সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। দুই ডজনের মতো রুশ নাগরিকের বিরুদ্ধেও ম্যুলার অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন, তবে অনুপস্থিত থাকার কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ডেমোক্রেটিক নেতৃত্ব দাবি করেছে, তারা অবিকৃত অবস্থায় পুরো ম্যুলার প্রতিবেদন পেতে চায়। স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও সিনেটে ডেমোক্রেটিক নেতা চাক শুমার বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব সম্পূর্ণ প্রতিবেদন ও তদন্তকালে সংগৃহীত তথ্যাদি কংগ্রেসের হাতে তুলে দিতে হবে। তবে অ্যাটর্নি জেনারেল বিল বার সে অনুরোধ মানবেন—এ কথা ভাবার কোনো কারণ নেই।

পুরো প্রতিবেদনটি সব নাগরিকের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি করলেও তা পালনে বিচার বিভাগকে বাধ্য করার কোনো শক্ত হাতিয়ার ডেমোক্র্যাটদের হাতে নেই। তাঁরা বড়জোর এ প্রতিবেদন চেয়ে অথবা ম্যুলারকে সাক্ষী দিতে বাধ্য করতে সমন জারি করতে পারেন। সেই সমন উপেক্ষা করলে তাঁদের এ ব্যাপারে আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে।

ম্যুলার তদন্ত শেষ হলেও ট্রাম্প ও তাঁর সহযোগীদের আইনি ঝামেলা অবশ্য এখানেই শেষ হচ্ছে না। নিউইয়র্কের একটি ফেডারেল আদালতে ট্রাম্পের ব্যবসায়িক লেনদেন ও আর্থিক অনিয়ম নিয়ে যে শুনানি চলছে, তা অব্যাহত থাকবে। এই আদালতের বিবেচনাধীন বিষয়ের অন্যতম হলো ২০১৬ সালের নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলকে মুখবন্ধ রাখার জন্য নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করে অর্থ প্রদান।