ঢাকা ০৭:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

খেলা শুরুর আগেই খেলোয়াড়েরা মাঠ ছেড়ে পালিয়েছে, নারায়ণগঞ্জে ভিপি নুর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৬:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪
  • ১০ বার

খেলা শুরুর আগেই খেলোয়াড়েরা মাঠ ছেড়ে পালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ভিপি নুরুল হক নুর। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি এলাকায় আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নুরুল হক নুর বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ওসমান পরিবারের দাপটে এই নারায়ণগঞ্জে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জে যা হয়েছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঘৃণিত অধ্যায়। মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে কীভাবে নির্মমভাবে হত্যা করেছে এই ওসমান পরিবারের লোকেরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে সেভেন মার্ডারের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। এসব ঘটনা নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের মানুষ দেখেছে এবং জানে। তারা খেলা হবে হুংকার দিয়েছিল। কিন্তু খেলা শুরু হওয়ার আগেই খেলোয়াড়েরা মাঠ ছেড়ে পালিয়েছে।’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে যে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিল, তার বিরুদ্ধে একজন ব্যক্তি সব সময় প্রতিবাদ করেছিলেন, তিনি হচ্ছেন নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি। তিনি সব সময় তাঁর ছেলের হত্যার বিচারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এটি শুধু একটি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিই নয়, এটি নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের ত্রাসের বিরুদ্ধে একটি লড়াই ও সংগ্রামের প্রেরণা ছিল, সাধারণ মানুষের জন্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যে প্রতিরোধ গড়ে তোলার দরকার ছিল, সেটা সম্ভব হয়নি। বরং আমরা দেখেছি, রাজনৈতিক দলগুলোকে নানাভাবে টোপ দিয়ে বিভিন্ন রকম সুবিধা দিয়ে বিভক্ত করে রেখেছিল। আমরা যখন ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে বিএনপিসহ ৪২টি রাজনৈতিক দল যখন শেখ হাসিনার এই ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসানের জন্য এক দফা দাবিতে আন্দোলন করেছিলাম, তখন অনেক দল সেই দাবির পক্ষে রাজপথে নামেনি। শেখ হাসিনার সঙ্গে সমঝোতা করে এই ফ্যাসিবাদকে টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করেছে।’

ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, ‘আমরা চাই না আওয়ামী লীগের মতো আগামীর বাংলাদেশে আবার কেউ ফ্যাসিবাদ কায়েম করুক। কিন্তু পরিষ্কারভাবে দেখতে পাচ্ছি, কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের বাড়াবাড়ি কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদেরই প্রতিধ্বনি। আওয়ামী লীগের পতন হওয়ার পর চাঁদাবাজ-দখলদারেরা লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে ফুটপাত বলেন, দোকানপাট, মিল-ফ্যাক্টরি সেখানে কি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে? শুধু হাতবদল হয়েছে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, ‘বর্তমানে দেশের যে পরিস্থিতি, তাতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই অন্তর্বর্তী সরকারের হয়তো দুই বছরের মতো সময় লাগতে পারে। কিন্তু আমরা বলেছি, দুই-তিন বা এক বছর যা-ই লাগুক, রাষ্ট্র সংস্কার করে নতুন বাংলাদেশের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তাদের সে সময় আমরা দেব। ফ্যাসিবাদের ১৫ বছর যদি আমরা সহ্য করতে পারি, তাহলে এই সরকারকে কেন আমরা দুই বছর সময় দিতে পারব না? তবে অন্তর্বর্তী সরকারকেও লক্ষ্য রাখতে হবে, যেন তাদের বিরুদ্ধে জনরোষ তৈরি না হয়। কেননা, যেভাবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মানুষের যে ভোগান্তি—এগুলো নিরসন করতে না পারলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিও কিন্তু মানুষজন ফুঁসে উঠবে। সরকারকে সতর্ক করে বলছি, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করতে চাই। সকলের সহযোগিতা নিয়ে রাষ্ট্রে স্থিতিশীলতা আনুন। যে বিদ্যমান নৈরাজ্য চলছে, তা বন্ধ করুন। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ভিন্নমত ও বিরোধীদের কর্মকাণ্ডে বাধা দিচ্ছে, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে, হুমকি দিচ্ছে, হামলা করছে, তাদের উদ্দেশে একটি কথা বলতে চাই—আওয়ামী লীগ থেকে শিক্ষা নিন।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

মদনে লুৎফুজ্জামান বাবর’র মুক্তির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

খেলা শুরুর আগেই খেলোয়াড়েরা মাঠ ছেড়ে পালিয়েছে, নারায়ণগঞ্জে ভিপি নুর

আপডেট টাইম : ১০:৫৬:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪

খেলা শুরুর আগেই খেলোয়াড়েরা মাঠ ছেড়ে পালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ভিপি নুরুল হক নুর। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের ডিআইটি এলাকায় আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নুরুল হক নুর বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ওসমান পরিবারের দাপটে এই নারায়ণগঞ্জে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জে যা হয়েছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঘৃণিত অধ্যায়। মেধাবী ছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে কীভাবে নির্মমভাবে হত্যা করেছে এই ওসমান পরিবারের লোকেরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে সেভেন মার্ডারের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। এসব ঘটনা নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের মানুষ দেখেছে এবং জানে। তারা খেলা হবে হুংকার দিয়েছিল। কিন্তু খেলা শুরু হওয়ার আগেই খেলোয়াড়েরা মাঠ ছেড়ে পালিয়েছে।’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে যে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিল, তার বিরুদ্ধে একজন ব্যক্তি সব সময় প্রতিবাদ করেছিলেন, তিনি হচ্ছেন নিহত ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি। তিনি সব সময় তাঁর ছেলের হত্যার বিচারের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এটি শুধু একটি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিই নয়, এটি নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের ত্রাসের বিরুদ্ধে একটি লড়াই ও সংগ্রামের প্রেরণা ছিল, সাধারণ মানুষের জন্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি, জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যে প্রতিরোধ গড়ে তোলার দরকার ছিল, সেটা সম্ভব হয়নি। বরং আমরা দেখেছি, রাজনৈতিক দলগুলোকে নানাভাবে টোপ দিয়ে বিভিন্ন রকম সুবিধা দিয়ে বিভক্ত করে রেখেছিল। আমরা যখন ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে বিএনপিসহ ৪২টি রাজনৈতিক দল যখন শেখ হাসিনার এই ফ্যাসিস্ট শাসনের অবসানের জন্য এক দফা দাবিতে আন্দোলন করেছিলাম, তখন অনেক দল সেই দাবির পক্ষে রাজপথে নামেনি। শেখ হাসিনার সঙ্গে সমঝোতা করে এই ফ্যাসিবাদকে টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করেছে।’

ডাকসুর সাবেক এই ভিপি বলেন, ‘আমরা চাই না আওয়ামী লীগের মতো আগামীর বাংলাদেশে আবার কেউ ফ্যাসিবাদ কায়েম করুক। কিন্তু পরিষ্কারভাবে দেখতে পাচ্ছি, কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের বাড়াবাড়ি কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদেরই প্রতিধ্বনি। আওয়ামী লীগের পতন হওয়ার পর চাঁদাবাজ-দখলদারেরা লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে ফুটপাত বলেন, দোকানপাট, মিল-ফ্যাক্টরি সেখানে কি চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে? শুধু হাতবদল হয়েছে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, ‘বর্তমানে দেশের যে পরিস্থিতি, তাতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই অন্তর্বর্তী সরকারের হয়তো দুই বছরের মতো সময় লাগতে পারে। কিন্তু আমরা বলেছি, দুই-তিন বা এক বছর যা-ই লাগুক, রাষ্ট্র সংস্কার করে নতুন বাংলাদেশের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তাদের সে সময় আমরা দেব। ফ্যাসিবাদের ১৫ বছর যদি আমরা সহ্য করতে পারি, তাহলে এই সরকারকে কেন আমরা দুই বছর সময় দিতে পারব না? তবে অন্তর্বর্তী সরকারকেও লক্ষ্য রাখতে হবে, যেন তাদের বিরুদ্ধে জনরোষ তৈরি না হয়। কেননা, যেভাবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মানুষের যে ভোগান্তি—এগুলো নিরসন করতে না পারলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিও কিন্তু মানুষজন ফুঁসে উঠবে। সরকারকে সতর্ক করে বলছি, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করতে চাই। সকলের সহযোগিতা নিয়ে রাষ্ট্রে স্থিতিশীলতা আনুন। যে বিদ্যমান নৈরাজ্য চলছে, তা বন্ধ করুন। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ভিন্নমত ও বিরোধীদের কর্মকাণ্ডে বাধা দিচ্ছে, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে, হুমকি দিচ্ছে, হামলা করছে, তাদের উদ্দেশে একটি কথা বলতে চাই—আওয়ামী লীগ থেকে শিক্ষা নিন।’