হাওর বার্তা ডেস্কঃ শাল্লার বরাম হাওরে পুরাতন বাঁধের সংস্কার কাজ এখনও শেষ না হওয়ায় অরক্ষিত হয়ে পড়েছে হাজার হাজার হেক্টর বোরো ফসলি জমি। এই সব বাঁধের অর্থ বরাদ্দে ব্যপক কেলেংকারী হয়েছে বলে পিআইসির সদস্যরা ক্ষুব্ধ পতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন। তারা বলছেন, এই হাওরের ৩ টি বাঁধ ব্যতিত প্রায় সবগুলো পিআইসি গত বছরের পুরাতন বাঁধের উপর নতুন করে মাটি ফেলা হচ্ছে। কেউ অনেক লম্বা বাঁধ নিয়ে বরাদ্দ কম পেয়েছেন আবার অনেকেই কম কাজের জন্য বরাদ্দ পেয়েছেন বেশি। এলাকার লোকজন বলছেন, আমরা এলাকার মানুষ এইটুকু বুঝি কোন বাঁধে কত মাটির দরকার।
সোমবার সরজমিনে দেখা যায় বরাম হাওরের ২০,২১ নং পিআইসির প্রায় ৫০ মিটার বাঁধে মাটিই পড়েনি। ১৬ নং পিআইসির বাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। পিআইসি নং ১৭ বাঁধের কাজ এখনও শেষ হয়নি। ১৮ নং পিআইসির বাঁধের গুড়া থেকে মাটি তুলে বাঁধের অবস্থা নাজেহাল করা হয়েছে।
পিআইসি ভিত্তিক বরাদ্দে কেলেংকারীর কারণেও অনেক সমস্যা তৈরি হয়েছে। দেখা যায় পিআইসি নং ২০ বাঁধের পরিমাণ ৮৬০ মিটার, অর্থ বরাদ্দ সাড়ে ২৩ লাখ টাকা। আবার পাশের পিআইসি নং ২১ বাঁধের পরিমাণ ৬১৫ মিটার, অথচ সেখানেও বরাদ্দ সাড়ে ২৩ লাখ টাকা। ১৬ নং পিআইসি বাঁধের পরিমাণ মাত্র ১৭৫ মিটার হলেও বরাদ্দ ২৩ লাখ ১৯ হাজার ৫৯৭ টাকা। অথচ পাশের ১৪ নং পিআইসির বাঁধ ১০৫৫ মিটার জায়গায় মাত্র ১৫ লাখ ৮১ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অথচ প্রত্যেকটি বাঁধ পুরাতন বাঁধের উপর হচ্ছে। অনেক পিআইসির লোকজন বলছে যারা অফিসের সাথে লিয়াজু করেছে তারা ইচ্ছা মাফিক অর্থ বরাদ্দ পেয়েছে।
এনিয়ে বরাম হাওরের কৃষক মৌরাপুর গ্রামের শৈলেন্দ্র দাস বলেন ,বাঁধ নিয়ে আর কি বলি, এলাকার প্রত্যেকটি বাঁধে অর্থ বরাদ্দে কেলেংকারী হয়েছে। যারা মোটা অংকের টাকা দিয়েছে তাদের বাঁধ কতটুকু লম্বা কত ফুট মাটি লাগবে সেদিকে লক্ষ না করেই মনগড়া বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এতে করে এক দিকে যেমন সরকারের অর্থ জলে ঢালা হচ্ছে অন্য দিকে পিআইসিদের অনেকের পৌষ মাস আবার অনেকের সর্বনাশ হবে বলে তিনি জানান।
নারায়নপুর গ্রামের অবিনাশ দাস বলেন পিআইসি বন্টনের সময়ই কেলেংকারী হয়েছে। তিনি বলেন এবারের বাঁধে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নজর না দিলে যেটুকু বাঁধ হয়েছে সেটিও হতনা। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা দিয়ে পিআইসি হলে উপজেলা কমিটির কথা কেন শুনবে। তিনি আরো বলেন বড় বড় অফিসাররা বাঁধ দেখতে আসলে, যে দিকে মোটামোটি বাঁধ হয়েছে তাদেরকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়।