হাওর বার্তা ডেস্কঃ নিরাপত্তা ইস্যুতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমান নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান চলাচল কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বোয়িংয়ের পক্ষ থেকেও বিশ্বে ৭৩৭ ম্যাক্স বিমান চলাচল স্থগিত রাখার কথা জানানো হয়। পাঁচ মাসেরও কম সময়ের মধ্যে দুইটি ৭৩৭ ম্যাক্স সিরিজের বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর এ মডেলের বিমান নিয়ে চাপের মুখে পড়ে মার্কিন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। সেইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের বিমান চলাচল বন্ধ করতে মার্কিন বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের (এফএএ) ওপরও চাপ জোরালো হতে থাকে।
২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপ শহর পাঙকাল পিনাঙয়ের উদ্দেশে যাত্রার পর জাভা সাগরে বিধ্বস্ত হয় বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স ৮ মডেলের একটি বিমান। ওই এলাকার আশেপাশে যারা নৌকায় ছিলেন তারা আকাশ থেকে বিমানটিকে সাগরে পড়তে দেখেন। এতে সেখানে থাকা ১৮৯ আরোহীর সবার মৃত্যু হয়। ওই বিমান বিধ্বস্তের পর তদন্তকারীরা বলেছিলেন, এতে যুক্ত করা নতুন সুবিধা হিসেবে আকাশে ভেসে থাকার এক স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার সঙ্গে পেরে ওঠেননি পাইলটেরা। এ ঘটনার পাঁচ সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে আবারও বিধ্বস্ত হলো একই মডেলের একটি বিমান।
রবিবার (১০ মার্চ) সকাল পৌনে নয়টার দিকে ১৫৭ জন আরোহী নিয়ে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ মডেলের বিমান বিধ্বস্ত হয়। প্রাণ হারায় বিমানের সব আরোহী। উদ্ধার হওয়া ব্ল্যাকবক্স থেকে বিমান বিধ্বস্তের কারণ শনাক্তের চেষ্টা চলছে। রবিবারের দুর্ঘটনার পর বিশেষজ্ঞরা বলছেন,বিমান বিধ্বস্তের কারণ হিসেবে প্রযুক্তিগত সংকট কিংবা মানুষের ভুলের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আমরা কোনও ঝুঁকি নিতে চাইনি। আমরা হয়তো দেরী করে সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম। হয়তো তাও নিতে পারতাম। তবে এই সিদ্ধান্তই প্রয়োজন বলে মনে হয়েছে আমাদের। মার্কিনিসহ সারা বিশ্বের মানুষের নিরাপত্তাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বোয়িংয়ের প্রেসিডেন্ট ডেনিস মুলেনবার্গ বলেন,‘আমরা পদক্ষেপকে সমর্থন করছি। এই দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে তদন্ককারীদের সঙ্গে আমরা সবকিছু করতে প্রস্তুত। আমরা এমন নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই যেন ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
মার্কিন বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রে সব ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের কার্যক্রম অস্থাীভাবে বন্ধ করেছে। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ঘটনাস্থল থেকে নতুন প্রমাণ ও তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষনের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিমানকর্মীরা। ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন অব আমেরিকারর আন্তর্জাতিক প্রেসিডেন্ট জন সামুলসেন বলেন, এই সিদ্ধান্ত ভ্রমণকারী ও কর্মী সবার জন্যই ভালো হয়েছে।