ঢাকা ০৯:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিজেপির কাছে আসন হারানোর ভয় করছেন মমতা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪৯:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৯
  • ২৪৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৪২টিই পাবেন বলে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেকদিন ধরেই দাবি করে আসছেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দলের কোর কমিটির বৈঠকেও তিনি বলেছেন, ৪২টি আসনের ৪২ টি জয়ের বিষয়টি কথার কথা নয়। সে জন্য পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। এই বৈঠকে সাংসদ থেকে শুরু করে বিধায়ক, পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি পর্যন্ত সর্বস্তরের তৃণমূল কংগ্রেসের জনপ্রতিনিধি ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করার চেষ্টা করেছেন। তবে তার মুখে বিজেপি ২২-২৩টি আসন পেতে চাইছে বলে আশঙ্কার কথা দলের অন্দরেও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। মমতা অবশ্য বলেছেন,  ইভিএমে কারচুপি করার জন্য বিশেষ সংস্থাকে নিয়োগ করেছে বিজেপি। তাই বলছে, ২৩-২৪টা আসন পাবে।

তবে এ সব ঠেকাতে তৃণমূল যে সতর্ক তা বুঝিয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, ভাল করে করাব। সেই সঙ্গে তিনি দলের তিন অভিজ্ঞ নেতাকে দায়িত্ব দিয়ে বলেছেন, যারা ইভিএম এবং ভি-প্যাড সম্পর্কে জানেন, তাদেরই দলের তরফে বুথে পাঠাবেন। আর যারা জানেন না, তাদের জন্য আলাদা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। দলের নীচেরতলার নেতা-কর্মীদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।  মমতার গলায় এবারই প্রথম বিজেপির আসন পাওয়ার চেষ্টার আশঙ্কার কথাকে বিশেষ তাৎপর্য্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে তাদের লক্ষ্য হিসেবে  ২২-২৩ টি আসনের কথা বলেছে। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ রীতিমত প্রত্যয়ের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে ২৩ আসনে জয়ের কথা বলছেন। পশ্চিমবঙ্গকে বিজেপি আসন জয়ের লক্ষ্যে টার্গেট করেছে তা বিজেপির শীর্ষ নেতারা বুঝিয়ে দিয়েছেন। গত কয়েকটি নির্বাচনে বিজেপিই পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে।

ভোটের হারও এই সময়ের মধ্যে ৫-৬ গুন বৃদ্ধি করেছে বিজেপি। এবার হিন্দুত্বের ধুয়ো তুলে সেই হারকেই আরও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে দলের সব সংগঠনকেই মাঠে নামিয়েছে। আর তাই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেও শোনা গেছে আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নানা তৎপরতার কথা। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মানতে বাধ্য হচ্ছেন যে বিজেপির শাখা সংগঠনগুলি পশ্চিমবঙ্গে ভালভাবেই ডালপালা বিস্তার করেছে। আর তাই বিজেপিকে নিয়েই তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো বেশি চিন্তিত। এদের মোকাবিলায় দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করার জন্য নানারকম টনিক দিচ্ছেন। লোকসভা নির্বাচনে দলকে পূর্ণশক্তিতে মাঠে নামতেও বলেছেন মমতা।

পাশাপাশি দলীয় প্রার্থী বাছাই করার ব্যাপারেও তিনি এবার সতর্কতা অবলম্বন করছেন বলে জানা গেছে। অর্থের লোভ দেখিয়ে বিজেপি তৃনমূল কংগ্রেসে  ভাঙ্গনের চেষ্টা  করছে সেই আশঙ্কার কথাও মমতা কোর কমিটির বৈঠকে জানিয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। বিজেপিকে নিয়ে মমতার চিন্তার ব্যাপক প্রতিফলন কোর কমিটির বৈঠকে পাওয়া যাওয়ায় দলের মধ্যে নানা গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মমতার সমস্ত অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, দল ভাঙানো এবং নির্বাচনে কারচুপির অভ্যাস আছে ওঁর-ই। তাই উনি ভয় পাচ্ছেন। উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ৩৪টি আসনে জয়ী হয়েছিল। বামফ্রন্ট পেয়েছিল ২টি আসন। আর কংগ্রেস পেয়েছিল ৪টি আসন। অন্যদিকে বিজেপি পেয়েছিল মাত্র ২টি আসন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

বিজেপির কাছে আসন হারানোর ভয় করছেন মমতা

আপডেট টাইম : ১২:৪৯:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৪২টিই পাবেন বলে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেকদিন ধরেই দাবি করে আসছেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দলের কোর কমিটির বৈঠকেও তিনি বলেছেন, ৪২টি আসনের ৪২ টি জয়ের বিষয়টি কথার কথা নয়। সে জন্য পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। এই বৈঠকে সাংসদ থেকে শুরু করে বিধায়ক, পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি পর্যন্ত সর্বস্তরের তৃণমূল কংগ্রেসের জনপ্রতিনিধি ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করার চেষ্টা করেছেন। তবে তার মুখে বিজেপি ২২-২৩টি আসন পেতে চাইছে বলে আশঙ্কার কথা দলের অন্দরেও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। মমতা অবশ্য বলেছেন,  ইভিএমে কারচুপি করার জন্য বিশেষ সংস্থাকে নিয়োগ করেছে বিজেপি। তাই বলছে, ২৩-২৪টা আসন পাবে।

তবে এ সব ঠেকাতে তৃণমূল যে সতর্ক তা বুঝিয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, ভাল করে করাব। সেই সঙ্গে তিনি দলের তিন অভিজ্ঞ নেতাকে দায়িত্ব দিয়ে বলেছেন, যারা ইভিএম এবং ভি-প্যাড সম্পর্কে জানেন, তাদেরই দলের তরফে বুথে পাঠাবেন। আর যারা জানেন না, তাদের জন্য আলাদা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। দলের নীচেরতলার নেতা-কর্মীদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।  মমতার গলায় এবারই প্রথম বিজেপির আসন পাওয়ার চেষ্টার আশঙ্কার কথাকে বিশেষ তাৎপর্য্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে তাদের লক্ষ্য হিসেবে  ২২-২৩ টি আসনের কথা বলেছে। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ রীতিমত প্রত্যয়ের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে ২৩ আসনে জয়ের কথা বলছেন। পশ্চিমবঙ্গকে বিজেপি আসন জয়ের লক্ষ্যে টার্গেট করেছে তা বিজেপির শীর্ষ নেতারা বুঝিয়ে দিয়েছেন। গত কয়েকটি নির্বাচনে বিজেপিই পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে।

ভোটের হারও এই সময়ের মধ্যে ৫-৬ গুন বৃদ্ধি করেছে বিজেপি। এবার হিন্দুত্বের ধুয়ো তুলে সেই হারকেই আরও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে দলের সব সংগঠনকেই মাঠে নামিয়েছে। আর তাই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেও শোনা গেছে আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নানা তৎপরতার কথা। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মানতে বাধ্য হচ্ছেন যে বিজেপির শাখা সংগঠনগুলি পশ্চিমবঙ্গে ভালভাবেই ডালপালা বিস্তার করেছে। আর তাই বিজেপিকে নিয়েই তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো বেশি চিন্তিত। এদের মোকাবিলায় দলীয় কর্মীদের চাঙ্গা করার জন্য নানারকম টনিক দিচ্ছেন। লোকসভা নির্বাচনে দলকে পূর্ণশক্তিতে মাঠে নামতেও বলেছেন মমতা।

পাশাপাশি দলীয় প্রার্থী বাছাই করার ব্যাপারেও তিনি এবার সতর্কতা অবলম্বন করছেন বলে জানা গেছে। অর্থের লোভ দেখিয়ে বিজেপি তৃনমূল কংগ্রেসে  ভাঙ্গনের চেষ্টা  করছে সেই আশঙ্কার কথাও মমতা কোর কমিটির বৈঠকে জানিয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন। বিজেপিকে নিয়ে মমতার চিন্তার ব্যাপক প্রতিফলন কোর কমিটির বৈঠকে পাওয়া যাওয়ায় দলের মধ্যে নানা গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মমতার সমস্ত অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, দল ভাঙানো এবং নির্বাচনে কারচুপির অভ্যাস আছে ওঁর-ই। তাই উনি ভয় পাচ্ছেন। উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ৩৪টি আসনে জয়ী হয়েছিল। বামফ্রন্ট পেয়েছিল ২টি আসন। আর কংগ্রেস পেয়েছিল ৪টি আসন। অন্যদিকে বিজেপি পেয়েছিল মাত্র ২টি আসন।