মুখে গান হাতে ঘণ্টা, তালে তালে মাঝি মাল্লার নাও বেয়ে চলা, ‘হৈয়া বলো নাইয়া ভাই, উড়াল পঙ্খী বাইয়া যাই’। সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার সুরমা নদীতে হয়ে গেল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার ভীমখালির উজ্জলপুর ঘাট থেকে জামালজঞ্জ থানা সন্মুখ শাহপুর ঘাট পর্যন্ত এ নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়।
রংবেরঙের জামা-কাপড় আর বাহারি নৌকার মাঝি মাল্লাদের তালে তালে জোরসে বৈঠার পানি কেটে চলা দেখতে নদীর দু’পারে ঢল নামে লাখো দর্শকের। অনেকে আবার নৌকা ভাড়া করে নদীতে নেমে পড়েন সারি সারি ছুটে চলা প্রতিযোগী নৌকার পেছনে। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় ধর্মপাশা এবং জামালগঞ্জ উপজেলার নৌকা।
বন্দুকের গুলির শব্দে ছুটে চলার কথা থাকলেও বাশি ফুক দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ছুটতে থাকে প্রতিযোগী নৌকা। টানা ২৫ মিনিট নৌকা বাইচে জয় ছিনিয়ে নেয় হলুদ রঙের বর্নিল সাজে সজ্জিত ধর্মপাশা উপজেলার নৌকা।
সুনামগঞ্জ ১ আসনের সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘আমার এলাকায় দীর্ঘ ৪০ বছর পর এ খেলা অনুষ্ঠিত হলো, আমি চাই প্রতি বছর এলাকায় নৌকাবাইচের আয়োজন করতে। ভবিষ্যতে এ ধরণের নৌকাবাইচ আবারো আয়োজন করা হবে।’
ধর্মপাশা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোত্তালেব খান বলেন, ‘নৌকা বাইচে আমার উপজেলা জয়ী হয়েছে তাই আমার আনন্দ সবার চেয়ে একটু বেশি, আমি এ ধরনের খেলায় শৃংঙ্খলতা বজায় রাখার জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই।’
নৌকার মাঝি সবুজ মিয়া জানান, কিশোরগঞ্জ থেকে তারা নৌকাসহ ৬৫ জন মাঝি এ নৌকাবাইচে অংশ নিয়েছেন। মাঝিরা জানান, জয় পেয়ে তারা খুব আনন্দ উপভোগ করেছেন।
নৌকা বাইচ শেষে বিজয়ী দলের হাতে ২১ ইঞ্চি রঙিন টেলিভিশন ও রানার আপ দলের হাতে ১৪ ইঞ্চি রঙিন টেলিভিশন তুলে দেন স্থানীয় এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন।
এ সময় সর্বস্তরের সুশীল ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।