ঢাকা ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সীমান্তে অপরাধ কমাতে বাংলাদেশের সহযোগিতা চায় ভারত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫০:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
  • ২ বার

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। সীমান্তে অপরাধ কমাতে ঢাকার সহযোগিতামূলক আচরণ চায় ভারত এমনটা জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।

রোববার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারকে বর্ডার ইস্যু নিয়ে তলব করলে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

প্রণয় ভার্মা বলেন, সচিবের সঙ্গে বৈঠকে ভারতের অপরাধ মুক্ত সীমান্ত নিশ্চিতের যেই অঙ্গীকার সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। নিরাপত্তার জন্য সীমান্তের বেড়া নির্মাণে দুদেশের বোঝাপড়ার বিষয়েও আমাদের আলোচনা হয়েছিল। এ ছাড়া সীমান্তে চোরাচালান ও অপরাধ দমনের যে চ্যালেঞ্জ তা নিয়েও কথা হয়েছে।

এ সময় সীমান্তে অপরাধ কমাতে সহযোগিতামূলক আচরণ বা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রত্যাশা করেন ভারতীয় হাইকমিশনার।

এদিকে রোববার সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, সীমান্তে বিজিবি সতর্কাবস্থায় আছে। বিজিবি এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, সম্প্রতি সীমান্তের ৫টি জায়গায় ভারত কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ শুরু করেছে। বিজিবির এবং স্থানীয় মানুষের শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত ওইসব স্থানে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। বিজিবির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সীমান্তে বেড়া দেওয়ার প্রতিবাদ করায় তিনি সীমান্তবর্তী জেলার বাসিন্দাদের ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময়ে সীমান্তে বেড়া দেওয়া নিয়ে যেসব অসম সমঝোতা চুক্তি হয়েছে সেগুলো বাতিলের বিষয়ে পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তী মাসে (ফেব্রুয়ারিতে) বিজিবি ও বিএসএফ এর মধ্যে ডিজি পর্যায়ে বৈঠক হবে বলেও উপদেষ্টা জানান।

উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সীমানা নির্ধারণ এবং উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দায়িত্ব পালনসংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মোট ৪টি চুক্তি আছে।

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ-ভারত যুগ্ম সীমান্ত নির্দেশাবলি- ১৯৭৫ অনুযায়ী উভয় দেশের শূন্য লাইনের ১৫০ গজের মধ্যে প্রতিরক্ষা সামর্থ্যতা সংবলিত যে কোনো কাজ সম্পন্নের বিষয়ে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ ছাড়াও উভয় দেশের প্রয়োজনে শূন্য লাইন হতে ১৫০ গজের মধ্যে যে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্নের ক্ষেত্রে একে-অপরের সম্মতি গ্রহণের বাধ্য-বাধকতা রয়েছে।

বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বিদ্যমান ৪১৫৬ কিমি সীমান্তের মধ্যে ৩২৭১ কিমি স্থানে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করেছে এবং ৮৮৫ কিমি স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সীমান্তে অপরাধ কমাতে বাংলাদেশের সহযোগিতা চায় ভারত

আপডেট টাইম : ০৬:৫০:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। সীমান্তে অপরাধ কমাতে ঢাকার সহযোগিতামূলক আচরণ চায় ভারত এমনটা জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।

রোববার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারকে বর্ডার ইস্যু নিয়ে তলব করলে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

প্রণয় ভার্মা বলেন, সচিবের সঙ্গে বৈঠকে ভারতের অপরাধ মুক্ত সীমান্ত নিশ্চিতের যেই অঙ্গীকার সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। নিরাপত্তার জন্য সীমান্তের বেড়া নির্মাণে দুদেশের বোঝাপড়ার বিষয়েও আমাদের আলোচনা হয়েছিল। এ ছাড়া সীমান্তে চোরাচালান ও অপরাধ দমনের যে চ্যালেঞ্জ তা নিয়েও কথা হয়েছে।

এ সময় সীমান্তে অপরাধ কমাতে সহযোগিতামূলক আচরণ বা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রত্যাশা করেন ভারতীয় হাইকমিশনার।

এদিকে রোববার সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেছেন, সীমান্তে বিজিবি সতর্কাবস্থায় আছে। বিজিবি এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, সম্প্রতি সীমান্তের ৫টি জায়গায় ভারত কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ শুরু করেছে। বিজিবির এবং স্থানীয় মানুষের শক্ত অবস্থানের কারণে ভারত ওইসব স্থানে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। বিজিবির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সীমান্তে বেড়া দেওয়ার প্রতিবাদ করায় তিনি সীমান্তবর্তী জেলার বাসিন্দাদের ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, বিগত সরকারের সময়ে সীমান্তে বেড়া দেওয়া নিয়ে যেসব অসম সমঝোতা চুক্তি হয়েছে সেগুলো বাতিলের বিষয়ে পত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরবর্তী মাসে (ফেব্রুয়ারিতে) বিজিবি ও বিএসএফ এর মধ্যে ডিজি পর্যায়ে বৈঠক হবে বলেও উপদেষ্টা জানান।

উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সীমানা নির্ধারণ এবং উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দায়িত্ব পালনসংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মোট ৪টি চুক্তি আছে।

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ-ভারত যুগ্ম সীমান্ত নির্দেশাবলি- ১৯৭৫ অনুযায়ী উভয় দেশের শূন্য লাইনের ১৫০ গজের মধ্যে প্রতিরক্ষা সামর্থ্যতা সংবলিত যে কোনো কাজ সম্পন্নের বিষয়ে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ ছাড়াও উভয় দেশের প্রয়োজনে শূন্য লাইন হতে ১৫০ গজের মধ্যে যে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্নের ক্ষেত্রে একে-অপরের সম্মতি গ্রহণের বাধ্য-বাধকতা রয়েছে।

বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বিদ্যমান ৪১৫৬ কিমি সীমান্তের মধ্যে ৩২৭১ কিমি স্থানে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করেছে এবং ৮৮৫ কিমি স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা জানান।