হাওর বার্তা ডেস্কঃ নির্ধারিত সময়ের প্রায় আট ঘণ্টা পর দেশে এসেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নতুন উড়োজাহাজ ‘হংসবলাকা’। শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে দ্বিতীয় ড্রিমলাইনার বোয়িং ৭৮৭-৮ মডেলের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এই উড়োজাহাজটি ৩২ জনের লট বহর নিয়ে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।
উড়োজাহাজটির ঢাকায় পৌছার নির্ধারিত সময় ছিলো বিকাল সাড়ে ৪টায়। কারিগরি ত্রুটির কারণে উড়োজাহাজটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ছাড়তে দেরি হয় বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাছমিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল থেকে হংসবলাকার ছাড়তে দেরি হয়েছে। এ কারণে বিমানটি বিকেলের পরিবর্তে রাতে ঢাকায় পৌঁছায়।
এর আগে গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ জানান, যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় সময় ৩০ নভেম্বর সকালে ফিতা কেটে ড্রিমলাইনার হংসবলাকার যাত্রা শুরু হবে। আমেরিকার এভারেট থেকে বিজি-২১১২ ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে সকাল ১১টায়। বাংলাদেশ সময় ১ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৪টায় ঢাকায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে এটি।
জানা গেছে, গত ২৯ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে এভারেট ডেলিভারি সেন্টারে বিমানের কাছে মালিকানা হস্তান্তর করে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং। নতুন উড়োজাহাজটি বুঝে নিতে বিমান পর্ষদের সদস্যসহ ৩২ জন যুক্তরাষ্ট্র যান। এদের মধ্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, সংসদ সচিবালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও অর্থায়নকারী ব্যাংকের প্রতিনিধিরা ছিলেন। বিরতিহীনভাবে ১৫ ঘণ্টা বিমানটি চালিয়ে দেশে নিয়ে আসেন চারজন পাইলট।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ২০০৮ সালে মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে ১০টি নতুন বিমান কিনতে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ইউএস ডলারের চুক্তি করে। এই ১০টির মধ্যে বিমান বহরে যুক্ত হয়েছে ৬টি উড়োজাহাজ। প্রথম ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ‘আকাশবীণা’ ১৯ আগস্ট দেশে আসে। চারটি ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের নাম পছন্দ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাকি ২টি ড্রিমলাইনারের নাম হলো ‘গাঙচিল’ ও ‘রাজহংস’। এই ২টি উড়োজাহাজ ২০১৯ সালে বিমান বহরে যুক্ত হবে।
ড্রিমলাইনারে আসনসংখ্যা ২৭১টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাসে আসন রয়েছে ২৪টি, বাকি ২৪৭টি আসন ইকোনমি ক্লাসের। বিজনেস ক্লাসে ২৪টি আসন ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড হওয়ায় যাত্রীরা আরামদায়কভাবে বিশ্রাম নিতে পারবেন। ড্রিমলাইনারে ৪৩ হাজার ফুট উচ্চতায় যাত্রীরা ওয়াই-ফাই সুবিধা পাবেন।
‘হংসবলাকা’ নিয়ে বিমানবহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫টি। আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে ‘হংসবলাকা’ বাণিজ্যিক ফ্লাইট শুরু করতে পারে বলে জানিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ।